সালাত পদ্ধতি:
সৎকর্ম ,ধৈর্য এবং পবিত্রতা অর্জন করার পর সালাত করবার যোগ্যতা তৈরি হয়৷কেউ এমন যোগ্যতা অর্জন করলে তার জন্য শরীয়তের সালাত আবশ্যক৷দৈনিক পাঁচবার অনুশীলনের মাধ্যমে এই অনুভুতীকে স্হায়ী রূপ দেয়ার চেষ্টা করতে হবে৷শরীয়তের সালাত নফসকে অচেতন/আম্মারা হইতে চেতন/লওয়ামাতে পরিণত করে৷কিন্তু শরীয়তের সালাত নফসকে দ্বৈতস্বত্বার দ্বিধা হতে মুক্ত করতে পারেনা ফলে তার পক্ষে সন্তুষ্ট চিত্ত/মুতমাঈন হওয়া সম্ভব হয়না৷তারপর নফসের জন্যে তরীকতের সালাত জরুরী হয়ে দাড়ায়৷কারন মুতমাঈন হবার জন্য ক্বলব জাগ্রত করা জরুরী, যার একমাত্র উপায় জিকর আর জিকর শেখার জন্য কুরআন ওয়াসিলা বা মাধ্যম ধরার নির্দেশ দিয়েছে৷পরবর্তীতে ওয়াসিলার তত্বাবধানে পর্যায়ক্রমে হাকিকত এবং মারেফতের সালাত কায়েম করতে হয়৷সাধারণ ভাবে সালাতে করণীয় সমূহ স্তর ভেদে ভিন্ন হলেও মূলত তারা একই উদ্দেশ্য বা মনোভাব বহন করে৷সালাতের মূল করণীয় সমূহের মনোভাব এবং স্তর ভিত্তিক পরিবর্তন পাশাপাশি শব্দ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি-
নিয়ত: শরীয়তে নিজের মুখমন্ডলের সামনে নিরাকারের খোদা উপস্থিত এমন অনুভব করার ইচ্ছা পোষন করতে হবে আর তরীকতে মুর্শিদের মুখমন্ডল অনুভব করার ইচ্ছা করতে হবে৷মুর্শিদ জ্ঞান দান করলে পরে রাসুলকে অনুভব করা যাবে,তখন হাকিকি সালাত কায়েম হবে৷ তারপর রাসূল যদি কবুল করেন তবে খোদার অনুভব পাওয়া যাবে তখন খোদার মুখমন্ডল অনুভব করবার ইচ্ছা করতে হবে৷
তাকবীর: নিরাকারের/মুর্শিদের /রাসূলের/খোদার মহত্ব স্পষ্ট ভাবে ঘোষনা করতে হবে৷
তাহরীমা: নিজের ইন্দ্রিয় গুলিকে বেধে নিয়ে নিরাকারের / মুর্শিদের/রাসুলের/খোদার অনুভবের সাথে একাত্ম করাতে হবে৷
তাজকির:তারপর সুরাহ পাঠ/মুখে জিকর/ক্বলবে জিকর/জাগতিক প্রতি বিন্দুতে জিকর প্রতিষ্ঠা করে খোদাকে স্মরন করতে হবে৷
রূকু: এরপর শরীয়ত সালাতে রূকু করার বিধান আছে৷ রূকু শব্দের মাধ্যমে অবনত ,আজ্ঞাবাহী হওয়া, রুজু হওয়া বুঝায়৷(শরীয়তে যারা আজ্ঞাবাহী হয়েছেন তরিকতের সালাতে তাদের নুতন করে আজ্ঞাবহ হওয়া বা রুকু করার প্রয়োজনীয়তা থাকেনা৷)
সিজদাহ: তারপর শরীয়ত সালাতে সিজদার বিধান আছে৷ সিজদাহ অর্থাত সুজুদ বা অবিচ্ছিন্ন, বস্তুত সেজদার সময় দেহের কৌনিক অবস্হান অধিকতর চৈতন্যের অনুভব বা গভীর ধ্যানের অভ্যাস তৈরী করে৷ মানসিক ভাবে সেজদার অর্থ সর্বশক্তিমানের কাছে নিজেকে সমর্পন করা৷সমর্পনকারীর সমর্পন কবুল হলে তবেই সে ওয়াসিলা পাবে৷তার আগে সে সত্য সঠিক ওয়াসিলা পাবেনা অর্থাৎ যারা সত্য ওয়াসিলা পেয়েছেন তাদের সিজদা কবুল হয়েছে৷ (তরীকতের সালাতে তাদের নুতন করে বারবার সিজদা করার প্রয়োজন নাই৷ তরিকত পর্যায় হতে সিজদাহ কেবল ক্বাবার জন্য বরাদ্দ থাকে, তরিকতে অন্তর্ভুক্ত হবার পর নিরাকারে সেজদাহ করা ক্বাবার জন্যে মানহানীকর)
তাশাহুদ: সর্বশেষে মুর্শিদের/রাসুলের/খোদার প্রশংসা বা দরুদ পাঠ করে তৌহিদে একাত্ব হওয়া এবং মুর্শিদের/রাসূলের/খোদার একক কতৃত্বের সাক্ষী প্রদান করে সালাত শেষ করতে হবে৷
বিঃদ্রঃ দাড়িয়ে, বসে, শুয়ে বা চলন্ত অবস্হায় সালাত করার নিয়ম আছে৷সালাত জামাতে করতে হবে এমন কোনো নিয়ম নাই৷ সালাম বা মুনাজাত সালাতের অবশ্যকরণীয় অংশ নয় তাই বর্ণনা নিস্প্রয়োজন৷ তরিকতের স্তর হতে সালাত অবশ্যই মুর্শিদ বা গুরুর তত্বাবধানে করতে হবে৷হাকিকতের স্তর হতে সালাত ওয়াক্ত/খন্ড হওয়ার পরিবর্তে দায়েম/অখন্ড/নিরবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷