মোঃ তোফায়েল ইসলাম: কবিরাজদের তেলেসমাতি শহরে কিনবা গ্রামে ছোট ছোট হাট বাজারে শহরে রাস্তার মরে মরে কোট কাচারিতে আমারা হর হামেশাই এদেরকে দেখতে পাই!
মজার বেপার হলো এদের কাছে না বলতে কনো শব্দ নাই! যে কোন সমস্যা নিয়ে হাজির হন আপনার সমস্যার সমাধান এদের কাছে আছে! নাই., পারি না, এটা সম্ভব না, এটা হবে না, এই জাতীয় শব্দটি
ডাক্তারের কাছে থাকলেও এদের কাছে নাই!
মানুষ কতটা সচেতন হচ্ছে?আমার মতে মুঠেই সচেতন হচ্ছেনা। আমার নিজের একটি অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।
আমি গত বছর কোন এক কাজে বাড়িতে যাচ্ছিলাম , ২০১৬ সালের দিকের কথা। বারিতে গিয়ে বাজার করার জন্য সকালে আমাদের গ্রামের বাজারে গেলাম,গিয়ে দেখি বিশাল মানুষের জটলা। ভাবলাম কোন যামেলা বা গেঞ্জাম হইছে মনে হই , একটু পরে আমার এক পরিচিত লকের সাথে দেখা হলে সে আমাকে টেনে নিয়ে গেলে সেই মজমাই গিয়ে দেখি অনেক লোকজন ১ জন লোক কে ঘিরে চার পাসে সবাই দারিয়ে আছে , আমি কউতুহলি হয়ে। একটু সামনে গিয়ে দেখি এক মহা কবিরাজ তাঁর ফলের টনিকের কারিশমার কথা মানুষকে জানাচ্ছেন। এমন কোন রোগব্যাধি নেই যে,এই ফলের টনিকে কাজ হবেনা। আমি আমার আশেপাশের মানুষকে ভেবে ছিলা তাঁরা মনে হয় কেউ কিনবেনা। সবাই তাঁর কথা শুনে চলে যাবে
আমি কয়েকজন কে বললাম যে এই সব খেলে আরো রোগ শরিলে বাধা বানবে , এই সব খেলে আপনাদের রোগ আরো ভয়ানক হতে পাড়ে। এই বলে চলে গেলাম,বাজার শেষে ফিরার পথে দেখলাম
তার সেই মন ভুলান কথাই নেয়ার জন্যে একে অন্যের উপর ঝাপ দিচ্ছে কার আগে কে নিবে শেষ যদি হয়ে যায়?
১ কয়েক ঘণ্টা বেচাকেনা হলো ধুমধাড়াক্কা, অবশেষে তাঁর গাড়িতে যা নিয়ে এসেছিল সব শেষ। কবিরাজ সাহেব মন খারাপ করে বলছিলেন আরো শ’খানেক বোতল বিক্রি করতে পারতাম কিন্তু শেষে হয়েগেছে।
আপনাদের সবাইকে দিতে পারলাম না ? তবে সামনের সাপ্তাহে আবার আসব ,
প্রায় তিনশ বোতল বিক্রি করেছে একশ টাকা করে। আমি হিসাব করে দেখেছি কয়েক ঘণ্টা কবিরাজ গ্রামের মানুষ-কে ধোকা দিয়ে ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। কিছুদিন পরে এক ক্রেতাকে বললাম আপনি যে করিরাজের উসধ নিয়েছিলেন বাজার থেকে কাজে এসেছে? সে কোন উত্তর দিলো না চুপ। এভাবে অনেকের সাথে আলোচনা করেছি,কিন্তু সবাই চুপ
আসলে সেইখানে আমি আপনি হাজার চেষ্টা করেও এতোটুকু জ্ঞানী করে তুলতে পাড়বো না তাদের, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের ঘুমন্ত বিবেকবুদ্ধি-কে নিজেরা চিকিৎসা না করবেন।
একজন ডাক্তার পড়া শনা করে ডাক্তারি পাস করে ১০০ রুগী কাছে ভিরাতে সময় লাগে ৫ বছর,
অথচ এদেরকে ৫ মিনিট সময়ে ১০০ রুগীর বেশী পেসেন্ট জগার হয়ে যায়।
এরা হলেন ডিগ্রি প্রাপ্ত ডাক্তারের বাবা, সব রোগের চিকিৎসক । এমনকি জটিল রোগেরও চিকিৎসা করে থাকে। এই ধরনের কবিরাজদের কাছে কোনো ট্যাবলেট, ইনজেকশন না থাকলেও আছে নানারকম গাছগাছালি। ওইসব গাছগাছালিগুলো হচ্ছে- কমলা গাছ, সাদা লজ্জাপতি, রক্তচন্দন, নাগমণি, পরশমণি, চা গাছ, লালমাতাল, কুড়াসমতি, শ্বেতচন্দন, শ্বেত আনন্দ, মনামণি, অর্জুন, বাহুবলসহ আরও অনেক গাছ ।
আরো আছে পশুর চামড়া। যেমন- উটের চামড়া, ভাল্লুকের চামড়া, বাঘের চামড়া। মাছ ও পশুর হাড় -কালো ঘোড়ার হার, কটকট মাছের হাড়, তিমি মাছের হাড়সহ আরো অনেককিছু।
এসব গাছগাছালি, পশুর চামড়া, হাড়গোড় একটু একটু কেরে তাবিজে ভরে দেয়। সেই তাবিজ গলায়, হাতে বা কোমরে বেঁধে রাখলেই কেল্লাফতে। বাঁচে না মরে? জানা নেই কারোর, তবু কিনছে সবাই।
কবিরাজের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুর, কবিরাজের নাম: মো; জামান মিয়া ।
এরকম বাংলাদেশের সব জেলায় হাজারো কবিরাজ আছে!
আসলে এগুলো কী? সত্যি কি অসুখ সারে, না ব্যবহারে অসুখ বাড়ে?
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:০৫