১। ভাইয়ামনি কোরিয়া কেন ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়ছে?
২। যুদ্ধ হলে কে জিতবে ভাইয়ামনি?
৩। আমেরিকার শক্তি কোরিয়ার থেকে কতটুকু বেশি?
৪। কোরিয়ার পারমানবিক বোমা কি আম্রিকাই যাইতে পারবে?
৫। ট্রাম্প আর কিম উন কি এবার যুদ্ধ শুরু করবে?
৬। রাশিয়া চীন কি করবে?
৭। বোমা মারলে কি হবে?
৮। আপনি কার পক্ষে ভাইয়ামনি?
আরে, দাঁড়ান দাঁড়ান মশাই। এত প্রশ্ন আপনার মনে। একটু জিরিয়ে নিন। আমি বলছি, এক এক করে। তো শেষ থেকেই শুরু করি হ্যা। আমি যে কোন যুদ্ধের বিপক্ষে। আম্রিকা জিতুক কি কোরিয়া, আমাদের কি এসে যায়। আর আমার মত অধমের কথায় কি আর যুদ্ধ থেমে যাবে? তবুও যখন বললেন তাই কিছুক্ষণ বকবক করি। কি প্রস্তুত তো... একেবারে পাঞ্জা মেরে বসুন ভায়া... অনেক জানা অজানা মিলিয়েই বলছি.... কি বললেন গৌরচন্দ্রিকা রাখব.. আচ্ছা আচ্ছা শুরু করছি। এক্কেবারে গোড়া থেকেই শুরু করি তাইলে ভায়া... ক্যামন...
তা কোরিয়া আমেরিকা নিয়ে কথা বললে, কান টানলে যেমন মাথা আসে তেমনি অসহনীয় খোঁচাখুঁচিতে থাকবে ১৯৫০-১৯৫৩ সালের কোরিয়া যুদ্ধ। একদিকে সমাজতান্ত্রিক ঝান্ডাবাহী চীন রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট উঃ কোরিয়া আরেক দিকে গনতন্ত্রের ঝান্ডা হাতে আমেরিকার আশীর্বাদপুষ্ট দঃ কোরিয়া। দুই কোরিয়ার ৩৮ তম অক্ষরেখার প্রতিটি প্রান্তে লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েও সে যুদ্ধের দামামা আজো থামেনি। বরং আজো সে বিশ্বের দিকে ক্রমাগত চোখ রাঙানি দেখিয়ে যাচ্ছে। রক্ত আর ধ্বংসলীলাময় এই পৃথিবীর প্রান্তটি আবারো একটি ভয়াবহতার দিকে ক্রমশঃ এগিয়ে।আমেরিকার মূল ভূখন্ডে উঃ কোরিয়ার পারমানবিক বোমা পৌঁছে যেতে পারে এ অনুমান বহু পুরোনো। সম্প্রীতি জাপানের আকাশ দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পতিত হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উঃ কোরিয়া কি ইংগিত দিল তা বুঝতে রকেট বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই।
প্রশ্ন থাকতে পারে এই যুদ্ধ শুরু হলে কে বিজয়ী হবে? আগেভাগে এর উত্তর অনেকেই বলে দিতে পারেন। কিন্তু এর ভয়াবহতা কতটুকু তা কেউ কল্পনাই করতে পারবে না। এটা বুঝতে হলে আরো অনেক কিছুই জানা প্রয়োজন। একটি পারমাণবিক বোমা একেকটি শহর জনপদকে ধ্বংস করতে পারে একমিনিটের কম সময়ে। এর তেজক্রিয়তা থেকে যায় বছরের পর বছর। আর হিরোসিমা নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত লিটলম্যান আর ফ্যাট বয়ের থেকে এই বোমাগুলো যে হাজার গুণ ভয়াবহতা আরো বেশি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি হবে অকল্পনীয়।
পারমাণবিক বোমার সক্ষমতায় এমেরিকা এগিয়ে থাকলেও সম্মুখ যুদ্ধে উঃ কোরিয়া টেক্কা দেবার মতই। ১০ লক্ষ সৈন্য আর ৪০ লক্ষ রিজার্ভ মিলে আমেরিকার মত শক্তিশালী দেশের সাথে সম্মুখ সমরে উঃ কোরিয়া জম্পেশ পাঞ্জা দিলে দিতেও পারে। কিন্তু উঃ কোরিয়ার উপর আসল মারটা পড়বে আকাশ থেকে। তাদের সেকেলে বিমানবাহিনী আর নৌবাহিনী জানান দিচ্ছে কোরিয় উপদ্বীপ থেকে তারা সরে গিয়ে অনত্র মার খাবে না। যদি তাই হয় তবে আমেরিকার জন্য উঃ কোরিয়ার ভূমি মধ্যপ্রাচ্যের মত অত খোলা নয়। জাপান আর উঃ কোরিয়ায় মোতায়েন রত ৬২ হাজার আমেরিকান সৈন্য ভূমিতে মার খেলেও আকাশে আর সমুদ্র বক্ষে একক অধিপত্য আমেরিকার হবে এটা নিশ্চিত। তবে চীন রাশিয়া এ যুদ্ধে প্রক্সি দিলে ফলাফল হবে আরো শোচনীয়। সিরিয়া ইরাক আফগানিস্থানে নজর দিতে আমেরিকা হিমশিম খাবে বৈকি! ফলে বিশ্ব জুড়ে শুরু হতে পারে আরেক নৈরাজ্যকর অবস্থা।
পারমানবিক সক্ষমতায় এমেরিকা দঃ কোরিয়া থেকে যোজন যোজন এগিয়ে। এবিষয়েও সন্দেহ নেই। কিন্তু এমেরিকার মিত্র জাপান, দঃ কোরিয়াকে নিশ্চিন্তভাবে পারমাণবিক বোমার ধ্বংস করতে পারবে উঃ কোরিয়া। এমনকি কে এন- ০৮ দিয়ে আমেরিকার মূল ভূমিতেও আক্রমণ করতে পারে (যদিও বিষয়টি অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখে)। এই জুজুটি আর হালকা করে দেখলে সেটির ফল ভাল নাও হতে পারে। তবে কোরিয়ার পারমানবিক আর্সেনাল বেশি বড় নয়। ২০০-২৫০ টির মত বোমা রয়েছে। কিন্তু ক্ষেপাটে কিম জং উনের পদক্ষেপ গুলো ভয়ংকর। একটি উড্ডয়ন হলেই মানব জাতির ইতিহাস নতুন করে লেখতে হবে।
শক্তি প্রয়োগ ও শান্তি নীতিতে বিশ্বাসী ট্রাম্প ওবামার ডিপ্লোম্যাটিক পিসের পথ থেকে সরে এসেছেন।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর খুব বেশি দিন সময় নেননি বিশ্বকে নতুন একটি বার্তা দিতে যে আমেরিকা আবার ‘গায়ের জোর’ নীতি প্রয়োগে ফিরে এসেছে। জাপান সাগরে পারমানবিক জাহাজ কার্ল ভিনসেন্ট পাঠানো, কোরিয়ার সাথে সামরিক ড্রিল, জাপানে শক্তি বৃদ্ধির পন্থায় ট্রাম্পও কম যাননি।আফগানিস্তান ইরান সিরিয়া ইরাকের ব্যাপারে তার উদ্যোগগুলো আক্রমণাত্মক। তবে মমজার ব্যাপার হলো চীনের ব্যাপক সমালোচনা করে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প এখন কোরিয়া সংকটে চীনকে পাশে চাইছে। ডিপ্লোম্যাসি আরকি! যাইহোক, যুদ্ধ যুদ্ধ ভাবের এই আয়োজনে চীনের উপর নির্ভর করছে আঘামীর ভবিষ্যৎ।
কোরিয়া যুদ্ধ শুরু হলে চীন রাশিয়া আবার উঃ কোরিয়ার পক্ষ নেবে এটা স্বাভাবিক।তাই আমেরিকার কোরিয়া জব্দ করতে বেশ বেগ পেতে হবে বলে মনে হচ্ছে। কোরিয়া নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যে আতংক শুরু হয়েছে, যে উৎকণ্ঠায়য় মানুষ দিন গুনছে তার শান্তিপূর্ন অবসান করার মত নেতা কই? যুদ্ধবাজ শাসকদের হাতে দেশ ছেড়ে দিলে যে কোন দেশ আবার হতে পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের থেকে আরো ভয়াবহ মৃত্যুপুরী সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
যুদ্ধে মারণাস্ত্র বাণে বিরানভূমি হতে পারে কোরিয়া চীন জাপান আমেরিকা তবে এর ভয়াবহ প্রভাব গোটা বিশ্বকে বইতে হবে। নিরপেক্ষ দেশ গুলো হয়ত ধকল কাটাতে কয়েক দশক লাগতে পারে তবে আক্রান্ত দেশগুলো এক শতাব্দীতেও মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারবেনা। প্রজন্মান্তরে রেডিয়েশন তিলে তিলে শুষে নেবে আক্রান্ত জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। বিশ্বের এই করুণ দশা হতে পারে সত্যি ভাবতেই শিউরে উঠছি। একটি শান্তির পথে সকল সমস্যার সমাধান হোক এই প্রত্যাশা রাখি। ধন্যবাদ।
সবি তো বুঝলাম ভাইয়ামনি! মাগার কিন্তু কোবতে বাদ দিয়া হঠাৎ করে এইরাম আন্তর্জাতিক যুদ্ধ টুদ্ধ! এত্ত খবর রাখেন কেমতে? আপনে কি সাম্বাদিক?
আরে মশাই মেদনীপুরের খবর রাখতে সাম্বাদিক হওয়া লাগে না, বাতাসের গন্ধ শুকলেই আমরা টের পাই বুঝলেন!
হ বুঝছি, ভুজুংভাজুং দিলেন এত্তখন!
আরে মশাই এটাতো আমাদের রক্তে মিইশা আছে। এত্তক্ষনে বুঝলেন।
শুনলাম আপ্নে নাকি এইসব নিয়া বই বাইর করবেন ভাইয়ামনি। তাইলে গাজী সাহেবের কি হইব?
কেন উনি কবিতা লেখবে.......
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩