হায়রে শ্যামল কান্তি ভক্ত, স্বার্থের আশায় একেবারে সাষ্টাঙ্গপ্রণাম!
সাইয়িদ রফিকুল হক
শ্যামল কান্তির লোকজনকে এখন কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। এরা এখন আত্মগোপন করেছে নাকি? এদের কাউকে তো এখন দেখতে পাচ্ছি না। নাকি এরা লজ্জায়-ঘৃণায়-ক্ষোভে স্বেচ্ছা-কারাবাসে অন্তরীণ হয়েছে? ঠিক বুঝতে পারছি না। কেউ বুঝতে পারলে দয়া করে আমাকে একটু জানাবেন!
একজন শ্যামল কান্তিকে নিয়ে ক্রুসেড-যাত্রার মতো ভয়াবহ-তাণ্ডব ঘটে গেল দেশে! এখনও দেখতে পাচ্ছি শ্যামল কান্তির জন্য কেউ-কেউ কানধরে উঠবস করছে, আবার অতি-উৎসাহী কিছুসংখ্যক আপদ এখনও নিজের কানধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে! এই দেশে আর কত ছ্যাবলামি দেখবো?
একটি ছবি দেখে রাতারাতি কিছু মানুষ একেবারে ক্ষেপে গেল। আর তারা এই নিয়ে একজন সংসদ-সদস্যসহ বর্তমান-সরকারের চোদ্দোগোষ্ঠী-উদ্ধারের প্রচেষ্টায় নেমেছিলো। আবার কেউ-কেউ তো বলেছিলো: এই নিয়ে দেশে গণআন্দোলন হবে! আমার তখন এদের উদ্দেশ্যে বলতে ইচ্ছে করছিলো: গণআন্দোলনের সংজ্ঞা জানেন? নাকি শব্দটি লোকমুখে শুনেই বলে দিলেন! আসলে তারা একজন অসহায় শ্যামল কান্তিকে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চেয়েছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ এতো পাগল না যে, তারা কারও-কারও এইজাতীয় পাগলামিকে দেশের জন্য গণআন্দোলনের বিষয় হিসাবে বিবেচনা করবে। দেশের মানুষ এখনও এতো পাগল হয়নি।
একটি ছবি দেখে সারাদেশে রটে গেল একজন অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রকাশ্যে কানধরে উঠবস করানো হয়েছে! আর আজ সেই শিক্ষকই প্রকাশ্য-দিবালোকে একজন মন্ত্রীর পায়ের উপর উপুড় হয়ে পড়ে একেবারে সাষ্টাঙ্গপ্রণাম করতে এতটুকু দ্বিধা করলেন না! সামান্য কালবিলম্ব পর্যন্ত করলেন না। আর আজ কিন্তু কেউ তাকে দেশের মন্ত্রী-মহোদয়ের পদধূলি নিতে বলেনি। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছায় মন্ত্রী-মহোদয়ের পদধূলি মাথায় নিয়েছেন!
কিন্তু কীসের জন্য? আর কীসের স্বার্থে? আর কেনই-বা তিনি এসব করেছেন? আজ এটি জানতে চাওয়ার সুযোগ এসেছে। দয়া করে কেউ কি জবাবটি দিবেন?
পুনশ্চ—১: শিক্ষক হতে সবসময় মেরুদণ্ড লাগে। আরও লাগে আত্মসম্মানবোধ ও প্রবল-ব্যক্তিত্ব। আর এসবকিছু কি একজন শ্যামল কান্তি ভক্ত’র আছে?
পুনশ্চ—২: নাকি তিনি বাঁচার আশায় সেদিন স্বীয়-অপরাধ কবুল করে স্বেচ্ছায় প্রকাশ্যে কানধরে উঠবস করেছিলেন?
পুনশ্চ—৩: শিক্ষকের মর্যাদা-রক্ষার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপস নাই।
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৩/০৫/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯