জেরি ইয়াং এবং ডেভিড ফিলো , ইয়াহু হেডকোয়াটার এর সামনে ।
ফিরে দেখা :
ডেভিড এবং জেরি স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট ছিলেন ।
মজার ব্যপার কি জানেন ? গুগল গাই অর্থ্যাৎ ল্যারি পেজ এবং ব্রিন ও স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটি তে পি.এইচ.ডি রত অবস্থায় গুগল এর গোড়াপত্তন করেন । মনে প্রশ্ন জাগে, সব জিনিয়াস গুলো কি এখান দিয়েই বের হয় নাকি ??!!!
যাক সে কথা, ও দিকে ডেভিড এবং জেরি একটি ওয়েবসাইট খুলে ফেলে , নাম দেয়
"David and Jerry's Guide to the World Wide Web"
এটা তখন একটা সাধারন ওয়েব ডিরেক্টরি ছিল এবং এটা ১৯৯৫ এর জানুয়ারি এর কথা ।
নামকরন:
১৯৯৪ এর এপ্রিলে এটার নাম দেয়া হয় Yahoo । এটার শব্দের আদ্যক্ষর দ্বারা গঠিত শব্দ
"Yet Another Hierarchical Officious Oracle."
Hierarchical মানে বোঝানো হত ইয়াহুর ডাটাবেজ লেয়ার কিভাবে সবন্বিত রয়েছে ।
Oracle মানে বোঝানো হত সত্য এবং জ্ঞান এর উৎস।
Officious মানে উপযাচক অথবা সাহায্য করতে তৎপর( এটার অর্থ জানতাম না, ব্লগার নিমতিতা আমাকে জানতে সাহায্য করেছেন, ধন্যবাদ তাকে) ।
তবে ডেভিড এবং ফিলো বলেন , তারা ইয়াহু নামটা পছন্দ করে যার কারন
এটার অপভ্র্রংশ(slang) হচ্ছ : "rude, unsophisticated, uncouth." ( ধৃষ্ট, অকৃত্রিম, অদ্ভুত)
ডেভিড ফিলোর কলেজ গার্লফ্রেন্ড ফিলো কে ইয়াহু বলে ডাকতো ।
আবার বলা হয়ে থাকে, জোনাথন সুইফটস এর গালিভারস ট্রাভেল এর একটি কাল্পনিক চরিত্র ছিল ইয়াহু । ওখান থেকে নেয়া হয়েছে এটা ।
এখানে মজার ব্যাপার আছে, শুরু তে ইয়াহু শব্দটির শেষের বিস্ময়সূচক চিন্হ টি ছিল না । (!)
এটা দিতে হয় একটি নয় দুটি নয় তিন তিন টি কোম্পানির ট্রেডমার্ক ছিল ইয়াহু । একটি বারবিকিউ সস, একটি ছুরি তৈরীর কারখানা এবং একটি মনুষ্যবহন যোগ্য প্রোপেলার কোম্পানীর।
কি আর করা, তারা ইয়াহু শব্দটির শেষে যোগ করেন (!),
অর্থ্যাৎ Yahoo! ।
yahoo.com রেজিস্ট্রেশন হয় ১৯৯৫ , কিন্তু তার আগেই এটা ১ মিলিয়ন হিট পেয়ে গিয়েছিল । তাই তারা ঠিক করলো এটা ইনকরপোরেশন করবে এবং
শুরু করলো টাকা ঢালা, শেয়ার ছাড়া বিভিন্ন ক্যাচাল যা বোরিং লাগবে আপনাদের কাছে । তাই বাদ দিলাম ওই অংশগুলো ।
লোগো:
লোগো নিয়ে তেমন কোন যাদুই তার দেখাইনি গুগলের মত ।
১৯৯৫ সালের,মূল ইয়াহু লোগো টি ছিল লাল রং এর কারন এর নামের সাথে মিল রেখে , uncouth= অদ্ভুত।
লাল লোগো
২০০৯সালে, জায়গা করে নেয় বেগুনী রং এর লোগো টি ।
বেগুনী লোগো
ইয়হুর ছোট লোগো টিও নতুন। এটা সাম্প্রতিক ।
হেডকোয়াটার :
ইয়াহুর হেডকোয়াটার টি ক্যলিফোর্নিয়ার স্যানিভিলে ।
ইয়াহুর হেডকোয়াটার
একটি পার্টির সময়, ডামি টাইটানিক, হেডকোয়াটার এর সামনে ।
কাজ করছেন একজন কর্মী
ক্যাফেটেরিয়ার নাম যেখানে ইউ.আর.ল!!
ক্যাম্পাস
সার্ভার রুম
জেরির কিউব। অর্থ্যাৎ রুম । আইস কিউব এর সাথে মিলিয়ে রাখা হয়েছে।!!
ফিলোর কিউব
বেগুনী লোগোর সাথে মিল রাখতেই এত পার্পল কলর এর ফুল।
কিছু ঘটনা :
চীনে একজন লোক কমুনিস্ট শাসক দের কিছু ডকুমেন্ট নেট এ ছাড়ে, এসময় চীনের ইয়াহু অফিসে ওই ব্যাক্তির তথ্য চাওয়া হলে ইয়াহু কোন কিছু না জেনেই তার তথ্য সরবরাহ করে । লোকটি ১০ বছরের সাজা ভুগছে, তিনি একজন লেখক, সাংবাদিক । এরকম আরেকটি ঘটনা রয়েছে, যেখানে একই রকম ভাবে ইয়াহু ব্যাক্তিগত তথ্য সরবরাহ করেছে । যেটা হিউম্যান রাইটস এর পরিপন্থী। ওই লোকটিও ১০ বছরের জেল খাটছে । ইয়াহু সার্চ এর সেফ মোড নিয়েও তর্ক আছে । সেফ মোডে ও নাকি এটা এডাল্ট জিনিষ পত্র দেখায় ।
আর এটার অনেক শাখা প্রতিষ্ঠান ছিল, যা পরে বন্ধ করে দেয়া হয়।
Yahoo! Go , Yahoo! 360° এর উদাহরন।
ইয়াহুর অবস্থা খুব একটা ভাল না, ২০০৮ সালে মাইক্রোসফট ৪৪,৬ বিলিয়ন ডলারে ইয়াহু কিনে নিতে চায়, যা ছিল খুবই কম মূল্য । এটা অবশ্য ইয়াহু গ্রহন করেনি, তারা এটাকে বলে " প্রকৃত পক্ষে তুচ্ছ মূল্য"..
কিছু আগে ইয়াহুর সি.ই.ও অপসারিত হয় ।
অনেক ঝড় ঝাপটা পোহাতে হচ্ছে কোম্পানী কে, কারন এক বনে ২ বাঘ থাকতে পারে না, আর এখন তো ১০-১২ টা সিংহের সাথে থাকতে হচ্ছে।
তবুও মেইল বলতে ইয়াহু কেই প্রথম দেখেছি...... দোষ গুনেই তো সব।
পরে আরেকদিন বলবো নতুন কিছু ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:০৭