আয়নাবতী,
মনে আছে কি তোর, নিমের ডালের সেই দন্ত-মাজন
কিংবা সজনে্র ডাল ভেঙ্গে মাটিতে আঁকিবুকি তোর নাম।
আমার উঠতি গোঁফের আড়ালে তোর কাছে মুখ লুকোনো তিনটে দিন।
হয়তো ভুলে গেছিস, মনেই বা রাখবি কি করে। ছিলি বাচ্চা একটা মেয়ে। আর আমার শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা রাখা শান্ত-চঞ্চল মন, তুই কি করে বুঝবি, তোর কাছেই বাঁধা পরে গেছিলো।
তারপর, কেটে গেলো কয়েকটা বছর। কতশত ঘটন-অঘটনের কয়েকটা বছর পেরিয়ে আবার তোর দেখা পেলাম। বাল্যকালের সেই ভালোবাসা বুকের ভেতর মুচড় দিয়ে উঠল। রাতগুলো সব নির্ঘুম স্বপ্ন দেখে কাটতে লাগলো; আর দিনগুলো, তোকে পাওয়ার আশায় হৃদয়ের হাজারো পরতে পরতে ভালোবাসার জাল বুনে।
ভেবেছি, আমি ভেবে নিয়েছি। পিছনে ফেরার উপায় নেই আমার। মনের কথা মনে চেপে রেখে নিজে নিজে কষ্ট পাবার মাঝে কোন আনন্দ নেই। সব বলে দিয়েছি, হয়ত গড়বড় করে দিয়েছি। গুছিয়ে বলার ইচ্ছা ছিলো। কথাগুলো কতই না সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু পারি না, তোর সামনে স্থির থাকতে পারি না। সব এলোমেলো হয়ে যায়। তোর বলা সেই “না” শব্দটা কাঁটার মত বসে আছে হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে। বৃত্তের কেন্দ্রের মত তুই জায়গা করে নিয়েছিস আমার জগতজুড়ে। আর আমি তার চারপাশজুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছি, শুধুই ঘুরপাক খাচ্ছি।
তুই তো বুঝিস। এখন তো তুই সব বুঝিস। আমায় একটু বুঝার চেষ্টা কর! আমি আবার একবার “না” শুনতে চাই। অংকের মত জীবনের অংকেও যদি তত্ত্বটা মিলে যায় তবে তো ভালোই হয়। “না” আর “না” গুণ করে তুই “হ্যা” করে দে। আর আমি আমার জীবনটা তোর সাথে ভাগ করে নিই।
অপেক্ষাই রইলাম, যদ্দিন সম্ভব। ভালো থাক, আয়নাবতী।
# শব্দকোষ
আয়নাবতী: রুপবতী মেয়ে যে আয়নার নিজের চেহারা দেখে আর মনে মনে বলতে থাকে, “হ্যা ঈশ্বর! আমি এত সুন্দর কেন!!”
শান্ত-চঞ্চল: বাহ্যিক দিক দিয়ে শান্তশিষ্ট, তবে মনের মাঝে সর্বদা চঞ্চলতা বিরাজ করে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫