আমি মাঝে মধ্যে মিরপুর থেকে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে টঙ্গি যাতায়াত করতে “জাবালে নূর” বাস সার্ভিস এর বাসে চড়ে থাকি। মিরপুর ফ্লাইওভার চালু হওয়ার পর এই বাস সার্ভিসটি চালু হয়েছে এবং এর দ্বারা মিরপুরবাসী যারা শেওড়া বাজার থেকে এয়ারপোর্ট হয়ে আব্দুল্লাহপুর যাতায়াত করে থাকে তারা খুবই উপকৃত হয়েছে। মোটামুটি ভাবে সিটিং রুল মান্যকারী- এই সার্ভিসের কারণে কর্মজীবী মানুষের মূল্যবান সময় বেঁচেছে অনেক, জনগণ ফ্লাইওভার থেকে উপকৃত হচ্ছে এবং পাশাপাশি সরকারও প্রশংসা পেয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে বানানো এই ফ্লাইওভারটি গাড়িগুলো বিনামূল্যে ব্যবহার করে থাকে অর্থাৎ গাড়িগুলোকে কোন টোল দিতে হয় না।
এই বাস সার্ভিসটি আগারগাও-আব্দুল্লাহপুর রুটে একমাত্র বাস সার্ভিস অর্থাৎ এই রুটে সরকার থেকে একমাত্র পারমিট প্রাপ্ত বাস সার্ভিস। যার কারণে এটা মনোপলি ব্যবসা করছে।
পরবর্তীতে এই সার্ভিসটির দেখাদেখি মিরপুর-১ থেকে মিরপুর-১০ হয়ে টঙ্গি- আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত আরও কয়েকটি বাস যেমন বিআরটিসি, কনক, প্রজাপতি ও রবরব সার্ভিস চালু হলেও; আগারগাও-আব্দুল্লাহ রুটে নতুন কোন বাস সার্ভিস চালু হয়নি বা চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি। যার কারণে জাবালে নূর বাস সার্ভিসটি যাত্রীদের নিকট থেকে ইচ্ছেমত ও বেশী ভাড়া নিচ্ছে এবং এর দেখাদেখি উল্লেখিত অন্য বাস সার্ভিসগুলোও বেশি ভাড়া নিচ্ছে এবং যাদের সবগুলোই সিটিং সার্ভিস নামে পরিচিত। এদের চাপেই কিনা বা অন্যকোন গোষ্ঠীয় স্বার্থে এই রুট গুলোতে একটাও লোকাল বাস সার্ভিস চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি- যা স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য ভাল হত।
যখনই আমি জাবালে নূর বাসে উঠেছি তখনই দেখেছি ভাড়া নিয়ে কোন না কোন যাত্রীর সাথে বাস কন্ডাক্টরের ক্যাচাল হচ্ছেই। এই ক্যাচালের মূল কারণ হল, একজন যাত্রী, সে আগারগাও থেকে যেকোনো জায়গা থেকেই উঠুক না কেন তাকে শেওড়া বাজার পর্যন্ত ভাড়া দিতে হবে ২০ টাকা; এখন সে যদি একটু সামনে অর্থাৎ সর্বচ্চো ২০০ গজ দূরে কুড়িল বিশ্বরোডে তথা কুড়িল ফ্লাইওভারের কাছে নামতে চায় তবে তাকে দিতে হবে ৩০ টাকা অর্থাৎ আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত ভাড়া দিতে হবে- যা সেখান থেকে অনেক দুরের পথ।
হ্যাঁ ! মাঝে ছাত্রদের গুতানিতে নিয়ম হয়েছে- শেওড়া বাজারে বাসের ওয়ে-বিলে সাইনের সময় যদি কেউ সেই বিলে স্বাক্ষরকারীকে হাত তুলে বলে যে, সে কুড়িল নামবে; তাহলে সে ২০ টাকাই দিতে পারবে। কিন্তু ফিরতি পথে কেউ যদি কুড়িল থেকে উঠে মিরপুরের দিকে আসতে চায় তাহলে তাকে দিতে হবে ৩০ টাকাই। এক্ষেত্রে টিকেট চেয়েও পাওয়া যায় না বা আব্দুল্লাহপুর–আগারগাও এর টিকেট দেওয়া হয়। এ নিয়ে ক্যাচাল প্রতিদিনের। আর কেউ যদি একটু বেশি প্রতিবাদী হয়ে পড়ে; তখন বাস ড্রাইভার বলে বসে, “আমাদের এসব বলে লাভ নাই, আপনাদের কাউন্টারে যেয়ে বলতে হবে”। আর “কাউন্টারে জানিয়েও কোন লাভ হয় না”-এটা সেই বাসে নিয়মিত চলাচলকারী ভুক্তভোগী যাত্রীদের তাৎক্ষনিক মন্তব্য।
আর হ্যাঁ, বাস ড্রাইভাররা আর একটা কথাও মনে করিয়ে দেয়, “এই বাসের মালিক সেনাসদস্যরা”। অর্থাৎ সেনাদের ভয় দেখানো হয় যাত্রীদের। যা বিশ্বাসযোগ্য নয় অবশ্যই, কিন্তু নাকের ডগায় বসেই তাদের নাম ব্যবহার করছে এরা!
এখন আসি মূল প্রশ্নে-
১) জাবালে নূর বাস সার্ভিসটির মালিকানায় কি আসলেই বর্তমান বা প্রাক্তন সেনাসদস্যরা আছেন? যদি না থাকে, তাহলে যারা তাদের নাম ব্যবহার করছে তারা অবশ্যই অন্যায় করছে এবং এর প্রতিকার হচ্ছে না কেন?
২) সিটিং বাস গুলোর ভাড়া কিসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়? কিলোমিটার নাকি সিট সংখ্যা নাকি বাস মালিকের চেনা মুখ ভিত্তিতে?
৩) বাসগুলো যখন সিটিং এর নামে চিটিং করে, যেখানে ইচ্ছা সেখান থেকে যাত্রী তোলে, আসনের চেয়েও বেশী যাত্রী তোলে, তখনও কি “সিটিং ভাড়া রুল” বলবত থাকবে? বা এর প্রতিকারের কি কোন আইন আছে?
৪) এই রুটগুলোতে কেন শুধুই সিটিং বাস চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হলো, লোকাল বাস সার্ভিস নেই কেন?
৫) ফ্লাইওভারের ব্যবহার থেকে কি শুধুমাত্র উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত মানুষরাই উপকার পাবে? গরীব বা নিম্ন আয়ের মানুষ কি এথেকে উপকার পাওয়ার যোগ্য নয়?
৬) সরকার ও সংশ্লিষ্ট দফতর “জাবালে নূর” বাস সার্ভিস নিয়ে কি ভাবছে?
ধন্যবাদ!
২১/০৯/২০১৪, ১১.৩৭ রাত
আমি মাঝে মধ্যে মিরপুর থেকে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে টঙ্গি যাতায়াত করতে “জাবালে নূর” বাস সার্ভিস এর বাসে চড়ে থাকি। মিরপুর ফ্লাইওভার চালু হওয়ার পর এই বাস সার্ভিসটি চালু হয়েছে এবং এর দ্বারা মিরপুরবাসী যারা শেওড়া বাজার থেকে এয়ারপোর্ট হয়ে আব্দুল্লাহপুর যাতায়াত করে থাকে তারা খুবই উপকৃত হয়েছে। মোটামুটি ভাবে সিটিং রুল মান্যকারী- এই সার্ভিসের কারণে কর্মজীবী মানুষের মূল্যবান সময় বেঁচেছে অনেক, জনগণ ফ্লাইওভার থেকে উপকৃত হচ্ছে এবং পাশাপাশি সরকারও প্রশংসা পেয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে বানানো এই ফ্লাইওভারটি গাড়িগুলো বিনামূল্যে ব্যবহার করে থাকে অর্থাৎ গাড়িগুলোকে কোন টোল দিতে হয় না।
এই বাস সার্ভিসটি আগারগাও-আব্দুল্লাহপুর রুটে একমাত্র বাস সার্ভিস অর্থাৎ এই রুটে সরকার থেকে একমাত্র পারমিট প্রাপ্ত বাস সার্ভিস। যার কারণে এটা মনোপলি ব্যবসা করছে।
পরবর্তীতে এই সার্ভিসটির দেখাদেখি মিরপুর-১ থেকে মিরপুর-১০ হয়ে টঙ্গি- আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত আরও কয়েকটি বাস যেমন বিআরটিসি, কনক, প্রজাপতি ও রবরব সার্ভিস চালু হলেও; আগারগাও-আব্দুল্লাহ রুটে নতুন কোন বাস সার্ভিস চালু হয়নি বা চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি। যার কারণে জাবালে নূর বাস সার্ভিসটি যাত্রীদের নিকট থেকে ইচ্ছেমত ও বেশী ভাড়া নিচ্ছে এবং এর দেখাদেখি উল্লেখিত অন্য বাস সার্ভিসগুলোও বেশি ভাড়া নিচ্ছে এবং যাদের সবগুলোই সিটিং সার্ভিস নামে পরিচিত। এদের চাপেই কিনা বা অন্যকোন গোষ্ঠীয় স্বার্থে এই রুট গুলোতে একটাও লোকাল বাস সার্ভিস চালুর অনুমতি দেওয়া হয়নি- যা স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য ভাল হত।
যখনই আমি জাবালে নূর বাসে উঠেছি তখনই দেখেছি ভাড়া নিয়ে কোন না কোন যাত্রীর সাথে বাস কন্ডাক্টরের ক্যাচাল হচ্ছেই। এই ক্যাচালের মূল কারণ হল, একজন যাত্রী, সে আগারগাও থেকে যেকোনো জায়গা থেকেই উঠুক না কেন তাকে শেওড়া বাজার পর্যন্ত ভাড়া দিতে হবে ২০ টাকা; এখন সে যদি একটু সামনে অর্থাৎ সর্বচ্চো ২০০ গজ দূরে কুড়িল বিশ্বরোডে তথা কুড়িল ফ্লাইওভারের কাছে নামতে চায় তবে তাকে দিতে হবে ৩০ টাকা অর্থাৎ আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত ভাড়া দিতে হবে- যা সেখান থেকে অনেক দুরের পথ।
হ্যাঁ ! মাঝে ছাত্রদের গুতানিতে নিয়ম হয়েছে- শেওড়া বাজারে বাসের ওয়ে-বিলে সাইনের সময় যদি কেউ সেই বিলে স্বাক্ষরকারীকে হাত তুলে বলে যে, সে কুড়িল নামবে; তাহলে সে ২০ টাকাই দিতে পারবে। কিন্তু ফিরতি পথে কেউ যদি কুড়িল থেকে উঠে মিরপুরের দিকে আসতে চায় তাহলে তাকে দিতে হবে ৩০ টাকাই। এক্ষেত্রে টিকেট চেয়েও পাওয়া যায় না বা আব্দুল্লাহপুর–আগারগাও এর টিকেট দেওয়া হয়। এ নিয়ে ক্যাচাল প্রতিদিনের। আর কেউ যদি একটু বেশি প্রতিবাদী হয়ে পড়ে; তখন বাস ড্রাইভার বলে বসে, “আমাদের এসব বলে লাভ নাই, আপনাদের কাউন্টারে যেয়ে বলতে হবে”। আর “কাউন্টারে জানিয়েও কোন লাভ হয় না”-এটা সেই বাসে নিয়মিত চলাচলকারী ভুক্তভোগী যাত্রীদের তাৎক্ষনিক মন্তব্য।
আর হ্যাঁ, বাস ড্রাইভাররা আর একটা কথাও মনে করিয়ে দেয়, “এই বাসের মালিক সেনাসদস্যরা”। অর্থাৎ সেনাদের ভয় দেখানো হয় যাত্রীদের। যা বিশ্বাসযোগ্য নয় অবশ্যই, কিন্তু নাকের ডগায় বসেই তাদের নাম ব্যবহার করছে এরা!
এখন আসি মূল প্রশ্নে-
১) জাবালে নূর বাস সার্ভিসটির মালিকানায় কি আসলেই বর্তমান বা প্রাক্তন সেনাসদস্যরা আছেন? যদি না থাকে, তাহলে যারা তাদের নাম ব্যবহার করছে তারা অবশ্যই অন্যায় করছে এবং এর প্রতিকার হচ্ছে না কেন?
২) সিটিং বাস গুলোর ভাড়া কিসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়? কিলোমিটার নাকি সিট সংখ্যা নাকি বাস মালিকের চেনা মুখ ভিত্তিতে?
৩) বাসগুলো যখন সিটিং এর নামে চিটিং করে, যেখানে ইচ্ছা সেখান থেকে যাত্রী তোলে, আসনের চেয়েও বেশী যাত্রী তোলে, তখনও কি “সিটিং ভাড়া রুল” বলবত থাকবে? বা এর প্রতিকারের কি কোন আইন আছে?
৪) এই রুটগুলোতে কেন শুধুই সিটিং বাস চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হলো, লোকাল বাস সার্ভিস নেই কেন?
৫) ফ্লাইওভারের ব্যবহার থেকে কি শুধুমাত্র উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত মানুষরাই উপকার পাবে? গরীব বা নিম্ন আয়ের মানুষ কি এথেকে উপকার পাওয়ার যোগ্য নয়?
৬) সরকার ও সংশ্লিষ্ট দফতর “জাবালে নূর” বাস সার্ভিস নিয়ে কি ভাবছে?
ধন্যবাদ!
২১/০৯/২০১৪, ১১.৩৭ রাত