আকাশটা দ্রুত মেঘলা হয়ে আসছে। ছেলেটা ভেতরে ভেতরে তাড়া অনুভব করল। আজকের টাকাটা এখনো জোগাড় হয়নি। বৃষ্টি আসার আগেই টাকা জোগাড় করতে হবে। সে দ্রুত পা চালাতে লাগলো। বৃষ্টি চলে আসলে এখানে আর কাউকে পাওয়া যাবে না।
মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য চাওয়াটা অনেক লজ্জার! সে ছোট হলেও প্রতিদিন টাকার জন্য হাত পেতে ভিক্ষা চাইতে তার খুব খারাপ লাগে। অনেকেই তার ছোট্ট মলিন মুখ দেখে সাহায্য করে এটা ঠিক, কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই খুব খারাপ ব্যাবহার করে। এই তো, কিছুক্ষন আগেও একজন তার গালে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বলল, "এতটুকু বয়সে চিটারি শিখে গেছিস? যা ভাগ এখান থেকে!" চোখ মুছতে মুছতে সে ওখান থেকে সরে আসলো।
মাঝে মাঝে চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছা করে, "আমি মিথ্যাবাদী না... আমি চিটার না... আমি খারাপ না!" কিন্তু বলে কি লাভ? কে শুনবে তার কথা? তবে যারা তাকে সাহায্য করে তাদের জন্য মনে মনে সে অনেক দোয়া করে। কে জানে তার মত ছোট মানুষের দোয়া আল্লাহ্ কবুল করে কি-না! তবে এটা সত্যি এমন কিছু মানুষের দয়াতেই...
কালো মেঘে চারেদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। এরই মধ্যে দু-এক ফোঁটা বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। তার মন হাহাকার করে উঠল! এখনো সব টাকা জোগাড় হয়নি। আজ রাতে তাদের দু'জনকে হয়তো না খেয়ে থাকতে হবে। এখন দু-এক বেলা না খেয়ে থাকতে তার সমস্যা হয় না কিন্তু মায়ের পুরো ওষুধের টাকা এখনো জোগাড় হয়নি। হঠাৎ সে কেমন জানি অস্থির হয়ে উঠল... বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে যে কোনো মূল্যে তাকে ওষুধের টাকাটা জোগাড় করতে হবে... মা ছাড়া এই পৃথিবীতে যে তার আর কেউ নেই! ক্ষণিকের জন্য হলেও সে হাত পেতে ভিক্ষা চাওয়ার লজ্জাটা ভুলে গেল!
[ছবিটা গুগল মামার থেকে নেওয়া]