somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তনুমায় আবার যাত্রা-২ (আরব ডায়েরি-৭০)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১ম পর্ব

কাছেই একটা পাহাড়ের উপর তনুমা ক্যাম্পাস। শুক্রবার বিধায় বন্ধ ছিল। নীচে একটি ভ্যালি দেখা যাচ্ছিল, সেখানে অনেক গাছ। কচি ভাই জানালেন সেখানে গাধারা থাকে, মাঝে মাঝে সকালে ক্যাম্পাসেও চলে আসে।


তনুমা ক্যাম্পাস


গাধারা নাকি ওখানেই থাকে

আমরা বাসায় ফিরে আসলাম। এরই মাঝে বাকী সবাই চলে এসেছে। সবাই মিলে মজাদার নাস্তা পর্ব শেষ করলাম। খাওয়াদাওয়া শেষে কচি ভাই বিশেষ এক জায়গায় যাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে নিয়ে বের হলেন। বাসার নীচে নামতেই মিশরি বড়ই গাছে ফল ঝুলে থাকতে দেখলাম। হলুদ পাকা ফল। ফলটি মুখে পুরতেই টক মিষ্টি স্বাদে জিহ্বা নড়েচড়ে উঠল। এটাকে ঠিক বড়ই মনে হল না। আমাদের দেশের লটকন ফলের মতোই কিন্তু অনেক রসালো ও মাংসল। আমি খেলাম সবচেয়ে বেশী।

গাড়ী নিয়ে কচি ভাইয়ের পেছন পেছন যাচ্ছি। শহরের ভেতরের সরু রাস্তা। হঠাৎ করেই আমাদের চারপাশ মেঘে ঢেকে গেল। কিছুই দেখতে পারছিলাম না। কচি ভাই যে কিভাবে রাস্তা দেখে যাচ্ছে, উনিই ভালো জানেন। তখনই কচি ভাইয়ের গাড়ী থেমে গেল। আমরা সবাই নামলাম। কচি ভাই জানালেন, উনি কোন মতেই রাস্তা দেখতে পারছেন না। এভাবে যাওয়া যাবেনা। আর তখনই এক দল হিংস্র কুকুর সাঈদকে তাড়া লাগাল। আমরা সবাই তড়িঘড়ি ব্যাক করলাম।

বাসায় এসে জুম্মার প্রস্তুতি নিলাম। নামাজ শেষে মসজিদের আশে পাশে বড় হাট বসে। বেশ সস্তায় ২টি চিনা হাঁস পাওয়া গেল। কিন্তু প্রসেস করার ঝামেলার জন্য কিনলাম না। দেখলাম খরগোশ উঠেছে। আমি বিভিন্ন সময় খরগোশ খেতে চাইলেও শাকিলা বলে দিয়েছে সে এসব রান্না করতে পারবে না। কাকড়া নিয়েও সে এমন কথাই বলেছিল। কিন্তু সাঈদ যখন দারূণ করে কাকড়া রান্না করেছিল, তখন শাকিলা ও শিমু বেশ মজা করেই তা খেয়েছিল। অনেক ঝাল ‘খালেক মরিচের’ খোঁজ করলাম, সেটাও মিলল না। সবাই খালি হাতেই বাসায় ফিরলাম।

বাসায় এসে দেখি এলাহী কারবার। রেশমা আপা নানবিধ খাবারের আয়োজন করেছেন। কোনটা রেখে কোনটা খাই এমন অবস্থা। রেশমা আপার রান্না সবসময়ই অতুলনীয়, আজও তার ব্যতিক্রম নয়।


ছবিঃ কচি ভাই

খাবার শেষ করতে করতে বিকাল হয়ে গেল। এখন ফেরার পালা। সাঈদ রাতে থাকার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। দেখলাম উসামাও থাকবে। সাঈদ ও কচি ভাই আমাকে ও শাকিলাকে রাতে থাকার জন্য চাপাচাপি করতে থাকল, না করতে পারলাম না। হাবিব স্যারও রয়ে গেলেন।

আদিল ভাই, মোশতাক ভাই, ফারুক স্যার, আসপিয়া ভাই ও মামুনকে বিদায় জানালাম। মামুন খুব থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু পরেরদিন এক্সাম ডিউটি থাকায় মন খারাপ করে চলে গেল।

হাবিব স্যার ডিজিটাল মানুষ, সবসময় অনলাইনে থাকেন। আমরা এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ালাম। স্যার মোবাইলের মাধ্যমে ফেসবুকে সেসব ছবি আপলোড করেন।
মামুন আবহা পৌছে ছবিগুলো দেখে আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। হাবিব স্যারের ছবিতে সে কমেন্ট করে, ‘স্যার, ছবি দেন আপনি, মন খারাপ হয় আমার।’

রাতে মজার একটি ঘটনা ঘটল। উসামা ও হাবিব স্যার গেলেন আরবীয় এক ফ্যামিলির সাথে দেখা করতে। আরবীয় ভদ্রলোক উসামা’র সাথে তনুমা ক্যাম্পাসে শিক্ষকতা করেন।
হাবিব স্যার সেখানে থেকেই মোবাইলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন- ‘এই প্রথম আরবীয় নারীর সাথে হ্যান্ডশ্যক করলাম।’
মামুন আবহা থেকে হায় হায় করে উঠে- ‘বলেন কি? আমি তো মিস করলাম।’
স্যার রিপ্লাই দেন- ‘ভদ্রমহিলা ছিলেন সুদানি।’
মামুন শান্তি পায়-‘ভাগ্য ভাল আমি ছিলাম না।’

(চলবে)

৩য় পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×