পর্নোগ্রাফি বন্ধ করা হোক, যৌনজীবনে সুস্থ রুচি গড়ে উঠুক
আমরা টয়লেটে বসি গোপনে, সভ্য জগতে প্রকাশ্যে টয়লেটে বসা অসভ্যতা এবং লজ্জার। সেরকম প্রকাশ্য সেক্সুয়াল কাজে অংশ নেওয়া এবং সেক্সুয়াল কাজের জন্য আহ্বান করা অসভ্যতা এবং লজ্জার নয় কি? তাহলে এখন বেশীরভাগ দেশে প্রকাশ্যে নারীদের অর্ধনগ্ন বা সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে পুরুষদের সাথে সেক্সুয়াল কাজে অংশ নেওয়া এবং পুরুষদের উত্তেজিত করা অপরাধ নয় কি? এসব নিয়ে কেউ কোন কথা বলেনা।
ধার্মিকরা তসলিমা নাসরিনকে দেশ থেকে দূর করে দিল সে ধার্মিক নয় বলে,কিন্তু ধার্মিকরা বিশ্বে সুন্দরী প্রতিযোগিতা বন্ধের জন্য কি কোন উদ্যোগ নিয়েছে কখনও? - যে প্রতিযোগিতা নারীদের জন্য, মানুষের সমাজের জন্য চরম অপমানজনক।
কুকুরদের জীবনে পর্দা নেই, শালীনতা বোধ নেই, গোপনীয়তা নেই, লজ্জা নেই। কুকুরজাত-মানুষ, গরু কিংবা কুকুর সবার সামনে প্রাকৃতিক যে কোন কাজ তথা সেক্সুয়াল কাজে লিপ্ত হয় যা মানুষজাত দেখলে লজ্জা পায়। পশুদের অভিধানে লজ্জা বলে কোন বিষয় নেই। কিন্তু মানুষের অভিধানে লজ্জা বিষয়টি সভ্যতা ও শিক্ষার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ধর্মীয় কাহিনীতে আদি পিতা মাতা আদম হাওয়া প্রথম নিজেদেরকে উলঙ্গ আবিষ্কার করে লজ্জা পেয়ে গাছের লতা পাতা দিয়ে নিজেদেরকে ঢেকেছিলেন। সভ্যতা বিকাশের শত হাজার পর্যায়ে মানুষের প্রকাশ্য নগ্নতা ও সেক্সুয়াল কাজকে হাজারভাবে লজ্জা দেওয়া হয়েছে, ধীক্কার জানানো হয়েছে। কিন্তু আমরা মানুষরা আমাদের উচ্চতর বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগিয়ে সভ্য হতে পেরেছি কম। আমরা বেশীরভাগ নির্লজ্জ, অসভ্য হয়েই বাঁচতে পছন্দ করি। তাই পর্নোগ্রাফি, ব্লুফিল্ম, নষ্টামি দিয়ে সমাজ ভরপুর।
আমার একজন ভাল পরিচিত ফ্রেন্ড যে এখন আমার ফ্রেন্ড নেই- সে একদিন আমাকে বলেছিল যে, " তোমার জন্য কিছু পর্নোছবির লিংক পাঠাই?"
আমি বলেছিলাম, "আমি একজন শিক্ষক, আমি আমার চোখ দিয়ে ফেরেশতার মত শিশুদের দেখি। তাই এই চোখ দিয়ে পর্নোছবি দেখে আমার চোখ নষ্ট করতে চাইনা। দু'জন পূর্ণবয়স্ক নারীপুরুষ একান্ত যৌনজীবনে কি করে তা একটি পিঁপড়েও জানে। কারও স্বামী'র সাথে যদি কারও প্রেম থাকে তবে তাদের পরস্পরের প্রতি প্রচন্ড একটা আকর্ষণও থাকবে যেটি যৌনজীবনে সুখী হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এর বাইরে কোন কিছুতে আমার বিশ্বাস নেই।" আমার বন্ধু আমার সাথে একমত হতে পারেনি। কিন্তু আমি আমার কথাটির বাইরে কোন কিছু সমর্থন করিনা।
যেখানে নারী পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্ক প্রেমের, শ্রদ্ধার সেখানে সেক্সুয়াল সম্পর্ক পর্নো ছবির সহযোগিতা ছাড়াই আনন্দের হতে পারে। পর্নো ছবি ব্যক্তিগত কিংবা সামাজিক জীবন - কোথাও প্রয়োজন নেই।
শিশুকাল থেকে যে ধরণের সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হলে স্বাভাবিক, সুস্থ যৌ্ন জীবনকে সম্মান করা যায়, গ্রহণ করা যায় সেরকম সুস্থ পরিবেশ সমাজে প্রথম সৃষ্টি করা হোক, তাহলে সুস্থ, স্বাভাবিক স্ত্রী ও গার্লফ্রেন্ডরা মুক্তি পাবে পর্নো আসক্ত বিকৃত রুচির স্বামী ও বয়ফ্রেন্ডদের হাত থেকে।
আইন দিয়ে অপরাধীদেরকে ভয় দেখানো যায়, শাস্তি দেওয়া যায়, কিন্তু আইন দিয়ে মানুষকে ভাল রাখা যায়না।। শুধুমাত্র সুশিক্ষাই মানুষের কুপ্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে সামাজিক করে তুলতে পারে। এই পথটাকে সারা বিশ্বে সত্যিকার অর্থে কখন অনুসরণ করা হয়েছে?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩৭