বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষকবাহিনীর মুখপাত্র এবং কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমের খবর পড়ে মনে হতে পারে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মূল হোতারা গ্রেপ্তার হয়ে পড়েছে | প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা বোর্ডের কারো সম্পৃক্ততা এখনো পাননি বলেও একজন সম্মানিত পুলিশ কর্মকর্তা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন | তথাকথিত দুর্ধর্ষ (!) উল্লাহ বাহিনীর পতনের পর এই সকল মহান সংবাদ মাধ্যম এবং সম্মানিত কর্মকর্তাদের অত্যন্ত আত্মপ্রত্যয়ী বাণী শুনে আমরা বেকুব পাবলিকরা খুবই আশ্বস্ত বোধ করা শুরু করতে পারি |
কিন্তু পরোক্ষনেই একটু ধাক্কা খেতে হয় যখন শুনি পরীক্ষার দিন ইন্টারনেট বন্ধের নতুন নাটকের পর্দা উন্মোচনের সংবাদে | উল্লাহবাহিনীর পতনের পর কি আবার নতুন কোনো বংশের শাসন শুরু হলো নাকি ? হোতাদের গ্রেপ্তারের পর এদের রক্ত থেকে আরো লক্ষাধিক প্রশ্নপত্র ফাঁসের হোতাদের জন্ম হয়ে গেলো নাকি - যে এদের প্রতিরোধে এখন সারা বাংলার আনাচে কানাচে ইন্টারনেটের মতো একটি মারাত্মক যোগাযোগ ভাইরাসকে স্বল্পসময়ের জন্য হলেও দমন করতে হবে ? আজকে তারানা আপা থাকলে হয়তো এই স্বল্পমেয়াদি ইন্টারনেট বন্ধের বদলে অনেক দীর্ঘ মেয়াদি কোনো ব্যবস্থাও হয়ে যেতো |
পরীক্ষার দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখলে ফাঁস করা প্রশ্ন একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত বিতরণ হয়তো কিছুটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে | কিন্তু যে সকল শিক্ষার্থীদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ এবং লজিস্টিক সাপোর্ট আছে তাদের কাছে ফাঁস করা প্রশ্ন পৌঁছানো বন্ধ করা যাবে কি ? আর যেগুলোকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এরা হচ্ছে বাহক বা হেন্ডলার - আসল শয়তানগুলো কিন্তু এখনো অধরাই রয়ে গেছে | হয়তো তারা এখনো অফিস কেন্টিনে ভুনা খিছুড়ি খেয়ে খিক খিক করে দাঁত কিলিয়ে হাসছে | প্রশ্ন একবার ফাঁস হয়ে গেলে তা সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণীর কাছে পৌঁছানোটা তেমন সমস্যা হয় না - এজন্য ইন্টারনেট থাকা বা না থাকাটা কিন্তু মুখ্য নয় | প্রশ্নপত্র যেখান থেকে ফাঁস হচ্ছে, সেই মূল উৎস বন্ধের বিষয়ে কিন্তু এই সকল মহান সংস্থাসমূহের কোনো উচ্চবাচ্য নেই |
'উল্লাহ বাহিনী' কাহিনীর মতো ইতিপূর্বেও সময়ে সময়ে বিভিন্ন গাঁজাখুরি কাহিনী ফেঁদে জনগণকে বেকুব বানাবার ফাঁদে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে | কিন্তু এই সকল অপরাধের মূল উৎস বা হোতাদের গায়ে টোকা দেয়া বা .... পশম ফেলার মতো কোনো কাহিনী কিন্তু আজো পর্যন্ত বেকুব জনতার শোনার সৌভাগ্য কখনো হয় নাই -হয়তো কোনোদিন হবেও না |