শেয়ারবাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হলে আপনার পোশাক পরিবর্তনের প্রয়োজন পরে না। একই ভাবে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের জন্য আপনার লেবাস পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। ধর্মীয় জ্ঞান এমন একটি সহজ বিষয়, যা যে কেউ অর্জন করতে পারে। জ্ঞান অর্জন পরবর্তী তা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা বা না করার অধিকার তার নিজের। এজন্য তার জ্ঞান কোনভাবেই দায়ী নয়।
ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন ছাড়া নিজেকে ধর্মীয় জ্ঞানে জ্ঞানী ভাবতে যাওয়া নির্বোধ সেই ব্যাক্তির মত, যে নিজের অর্থসম্পদ শেয়ার বাজারে নিয়োগ করছে ঠিকই তবে সে নিজে শেয়ারবাজার সম্পর্কে মোটেও ওয়াকেফহাল নয়। এমন ব্যক্তিদের প্রায় অধিকাংশই পত্রিকার রাশিফল কিংবা ধর্মান্ধতার আশ্রয়ে ঠিকে থাকেন। এরা তো কোন না কোন ভাবে নিজেদের টিকিয়ে রাখছেন, যদিও দিনশেষে এদের অধিকাংশদেরকে আমরা শূন্যতার হাত নিয়ে ফিরতে দেখি।
ধর্মীয় জ্ঞানহীন ব্যক্তিজন এদের চেয়ে অসম্ভব রকমের ক্ষতিকর তার নিজের ও সমাজের জন্য। তারা আবেগ ও নিজেদের স্বল্প বিবেচনা শক্তি দিয়ে ধর্মীয় বিষয়গুলোকে বিবেচনা করেন। এটা যে ধর্ম ও সমাজের জন্য কী পরিমাণ বিপজ্জনক তা তারা চিন্তাও করতে পারেন না।
যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন না বা যারা নাস্তিক তাদের চেয়েও এই সম্প্রদায় খুবই বিপজ্জনক। কারণ এরা নিজেদেরকে ধর্মীয় জ্ঞানী ভাবার পাশাপাশি ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলে ফেলেন, যার ক্ষতিকর দিকটি তাদের চিন্তাশক্তিরও বাহিরে থাকে। এরা ধর্মীয় বাণী আওরানোকালে আপনি খুব সহজেই এদের ধর্মীয় জ্ঞানের পরিধি সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। আপনি এদের বর্ণীত বাণীর বিপরীতে ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে সঠিক দিকটি তুলে ধরলে এরা সেটাকে ব্যক্তি আক্রমণ ভেবে বসেন। তাই অনেক জ্ঞানী ব্লগার যখন এদের এরিয়ে চলেন, তখন এই ধর্মজ্ঞানহীন ব্যক্তিজন নিজেদেরকে সঠিক বলে বিবেচনা করে বসেন।
সামু ব্লগটি আমার ভালোবাসার একটা জায়গা। হ্যা, আমার স্বল্প ক'দিন হলো এখানে চলাচল। এই স্বল্প সময়ে আমি খুব অল্প ব্লগারদের পেয়েছি যারা ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন; সঠিক আলোচনা। কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে ধর্মীয় পোস্টের নামে ফাউল পোস্টগুলো পেয়েছি যা ধর্মের ক্ষতি করা ছাড়া ভালো কিছু করছে না। ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে ভুল ব্যাখ্যা আসাটা স্বাভাবিক। তাদের ভুল ব্যাখ্যায় সাধারণ ব্লগার ও পাঠকদের নিকট ধর্মীয় ভুল আলোচনার প্রচার হচ্ছে। যারা অন্যের কথায় প্রভাবিত হয়ে পড়েন, তারা এইসব ভুল ব্যাখ্যায় প্রভাবিত হওয়ার দ্বারা ধর্ম সম্পর্কে ভূল তথ্যটি জানছেন।
এরকম ধর্মীয় জ্ঞান না রেখে ধর্ম সম্পর্কে আলোচনাকারী অনেককেই আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিলাম ধর্মীয় কিছু বই পড়ার জন্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা আমার কথা কেন রাখবেন! সত্যি তারা নিজেদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির জন্য হলেও একটু ট্রাই করতে পারতেন, কিন্তু তারা নিজেদের চিন্তার সেই উন্নয়নটুকু করেননি। বরং এখনো ব্লগে আসলে তাদের মধ্যকার ক'জনকে পূর্বের মতই পোস্ট দিতে দেখা যায়।
একজন সাধারণ পাঠক, যিনি সর্বদা নিরব থাকেন, হয়ত উনার ব্লগে একাউন্ট নেই। শুধু পড়তে আসেন। তিনি যে ধর্মীয় জ্ঞানে জ্ঞানী হবেন না সেটা বলা যাবে না। এমন কিছু জ্ঞানীজন যখন আমাদের ব্লগে এসে ধর্মের ভূল ব্যাখ্যা দেখতে পান তখন তাদের নিকট সামু ব্লগ সম্পর্কে কোন ম্যাসেজটি যাচ্ছে?
হ্যাঁ, আমরা জানি এই ব্লগে লেখার সম্পূর্ণ দায় ব্লগারের নিজের। কিন্তু একজন ব্লগারের গঠনমূলক আলোচনা অবশ্যই ব্লগের সুনাম বিস্তারে ভূমিকা রাখে। একই ভাবে ভুল ব্যাখ্যায় ব্লগের বদনামেও ভুমিকা রাখে।
এখানে ব্লগ কর্তৃপক্ষের চেয়ে আমাদের সেই সহব্লগার ভাইদের কার্যকরী উদ্যোগ জরুরি, যারা ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না রেখেও ধর্ম নিয়ে কথা বলেন। আসলেই আপনাদের লেখনি শক্তি যথেষ্ট মজবুত। আপনারা যদি এই মজবুত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনে একটু সময় ব্যয় করে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন,তাহলে দেখা যাবে আপনাদের আলোচনায় ধর্মীয় ভূলগুলোর যৌক্তিক বিশ্লেষণ উঠে আসছে। পাশাপাশি ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানী ব্লগার ভাইয়েরা আপনাদের ধর্মীয় পোস্টগুলো এরিয়ে যেতে পারছেন না। তখন আপনারা যেমন সঠিক বিশ্লেষণ ধর্মী আলোচনার স্বাদ উপভোগ করবেন, তেমনি ব্লগ পাবে কিছু নতুন নতুন আলোচনার বিষয়।
সবার জন্য শুভকামনা।৷
ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪০