উপরের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করল ষোড়শী মেয়েটা, 'আমাজনে চলে এলাম নাকি!'
দৌড়াতে দৌড়াতে কোথায় চলে এসেছে সে নিজেও জানেনা। চারপাশ বন জঙ্গলে ঘেরা। গাছগুলো যেন আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। পদতলে এলোপাথাড়ি বুনো ফুল ছড়িয়ে আছে৷ থেকে থেকে বন্য জন্তুর আওয়াজ ভেসে আসছে। মাথার উপর চক্কর দিচ্ছে কয়েকটা শঙ্খচিল। এরমাঝেও তার নিজেকে নিরাপদ মনে হচ্ছে। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। তেষ্টায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। পেটের ভেতর তীব্র ক্ষুধা জানান দিচ্ছে। তবু কেমন একটা প্রশান্তি মনে।
কতদূর পাড়ি দিয়েছে সে? দু'শ মাইল নাকি চারশো? তাও জানেনা। কোথায় যাবে, কি করবে কিচ্ছু জানেনা। শুধু জানে সে পালাতে পেরেছে৷ পালাতে পেরেছে সবকিছু পেছনে ফেলে।
দিশেহারা হয়ে ঘুরছে আর ভাবছে, 'পৃথিবীর মানুষ সব ক্ষুদ্র এক ভাইরাস থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর আমি পালিয়ে এসেছি অমানুষ নামক ভাইরাস থেকে। আর আমাকে সেই পিশাচগুলো অন্তত খুবলে খেতে পারবেনা৷ আর সংক্রামিত হতে পারবেনা আমার শরীরে। আজ আমি মুক্ত!'
'হে আকাশ, বাতাস, বৃক্ষলতা.....হে পৃথিবী, তোমরা সাক্ষী থেকো। আমি জয়ী হয়েছি সবচেয়ে ভয়ংকর ভাইরাসের বিরুদ্ধে। আর নিজেকে সমর্পণ করেছি প্রকৃতির কাছে!'
মেয়েটার আর্তচিৎকার বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয়ে তার কাছে ফিরে আসে বারবার।।
(উৎসর্গঃ বিশ্বমহামারীর এ ক্রান্তিকালেও ধর্ষিতা বোনদের)
০৭.০৪.২০২০
ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০১