আমার লাইফ পার্টনার বলল, "ফেবু আমার (তার) ভালবাসা কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে"। আমি একটু অমনোযোগী ছিলাম। তাই ফেবু না শুনে শুনলাম নেশফু। নেশফু হল আমাদের পাশের বাসার একটি মেয়ে। মাঝে-সাজে কথা হয় নেশফু-র সাথে। কিন্তু আমার গিন্নি মানে লাইফ পার্টনার নেশফুকে কখনো প্রতিযোগী ভাবার কথা না। তাই জিজ্ঞেস করলাম নেশফু তোমার কি ভালবাসা কেড়ে নিচ্ছে ? আমার কথা শুনে কানের কাছে এসে বলল, আমি বলেছি ফেবু, মানে ফেইসবুক। বললাম, ওহ্, তাই। কিন্তু কিভাবে ? সকাল, বিকাল, দুপর, রাত কখন থাকি না তোমার সাথে। সারাক্ষণ তো আদর, সঙ্গ, কথা আর একসাথে চলা। কেউ যদি পুরষ্কার দেয়, আমি এবার শ্রেষ্ঠ স্বামীর পুরষ্কার পাব। আমার স্ত্রী আমার মত দ্রুত রেগে যান না, ঝগড়া করেন না বা রাগ করে খাওয়া বন্ধ করে দেন না। সে (আমার লাইফ পার্টনার) পাশে এসে বলল, অফিস থেকে এসে খাবার খাওয়ার আগ পর্যন্ত তুমি ফেবু নিয়ে বসে থাক। খাবার খাওয়ার পর শুয়ে শুয়েও তুমি ফেবুতে চ্যাটিং কর। আমি (আমার লাইফ পার্টনার) অবাক হলাম, সেদিন তোমার এক পেশেন্ট-এর কথা শুনে। সে নাকি চেম্বারে ঢুকে দেখে তুমি ফেবু নিয়ে আছ। আর, এই যে, পরশু তুমিসহ তোমার বসের বাসায় গেলাম। তোমার বস বলেছে, তুমি নাকি অফিসে বসে মোবাইলে ফেবুতে চ্যাট কর। আমার সাথে ঘুমানো ছাড়াতো পুরো সময়টাতো ফেবু নিয়ে আছ। কথাগুলো দ্রুত বলে রুম থেকে বাইরে চলে গেল। বুঝতে পারলাম না, রুম থেকে বাইরে গিয়ে কি কিচেন-এ গেলো, নাকি বারান্দায় গিয়ে কাঁদছে। একটু পরে ঘুরে এসে আবার বলল, তুমি কি আমায় ছোঁও ? আদর করো ? ভালবাস ? আচ্ছা না হয় আমার কথা বাদ দিলাম, রোগী দেখার সময় প্রপার কনসালটেশনও দিবে না ! তোমার অফিসের বেতন তো হালাল হবে না। তুমি অফিস সময়ে ফেইসবুকে থাক! দ্রুত কথাগুলো বলে আবার বাইরে গেল। স্ত্রীর কথাগুলোয় আমি বিষ্মিত। ফেইসবুক যে স্ত্রীর অধিকারে প্রবেশ করেছে, রোগী দেখার সময় আমার অমনোযোগিতা রোগীর স্বার্থ ক্ষূন্ন করছে, অফিসে বস-সহকর্মীর বা সেবা প্রার্থীর প্রয়োজনে পর্যাপ্ত সাড়া দিতে পারছিনা - এসব বিষয়গুলো আমি ভাবতেই পারিনি। ফেইসবুকে কিসের এত টান! আমি ফেবু-র প্রবল আকর্ষণ থেকে বেরিয়ে আসতে পারব ?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩