দেশে একশ্রেণীর পাষণ্ড আছে সত্য। কিন্তু তাই বলে এতো নিম্নমানের, এতো নির্লজ্জ, আর এতো নৃশংস পাষণ্ড!
সাইয়িদ রফিকুল হক
বড়মানুষদের জীবনে কোনো ঘটনা ঘটলে তা সাধারণ মানুষের কাছে সবসময় একটা আকর্ষণের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আর এটি দোষণীয় নয়। কিন্তু এই নিয়ে কারও-কারও বাড়াবাড়ি করাটা খুবই দোষের। অতিসম্প্রতি আমাদের দেশের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক সাহেব কন্যাসন্তানের পিতা হয়েছেন। এতে তাঁর মনে আনন্দের সীমা নাই। তাঁর পরিবারেও বিরাট আনন্দ। দেশে তাঁর রাজনৈতিক শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যেও এটি দারুণ একটা আনন্দের খবর।
একসময় তিনি ছিলেন চিরকুমার-সংঘের একজন গর্বিত-সদস্য। আর হঠাৎ করেই সেই মানুষটির জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। আর তিনি চিরকুমার-সংঘ থেকে সরাসরি ইস্তফা দিয়ে বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি রাজনীতির মানুষ। আর এই নিয়ে সারাজীবন পার করে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু মানুষের মন বলে কথা। তাই, তিনি ৬৭ বছর বয়সে ২০১৪ সালের ৩১-এ অক্টোবর কুমিল্লা জেলার চান্দিনা-উপজেলার মিরাখলা-গ্রামের অ্যাডভোকেট হনুফা আক্তার রিক্তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬৯। তিনি বিবাহবন্ধনের মাধ্যমে একটি সুন্দর জীবনগড়ার চেষ্টা করেছেন। আর এটি সবসময় একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
এতে বাদ সেধেছে কেউ-কেউ। এরা অর্বাচীন। এরা দেশের চিহ্নিত-পাষণ্ড। এরা ২০১৪ সালের ৩১-এ অক্টোবর থেকে তাঁর পিছনে অদ্যাবধি লেগে আছে। আর তাঁর পিছনে আরও লেগেছে এই দেশের একটি সস্তা-সাংবাদিকশ্রেণী—আসলে, এরা সাংঘাতিকশ্রেণী। এরা খুবই নিম্নমানের। আর এরা বিকৃত-রুচির অধিকারী কতকগুলো প্রাণী মাত্র। দেশে এতো-এতো নিউজ থাকতে এরা খামাখা পরিকল্পিতভাবে ও অসৎউদ্দেশ্যে বারবার রেলমন্ত্রী-মহোদয় মুজিবুল হকের বিয়ে নিয়ে নানান খবরাখবর ছেপে এই দেশের একশ্রেণীর পাষণ্ডকে আরও উসকে দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছে। এদের নিন্দার ভাষা আমাদের আপাততঃ জানা নাই।
সবচেয়ে মর্মান্তিক-ঘটনা হলো: গতকাল দেশের পরিচিত স্কয়ার-হাসপাতালে রেলমন্ত্রীর স্ত্রী একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেছেন। আর এই নিয়ে নোংরা-রাজনীতির খেলায় মেতে ওঠে দেশের ভিতরে ছদ্মবেশী একটি ঘাতকশ্রেণী। এরা একজন বয়োবৃদ্ধ-মাননীয় সংসদ-সদস্য ও মন্ত্রীকে নিয়ে অশালীন সব সংবাদ ছাপতে শুরু করে দেয়। আর রেলমন্ত্রী-মহোদয়কে কেন্দ্র করে এদের কটূক্তি শুনলে মনে হয়: এরা বুঝি মানুষ নয়!
এদের দেখাদেখি সবচেয়ে ভয়াবহ-নোংরা-খেলায় মেতে ওঠে একশ্রেণীর অর্বাচীন, গোমূর্খ ও সরীসৃপ জাতীয় পাষণ্ড। এরা ফেসবুকে-ব্লগে রেলমন্ত্রীর চোদ্দোগোষ্ঠী-উদ্ধারে নেমে পড়ে। এরা হিজড়াসমাজের হিজড়াভাষায় রগরগে বর্ণনাসম্বলিত লেখাপ্রকাশ করতে থাকে। একশ্রেণীর দেশবিরোধী-ফেসবুকার এই ঘটনাকে পুঁজি করে ফেসবুকে একজন আরেকজনের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়ে কুরুচিপূর্ণ-খেলায় মেতে উঠে আবোলতাবোল, আজেবাজে, আলতুফালতু ও বিকৃত-রুচির লেখা, মন্তব্য, সংলাপ ইত্যাদি প্রকাশ করতে শুরু করে দেয়। এসব কীসের আলামত? এসব পশুত্বেরই আলামত। এরা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে গতকাল (২৮-০৫-২০১৬ খ্রিস্টাব্দ) তাদের নিজেদের পশুত্বেরই প্রকাশ ও বিকাশ ঘটিয়েছে। আর গতকাল আমরা জানতে পেরেছি: এই দেশে কত নিম্নমানের পশু আছে।
আমাদের রেলমন্ত্রী মহোদয় ইসলামীশরীয়ত-মোতাবেক একজন মুসলিম-তরুণীকে বিবাহ করেছেন। আর এই তরুণীটি স্ব-ইচ্ছায়, নিজের সিদ্ধান্তে ও খুশি মনে এই বিবাহে রাজী হয়ে বিবাহসম্পন্ন করেছেন। এখানে অসুবিধা কোথায়? আর বিবাহ করলে যে-কারও সন্তানসন্ততি জন্মলাভ করবে। মূর্খগুলো হয়তো এসব জানে না। তাই, দেখলাম: গতকাল বনের পশুর মতো একদল পশু নিজেদের বিকৃত-মানসিকতা নিয়ে আমাদের রেলমন্ত্রীর বাবা হওয়ার কথা শুনে প্রচণ্ড-আক্রোশে মেতে ওঠে। এদের ভাব দেখে মনে হয়েছে: রেলমন্ত্রী-মহোদয় বুঝি এদের ‘বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছেন’! এরা আর কবে মানুষ হবে?
দেশের ভিতরে কতজন বিবাহ ছাড়াই কতরকমের পাপাচারে লিপ্ত। সেগুলো এই খবিসদের চোখে পড়ে না। এরা একজন বিবাহিত মানুষের পিছনে লেগে এদের দীনতার পরিচয় ঘটাচ্ছে।
দেশে পাষণ্ড আছে জানি। কিন্তু তাই বলে এতো নিম্নমানের, এতো নির্লজ্জ, আর এতো নৃশংস পাষণ্ড!
আমাদের দেশে অনেক রকমের পাষণ্ড আছে এটি চিরসত্য। আরও আছে একশ্রেণীর প্রকাশ্য শণ্ঢ, ভণ্ড আর কাপুরুষ। এদের পাষণ্ডস্বভাব কখনও যাবে না। কিন্তু এরা এতো নিম্নমানের, এতো নির্লজ্জ, আর এতো নৃশংস পাষণ্ড কেন?
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৯/০৫/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:০২