অন্য সব জায়গার মত ব্লগ ডে'তে আমরা সিলেটের ব্লগাররাও এক সাথে মিলিত হয়েছিলাম। বিশ্বাষ না হলে উপরের ছবিতে প্রমান দেখুন। ১৮ তারিখে মামুন আমায় ফোন দিয়ে ব্লগ ডে এর আড্ডার স্থান ও আমন্ত্রন জানায়। ব্লগে ইদানিং নিয়মিত না হলেও যে কোনো ব্লগাড্ডায় উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি নতুন ব্লগারদের সাথে পরিচিত হবার লোভে। মনে পড়ে যায় আমি যখন ব্লগে নতুন ছিলাম তখন আমার ব্লগ বাড়ীতে কোনো সিনিয়র ব্লগারের পদচারনা আমায় কতইনা আনন্দ দিতো। নানান কারনে আমি অনেকের ব্লগে যেয়ে মন্তব্য করতে পারিনা। এই ব্যার্থতা টুকু কিছুটা ঢাকার জন্য হলেও সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি সেই আড্ডায় যাবো। যথা সময়ে কনকনে শীতকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে সভায় উপস্থিত হয়ে দেখি ২/১ জন ছাড়া আর সবাই উপস্থিত। সবার সাথে পরিচয় হবার পরে আড্ডা শুরু হলো সাথে গরম গরম স্যুপ আর ওন্থন।
এর মধ্যে মামুন কাল্পনিক ভালোবাসা ও জানার সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিলো। সুলতানা শিরিন সাজিমনি, আমার আদরের বোনটি দেশে এসেছে তাই ওকে মিস করেছি। মিস করেছি জানা, জুন, শায়মা সহ সব সহ-ব্লগারদের। ইস! এমন একটি আড্ডা যদি হোতো যেখানে সমগ্র দেশ-বিদেশের সব ব্লগাররা একত্রিত হতে পারতাম তবে কী মজাই না হতো।
শরীর গরম করে মামুন তার আগামী পরিকল্পনার কথা জানালো। সে শোলে নিয়ে কাজ করতে চায়, আমি তো শুনে আনন্দে বাসন্তি চরিত্রের জন্য জুন কে নির্বাচিত করেই ফেললাম। তারপর জুন আর শায়মার নামে কিছুক্ষন পরনিন্দা, পরচরচ্চা করে শুরু হলো আমাদের কবিতা পাঠের আসর। আমাদের বল্লেও পাঠক কুল্লে দুজনই ছিলেন। মামুন তার ল্যাপি খুলে কবিতা বের করে বসলো। প্রথমে সুকান্তের ছাড়পত্র আবৃত্ত্বি করলেন মহা মহোপাধ্যায়। অবশ্য এ জন্য উনাকে অনেক মুলোমুলি করতে হয়েছে। মুলামুলির ফল ভালোই হয়েছিলো। উনি সুন্দর আবৃত্ত্বি করলেন। ব্লগার বিপ্লবও উনার স্মৃতির ঝাপি থেকে ২টা চার পংতির কবিতা আউড়ালেন। তারপর আর কেউ রাজী না হওয়ায় মামুন একে একে অনেকগুলো কবিতা আবৃত্ত্বি করে আমাদের মন ভরিয়ে দিলেন। হেলাল হাফিজ থেকে শুরু করে জয় গোস্বামী পর্যন্ত। অসাধারন হয়েছিলো। বিশেষ করে নিজাম হেকমতের জেলখানার চিঠি ও শহিদ কাদরির প্রিয়তমা! মন ভরার পর স্বাভাবিক ভাবেই পেট ভরার কথা এসে যায় তাই খাবার খেতে বসে গেলাম। ওহ! বলা হয়নি। এবারের অনুষ্ঠানে জানার কথামত চীফ গেষ্ট ছিলেন আমার লাড্ডু গোপাল ওয়াকার আজমাইন।
কোথা দিয়ে যে সময় কেটে গেলো টেরও পেলামনা। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ন'টা ছুঁই ছুঁই! আমার বডীগার্ডের মায়ের ফোন আসার আগেই আমি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম। আমি আসার পর ওরা আরো কতক্ষন আড্ডা দিয়েছিলো তা কে জানে।
এক রাশ আনন্দ নিয়ে আমাদের ব্লগ ডে পালিত হলো। ইনশাল্লাহ আগামীতেও হবে। সবাইকে ব্লগ ডে এর শুভেচ্ছা!