একবার এক লোকের ইচ্ছা হল তিনি সাঁতার দিয়ে পাশের
একটি নদী পাড়ি দিবেন । তাই ইচ্ছে মোতাবেক
লোকটি নদীর দিকে হাঁটতে শুরু করলো। পথে লোকজন
জানতে চাইল যে সে কোনদিকে যাচ্ছে। লোকটি যখনই বলল
যে সে সাঁতরে নদী পার হবে, সাথে সাথে লোকজন
তাকে বলল, নদীতে অনেক কুমির আর সাপ আছে তাই
তুমি সাঁতরাতে গেলেই ওরা তোমাকে কামড়ে দেবে।
লোকটি তাদের কথায় কান না দিয়ে আবার চলতে শুরু
করলো। হাঁটতে হাঁটতে লোকটি নদীর কাছে পৌঁছে গেল।
নদীতে নামতে যাবে ঠিক এমন সময়ে লোকটি খেয়াল
করলো নদীর কিনারায় মাটির গর্তের ভেতর সাপ
দেখা যাচ্ছে। লোকটির তখন সেই লোকগুলোর
কথা মনে পড়লো, তাই ভয় পেয়ে আর
নদী না সাঁতরে বাড়ি ফিরে এলো।
কিছুদিন পর আবার বের হল নদী সাঁতরাতে।
পথমধ্যে এবারো কিছু লোকের সাথে তার দেখা হল
এবং নদী সাঁতরানোর কথা শুনে তারা বলল নদীতে এখন
অনেক বেশি পানি আর স্রোতও অনেক, তাই
সাঁতরাতে গেলে ডুবে মরবে।
কথাগুলো শুনে কোনও মন্তব্য না করে লোকটি নদীর
দিকে ছুটলো এবং দেখলো নদীতে সত্যিই অনেক
বেশি পানি আর স্রোতও অনেক। লোকটি এবারো ভয়
পেয়ে আগের মতোই বাড়ি ফিরে এলো।
বেশ কিছু দিন পর লোকটি সকালে নদীর ধারে ছিপ দিয়ে মাছ
ধরছিল। এমন সময় দেখতে পেল একটা ছোট ছেলে পানির
ভেতর পড়ে যেয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে।
লোকটি সাথে সাথে নদীতে নেমে গেল এবং ছেলেটির জীবন
বাঁচাল।
নদীর পাড়ে ছেলেটিকে এনে লোকটি তার
কাছে জানতে চাইলো যে সে কিভাবে নদীর ভেতর পড়ে গেল।
জবাবে ছেলেটি বলল- “আমার খেলার বলটি নদীর
পানিতে ছিটকে পড়েছিল, তাই বল
আনতে পানিতে নেমেছিলাম।''
জবাবে লোকটি যখন বলল যে নদীতে অনেক সাপ-কুমির
আছে আবার নদীর পানিতে স্রোতও অনেক বেশি- তখনই
ছোট্ট ছেলেটি উত্তর দিল, আমি পানিতে নামার সময়
একটা সাপও দেখিনি, আর আমি ডুবে যাচ্ছিলাম পানির
স্রোতের কারনে নয়- বরং আমি সাঁতরাতে পারি না বলে”!
ছোট্ট ছেলেটির কথায় লোকটি সম্বিত ফিরে পেল।
লোকটি বুঝতে পারলো তার দুর্বলতা আর ভাবতে লাগল
সত্যিই তো- কোনও সাপ তাকে এখন কামড়াতে আসেনি,
এমনকি নদীর স্রোতের মুখ থেকে যখন ছোট
ছেলেটিকে সে বাঁচাল তখনও কোনও স্রোতের
তালে সে ডুবে যায়নি, অথচ ওগুলোর ভয়তেই সে এতোদিন
নদী পার হয়নি।
আর দেরি না করে লোকটি সাথে সাথে নদীতে ঝাঁপ দিল আর
সাঁতরে এক নিমিষেই ওপারে পৌঁছে গেল।
-------------
মানুষ আপনাকে থামাতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। নানা রকম
ভয়-ভীতি দেখিয়ে আপনার পথ কেউ না কেউ এসে রুদ্ধ
করবেই। একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন, আপনার
ভিতরে কী প্রতিভা আছে—তা আপনার চেয়ে বেশি অন্য কেউ
জানে না। তাই আপনার ভিতরের সত্যিকারের
প্রতিভা আপনাকেই আবিষ্কার করে তার
পরিচর্যা করতে হবে। মিছে ভয় না পেয়ে আত্মবিশ্বাস
নিয়ে পথে নেমে পড়ুন।
আত্মবিশ্বাস রাখুন- আপনি পারবেন।
ভয়-বিপদ তো আছেই- তবে তা অবশ্যই আপনার জয় করার
ক্ষমতার ঊর্ধ্বে নয়।
সুতরাং জয়ী হবার মানসিকতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান
হয়ে পদক্ষেপ নিন-
“সফলতা আসবেই।”
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩