তারাবীর নামায কি ৮ নাকি ১১ রাকাত, নাকি ২০ রাকাত? তারাবি নিয়ে কত মতবাদ।আপনি আমি মানবো কোনটা?
ইসলামে দলাদলি হারাম। তোমরা ঐ মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত হয়ো না, যারা দ্বীনকে টুকরা টুকরা করে ফেলেছে এবং যারা দলে দলে বিভক্ত হয়েছে, প্রত্যেক দল তাদের কাছে যা ছিল তাই নিয়েই খুশি। (সূরা রূম, ৩০: ৩১ ও ৩২ আয়াত)।
অর্থাৎ, প্রত্যেক দল ধারণা করে যে, তারাই সত্য পথে প্রতিষ্ঠিত আছে, আর অন্যেরা আছে ভ্রান্ত পথে। আর যে যুক্তি তারা খাড়া করে রেখেছে এবং যাকে তারা প্রমাণ বলে আখ্যায়িত করে, তা নিয়ে তারা হর্ষোৎফুল্ল ও সন্তুষ্ট আছে। দুঃখের বিষয় যে, বর্তমানে মুসলিমদের অবস্থাও অনুরূপ হয়ে পড়েছে। তারাও বিভিন্ন মযহাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং প্রত্যেক মযহাব ঐ বাতিল ধারণা অনুযায়ী নিজেকে হকপন্থী মনে করে খোশ আছে।
তারাবির নামাজ এর ব্যপারে আল্লাহ্ র কোন হুকুম বা আদেশ নেয় ।
সুতরাং আমল এর নিয়তে আপনি পরতেও পারেন না ও পরতে পারেন এর জন্য আল্লাহর কাছে কোন যবাব দিহি করতে হবে না । তারাবীহ নামায একটি ঐচ্ছিক নামায। এইটা আপনি যত রাকাত ইচ্ছা পড়তে পারেন। আমার জানামতে একটি হাদিসও নেই যেখানে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজে বলেছেন তারাবীহ ৮ রাকাত বা ২০ রাকাত। কিংবা তারচেয়েও বেশী বা কম পরতে হবে ।
যিনি ১১ রাকাত তারাবী পড়েন তিনি ২০ রাকাত সালাত আদায়কারীকে ভৎর্সনা করেন। আবার যিনি ২০ রাকাত তারাবী পড়েন তিনি ১১ রাকাত সালাত আদায়কারীকে ভৎর্সনা করেন। এটা নিয়ে একটা ফিতনা সৃষ্টি হয়েছে।
আপনি যদি ২০ রাকাত পড়তে চান কোনও সমস্যা নেই। আপনি ১০০ রাকাত পড়লেও কোনও সমস্যা নেই। আমরা ২০ বা ৮ রাকাত নিয়ে যা করি তা কখনও কখনও ফিতনার আকার ধারন করে। এইগুলো সবার আগে পরিহার করতে হবে।
নীচে কিছু লেখা দিলাম।
১. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দুটি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দুটি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ)
“এবং এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।’’ (সুরাহ আনআম ৬: ১৫৩) [সুনানে ইবনু মাজাহ-হাদিস নং-১১]
২. নিশ্চয় যারা তাদের দীনকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন ব্যাপারে তোমার দায়িত্ব নেই। তাদের বিষয়টি তো আল্লাহর নিকট। অতঃপর তারা যা করত, তিনি তাদেরকে সে বিষয়ে অবগত করবেন। [সুরা আনআম ৬/১৫৯]
নিজের দল বা মতকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য আমরা ইসলামকে খন্ড বিখন্ড করছি কি না আমাদের আরও ভাবতে হবে।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ বলেছেন:
“যিনি ইমাম আবু হানীফা শাফেয়ী ও আহমাদের মাজহাব অনুসারে ২০ রাকাত তারাবী সালাত আদায় করল অথবা ইমাম মালেকের মাজহাব অনুসারে ৩৬ রাকাত তারাবী আদায় করল অথবা ১৩ বা ১১ রাকাত তারাবী আদায় করল প্রত্যেকেই ভাল আমল করল।
এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকার কারণে ইমাম আহমাদ এ মতই পোষণ করতেন। তাই তেলাওয়াত দীর্ঘ বা সংক্ষিপ্ত করার অনুপাত অনুযায়ী রাকাত সংখ্যা বেশি বা কম হবে।”[আল-ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা- ৬৪]
তারাবির রাকাত নিয়ে মতভেত বাদ দিন । যারা তারাবির নামাজ পরছে তারা কি কোরআন অনুসরন করছে , নামাজে আল্লাহ্ তালা কোরআন পরতে বলেছে কিভাবে আর তারা পড়ছে কিভাবে দেখুন ।
73:2
قُمِ الَّیۡلَ اِلَّا قَلِیۡلًا ۙ
রাতে সালাতে দাঁড়াও
73:4
اَوۡ زِدۡ عَلَیۡہِ وَ رَتِّلِ الۡقُرۡاٰنَ تَرۡتِیۡلًا ؕ
আর স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে কুরআন আবৃত্তি কর।[ আল-মুযযাম্মিল ]
বাস্তবতা হল ৩০/৪০ মিনিটে ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পরে শেষ ।
এভাবে নামাজ পরে কি লাভ ? ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:৪৮