প্রায় সকলেই এখন মানছেন যে নাম-ঠিকানা বিহীন (http://www.new7wonders.com এ সংগঠনটির কোন মেইলিং/ফোন/ফ্যাক্স/ই-মেইল ঠিকানা নেই) নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ডট কম একটি অস্বীকৃত এবং প্রতারক প্রতিষ্ঠান যারা মানুষের দেশপ্রেমকে ব্ল্যাকমেইল করে বিলিয়ন ডলার উপার্যনের ধান্দা করছে। কিন্তু এরপরও কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে ধান্দাবাজ হোক আর প্রতারক হোক, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বে পরিচিতি পাচ্ছে আমাদের সুন্দরবন। কিন্তু কেমন পরিচিতি পাচ্ছে তা আলেক্সা'র এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে।
Visitors by Country for New7wonders.com: Country Percent of Site Traffic
Bangladesh 30.3%
United States 10.6%
India 7.7%
Venezuela 5.2%
Japan 4.8%
China 4.7%
Philippines 3.2%
South Africa 3.1%
Mexico 3.1%
Poland 2.8%
বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার মাত্র ৩.২%; অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর একটি হওয়ার পরও বাংলাদেশ থেকে সেভেন ওয়ান্ডার্স ডট কম ওয়েব সাইটটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার (৩০.৩%) করেছে বাংলাদেশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা কয়েকটি দেশের অন্যতম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও (৭৭%) এক্ষেত্রে হার মানিয়েছি আমরা! আর ওয়েব সাইটটিতে দেশটির ১০.৬% ভিজিটরের মধ্যে খোঁজ নিলে হয়ত দেখা যাবে এর সিংহভাগ ভিজিটরই বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্ট। আর ভারত থেকে এ পর্যন্ত ঐ সাইটে ভিজিট হয়েছে মাত্র ৭.৭%। অর্থাৎ প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্রাবনকারী নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ডট কম নামের এই ওয়েব সাইটে ভিজিটের দিক থেকে ভারতের চেয়ে আমরা ২২. ৬% এগিয়ে। যদিও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দেশ বাংলাদেশ (৩.২%)। সেভেন ওয়ান্ডার্স ডট কম ভিজিট করে মাত্র ৩.২% ব্যাবহারকারীই (যদিও সব ইন্টারনেট ব্যবহারকারীই যে সেভেন ওয়ান্ডার্স এর ওয়েব সাইট ভিজিট করেছে তা নয়) হার মানিয়ে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীনের মতো দেশকে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার বিশ্বের সর্বোচ্চ (ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হারের দিক থেকে বিশ্বে সবেচেয়ে এগিয়ে চীন, দ্বিতীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় জাপান এবং চতুর্থ ভারত)। অর্থাৎ আলেক্সা’র (এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বে কোন ওয়েব সাইটে কত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ভিজিট করে তার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে) এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে বিশ্বের সামনে আবারো আমরা হুজুগে জাতি হিসেবে নিজেদের আরো একবার প্রমাণ করেছি!!!
তাহলে সবমিলিয়ে বিষয়টা দাড়াচ্ছে; বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠীর দেশ হয়েও পৃথিবীর সবচেয়ে বেশিবার (৩০.৩%) সেভেন ওয়ান্ডার্স ডট কম ভিজিট করেছে। এ থেকে আরো একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচন প্রতিযোগিতায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভোটও দিয়েছে এই বাংলাদেশীরাই (কারণ এই ওয়েব সাইটে ঢোকার মূল উদ্দেশ্য পছন্দের স্থানকে ভোট দেয়া)। এটি আরো প্রমাণ করছে ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে সুন্দরবনের মূল প্রচারণা বাংলাদেশীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কারণ এই ওয়েব সাইটে বিরচরণকারীর হারের দিক থেকে আমাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আমাদের থেকে অনেক পিছিয়ে (-১৯.৭%) পিছিয়ে; কারণ ঐ দেশ থেকে ভিজিট হয়েছে ১০.৬%। এদিকে, প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে ভারত সুন্দরবনের অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও সেদেশ থেকে ওয়েব সাইটে বিচরণ করেছে মাত্র ৭.৭% ভারতীয়। আর সেভেন ওয়ান্ডার্স ডট কম-এ পৃথিবীর মোট বিচরণকারীর প্রায় এক তৃতীয়াংশই (৩০.৩%) বাংলাদেশী!
তাই এক কথায় বলা যায়; প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে অংশ নিয়ে পৃথিবীতে বাংলাদেশীরাই সবচেয়ে বেশী মেতেছে বা হুজুগে মেতেছে। আর যারা মনে করছে এর মাধ্যমে বিশ্বে সুন্দরবন পরিচিতি পাচ্ছে তারাও ভুল করছে। কারণ এই ওয়েব সাইটটির ব্যবহারকারীর প্রায় এক তৃতীয়াংশই বাংলাদেশী। অর্থাৎ আমরা নিজেদের ঢোল নিজেরাই পেটাচ্ছি; আর বিশ্বের খুব কম মানুষই তা শুনছে।
http://www.alexa.com/siteinfo/new7wonders.com
http://www.internetworldstats.com/top20.htm