মান্না ভাই! মান্না ভাই! এই সাত সকালে দৌড়াইতে দৌড়াইতে কই যান?
কে ...! কে ...। কে ...।
আমি সুশীল; মান্না ভাই! তা খ্যাতা মুড়ি দিছেন কেন? এখন তো শীত নাই?
আরে না ভাই এই এমনি; একটু মর্নিং ওয়াক করতে বের হইছি। যাই গা!
আরে ... শোনেন! শোনেন! ওদিকে যাইয়েন না! ওদিকে দেখলাম পোলাপান খাড়াইয়া আছে! একটু আগে দেখালাম ওরা কিসব বাঁশটাশ নিয়ে কথা বলছিল। আপনাকে নাকি দিবো? আর ওদিকে তো অনলাইনে দেখলাম পোলাপান আপনারে সমানে বাঁশ দেওয়ার টকশো বসাইছে?
হ ভাই! আমিও শুনছি; ওরা নাকি মূলী বাঁশ থেকে শুরু করে আছোলা বাঁশ পর্যন্ত রেডি করতেছে আমারে দেওয়ার জন্য। তা ভাই কোন বাঁশে ব্যথা বেশী লাগে? মূলীতে না আছোলা তে?
এটা আসলে বিভিন্ন দিক থেকে বিশ্লেষণ করতে হবে; এই যেমন- এটা নির্ভর করছে যে দিচ্ছে তার উপর, আবার নির্ভর করছে বাঁশের ব্যাসের উপর। আবার ধরেন বাঁশটা যদি মোটাও হয় কিন্তু তেলতেলে- তাইলে কিন্তু ব্যথাটা একটু কম পাবেন। আবার বাঁশটা চিকন হলেও সেটা যদি হয় কঞ্চিওয়ালা মানে ছোট ছোট আকল্যা রেখে কাটা- তাহলে কিন্তু ব্যথা আপনি বেশী পাবেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মান্না ভাই দেশে এখন গণতন্ত্র নাই! ৫ই জানুযারীতে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে আমরা মনে করি, দেশে জনমতের সঠিক প্রতিফলিত হয়নি। তাই দেশে বাঁশের ব্যবহার বেড়ে গেছে। এই বাঁশ থেকে আপনাকে বাঁচতে হলে দেশে একটা আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন হতে হবে। আপনি খেয়াল করবেন মান্না ভাই, সবার অংশগ্রহণে একটা অবাধ নির্বাচন হয়ে আমাদের সরকার ক্ষমতায় এলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তখন শুধুই উপভোগ করবো আর মধু খাবো, মান্না ভাই। আমাদের বিদেশী বন্ধুরাও কিন্তু ঠিক একই পয়েন্টে কথা বলছে। তাদের সেন্টমার্টিনটা চাইই! আর ওটা দিলে আমাদের গণতন্ত্র আরও পোক্ত হবে; ম্যাডাম তো আগেই তাতে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে রেখেছে। আপনি আমাদের নেতা। এই বাংলার সকল সুশীল আপনাকে নেতা মেনেছে- এটা কি কম ব্যাপার মান্না ভাই। আপনি এগিয়ে চলেন আমরা আছি আপনার সাথে। সামনের সরকারে কিন্তু আমাদের একটা বড় ভাগ চাইই চাই। না হলে রাত জেগে জেগে কিসের এত কষ্ট করছি আমরা? কথা কইতে কইতে মুখ ব্যথা করে এখন মান্না ভাই। টাকা তো পাই মাত্র দুই হাজার পার টক! আপনাকে অবশ্যই আমাদের তথা জনগণের স্বার্থটা আগে দেখতে হবে? আমাদের রেট বাড়াতে হবে!
ধুর ভাই! আমি আপনাকে ব্যথার কথা জিগাইলাম আর আপনি টকশো বসাইলেন? ঠিক আছে ভাই। আমি যাই! তা ভাই কোন দিকে যাবো ঠিক বুঝতে পারছি না? একটু যদি দেখাইয়া দিতেন ভাই?
দেখুন মান্না ভাই আপনি মূল পয়েন্টটা থেকে সরে আসছেন। মূল পয়েন্টে যদি তাকান তাহলে দেখবেন এই বাঁশটাশ আসলে কিছু না। মূল বিষয় হল- একটা ভাল ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনি ঘাবড়াইয়েন না, মূল বিষয় আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে; আর মুখে গণতন্ত্রের ফুলঝুরি ছড়াইয়া দিতে হবে। তাহলেই দেখবেন দেশে শান্তি বর্ষিত হচ্ছে। তার জন্য প্রয়োজনে এই তিন/চারটা ফেলে দিলেও কোন সমস্যা নেই। এইদেশে গণতন্ত্রের জন্য আমজনতার লাশ চাইই। আপনি ঠিকই বলেছে?
ধুর মিয়া! আমি আছি আমার জ্বালায় আর তুমি টকশো মারাও? আমি গেলাম! – বলে মান্না একটা ভোঁ দৌড় দিলেন!
অতপরঃ সুশীলটা নিজের মনেই বলে উঠলো, “শালার পূত গেল তো গেলই আমাদের মত দু-পয়সার সুশীলদেরও পাছায় বাঁশ ঢুকাইয়া দিয়া গেল!”
২৪/০২/২০১৫ বিকালঃ ৩.৩৬