ব্যক্তিত্ব মানুষের বড় একটি গুণ বা সম্পদ। কথায় আছে ব্যক্তিত্বহীন মানুষ পশুর সমান। যার ব্যক্তিত্ব নেই সে সমাজে কাছে মূল্যহীন। ব্যক্তিত্বহীন মানুষ কখনো একটি দেশের সম্পদ হতে পারে না। মানুষ মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে ব্যক্তিত্বের জন্য। সুন্দর চেহারা নয় বরং ব্যক্তিত্বের মানবিক গুনাবলির কারণে মানুষ ভিন্ন হয়ে থাকে।
কোরআনে সুরা হুজরাতে আল্লাহ্ মানুষের ব্যাক্তিত্ব গঠনের জন্য কিছু আদেশ দিয়েছেন দেখুন কোরআন কি বলে আপনার ব্যাক্তত্ব কেমন হওয়া উচিত ।
আল্লাহ্ বলেন ,
যদি মুমিনদের দু’দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও।[আয়াত-৯]
হে ঈমানদারগণ, কোন সম্প্রদায় যেন অপর কোন সম্প্রদায়কে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোন নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো যালিম। [আয়াত-১১]
আয়াত থেকে শিক্ষা ঃ
➡এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে উপহাস বা ঠাট্টা-বিদ্রূপ তখনই করে, যখন সে নিজেকে তার চাইতে উত্তম এবং তাকে নিজের চেয়ে হীন ও ছোট মনে করে।
➡কোন দোষ বা ত্রুটি ধরে একে অপরকে খোঁটা দিও না। যেমন বলা, তুই তো অমুকের বেটা না, তোর মা তো এ রকম ও রকম, তুই তো অমুক বংশের না! ইত্যাদি।
➡ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে মানুষের এমন নাম রেখো না (বা এমন খেতাব বের করো না), যা সে পছন্দ করে না। অথবা তার ভাল ও সুন্দর নামকে বিকৃত করে ডেকো না।
➡এইভাবে নাম বিকৃত করে অথবা মন্দ নাম বা খেতাব রেখে সেই নামে ডাকা
যেমন, খোঁড়া নামে প্রসিদ্ধ কোন খোঁড়াকে ‘খোঁড়া’ বলে ডাকা, কালিয়া অথবা কালু নামে প্রসিদ্ধ কোন কালো রঙের লোককে ‘কালিয়া’, ‘কালো’ বা ‘কালু’ বলে ডাকা ইত্যাদি।
হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবূলকারী, অসীম দয়ালু। [আয়াত-১২]
আয়াত থেকে শিক্ষা ঃ
➡লোকদের ব্যাপারে এমন ধারণা পোষণ করা, যা মন্দ অথচ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অপবাদের আওতায় পড়ে।
➡“ গোপন বিষয়ে অন্বেষণ করো না”।
➡ গীবত করো না; , অন্য লোকের কাছে কোন ব্যক্তির দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা (নিন্দা বা সমালোচনা করা), যা সে অপছন্দ করে। আর যদি তার প্রতি এমন দোষের কথা সম্পৃক্ত করা হয়, যা তার মধ্যে নেই, তাহলে তা মিথ্যা অপবাদ হবে। স্ব-স্ব স্থানে দু’টোই বড় অপরাধ ও মহাপাপ।
➡ অপরের কাছে কোন মুসলিম ভাইয়ের নিন্দা গাওয়া ঐ রকমই, যেমন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া। মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে তো কেউ পছন্দ করে না, কিন্তু গীবত হল মানুষের অতি প্রিয় খাদ্য।
এবং সুরা ফুসসিলাত তে বলা হয়েছে -
➡ মন্দকে প্রতিহত কর তা দ্বারা যা উৎকৃষ্টতর, ফলে তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু। - সুরা ফুসসিলাত 34)
গুরুত্বপূর্ণ এক চারিত্রিক শিক্ষা যে, মন্দকে দূরীভূত কর ভাল দ্বারা। যা উৎকৃষ্ট তা দিয়ে নিকৃষ্ট প্রতিহত কর। অর্থাৎ, অন্যায়ের বদলা নাও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে, ক্রোধের বদলা ধৈর্যধারণ করে, বেআদবীর বদলা নাও দৃষ্টিচ্যুত করে এবং মূর্খতা বা অশ্লীল কথার উত্তর দাও সহ্য করে নীরব থেকে। এর ফল এই হবে যে, তোমার শত্রু দেখবে তোমার বন্ধু হয়ে গেছে। তোমার থেকে দূরে দূরে থাকত এমন ব্যক্তি তোমার নিকটে হয়ে যাবে এবং তোমার রক্ত-পিপাসু ব্যক্তি তোমার বশীভূত ও প্রেম-পিপাসু হয়ে যাবে।
প্রকৃতপক্ষে একজন বিশ্বাসী ব্যক্তির চরিত্র কেমন হওয়া উচিত তা-ই উক্ত আয়াতের মূল উপজীব্য বিষয়। আশা করা যায় চরিত্র ও ব্যাক্তিত্ব গঠনে পবিত্র কোরআনের উপদেশ গুলো আপনাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করবে।
এমন সব বিষয় নিয়ে এই বইটি লিখা হয়েছে ।
চাইলে বইটি সংগ্রহ করতে পাড়েন রকমারি ডট কম থেকে
https://www.rokomari.com/book/235752/atmasuddhi?
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২২ রাত ১১:৩৩