শুনছো মেয়ে, আমার যেদিন মৃত্যু হবে;
মৃত্যু ছুঁয়ে দিবে এই ভঙ্গুর দেহ।
সেদিন তুমি আমার জন্য একটু কেঁদো,
খুব বেশি না; অল্প একটু কেঁদো।
তবে খেয়াল রেখো, চোখের কাজল যেনো নষ্ট না হয়।
মেয়ে শুনছো, সেদিন না হয়; একবার ইচ্ছে করেই-
বারান্দার গ্রিল ধরে আমার অপেক্ষা করো;
মিছে মিছেই অপেক্ষা করো।
যদি ভুল করে কেউ জিজ্ঞাসা করে বসে,
এত্ত রাতে বারান্দায় কী?
তুমি না হয় শেষবারের মতো,
আমার জন্য; সেদিন একটা মিথ্যা বলো।
কোনো এক নক্ষত্রের রাতে, একবার আকাশ পানে তাকিও।
আকুল করা কণ্ঠে, চোখে লক্ষ কোটি বছরের ব্যাকুলতা নিয়ে;
একবার “ভালোবাসি শরিফুল” বলে ডাকিও!
খুব জোরে ডাকতে হবে না, যদি কেউ শুনে ফেলে!
তুমি বরং মৃদুস্বরে ডাকিও, আমি ঠিক শুনে নিবো।
স্টেশনের শেষ ট্রেনটায়, বেলা ঘড়িয়ে-
একদিন হুট করেই উঠে বসো; টিকেট কেটো না!
ভেবে নিও টিকেট নিয়ে- এই আমি আসছি,
যদিও আমি আর আসবো না; তবুও ভেবে নিও।
সেদিন না হয় দিনশেষে আমার কথা ভেবে,
তুমি একবার দীর্ঘশ্বাস ফেলো।
তোমায় নিয়ে, আমার যে সমুদ্রবিলাস করার ইচ্ছাটা ছিল;
তা তুমি অপূর্ণ রেখো না, কেমন?
সমুদ্র তীরে, অস্ত যাওয়া সূর্যের দিকে তাকিয়ে-
তুমি বরং হাতটা একটু বাড়িয়ে দিও,
আমি না হয় বাতাস হয়ে তোমার হাতটা ছুঁয়ে দিবো।
যেদিন খুব করে আমায় কথা মনে পড়বে,
সেদিন আমার কবরটা একটু ছুঁয়ে দিও।
খোদাই করা এপিটাফে,
যেথায় লেখা থাকবে- “ভালোবাসি লক্ষ্মীটা”
সেথায় একটুখানিক,
তোমার নরম হাতের; উষ্ণ পরশ বুলিয়ে দিও।
শুনছো মেয়ে, বেলাশেষে আমার পোড়া ঘরে;
তোমার চরণধূলি- একবার ফেলে যেও।
তুমি সেদিন ঠিক দেখে নিবে-
তোমায় ছাড়া, ছন্নছাড়া এই আমি; কত কষ্টে দিন পার করেছি।
এই নশ্বর পৃথিবীতে, তোমাকে ছাড়া;
আমার একেকটা দিন কত যন্ত্রণায় কেটেছে,
তুমি ঠিক দেখে নিও লক্ষ্মীটা।
কবিতাঃ শুনেছো মেয়ে
লেখকঃ শরিফুল ইসলাম
বইঃ লক্ষ্মীটা (পিডিএফ)
মূল্যঃ একদম ফ্রি!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৫