যুদ্ধপরাধের অভিযোগে কসাই কাদের খ্যাত কাদের মোল্লার ফাঁসি হইল। তা নিয়া জামায়াতের চ্যালারা দেশটারে জ্বালাই পুরাই শেষ কইরা ফেলতাছে। তাদের দাবি কাদের মোল্লা নাকি নিরপরাধী। কাদের মোল্লার ভাষ্যমতে তার চ্যালারে দাবি করে , সে নাকি কসাই কাদের না, কসাই কাদের অন্য কেউ। অন্যদিকে, কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়া পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দুঃখ ও শোক প্রকাশ। কাদেরকে পাকিস্তানের একনিষ্ঠ অনুগত বলে আখ্যাও দেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ এ পাকিস্তানের প্রতি তার অনুগত্যের কথাও স্বরণ করেন ত্যানার। তার মানে কি দাড়াইল? কাদের মোল্লার ১৯৭১ এ যেসব কুকর্ম করেছে, তার জলজ্যান্ত প্রমান তো পাকিস্তান এখন নিজেই। এখন চ্যালারা পাকিস্তানের এইসব কথার পরিপ্রেক্ষিতে কোন কথা বলে না কেন?
আজকে আবার টাটকা খবর শুনলাম, তালিবানরা নাকি কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদ স্বরুপ পাকিস্তানে বাংলাদেশী হাই-কমিশনে হামলার হুমকি দিছে। এসব ফাইজলামির মানে কি। কাদের পাকিস্তানের একনিষ্ঠ অনুগত্যকারী ছিলো। মানলাম এ কারণে পাকিস্তান দুঃখ প্রকাশ করেছে, এটা যুক্তিসংগত। তাই বলে তালেবান। বাংলাদেশে যুদ্ধপরাধীদের বিচারে তালেবানদের এত মাথা ব্যাথা কেন? এতে তাদের কি যায় আসে...!!! এখন কথার কথা হচ্ছে, আমার মতে "জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ" হচ্ছে "জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তান" এর একটি শাখা মাত্র। আর মাঝে মাঝে শুনতে পাই, তালেবানরা নিষিদ্ধ হইলেও এই সংগঠনটি নাকি পাকিস্তান সরকারের মদদেই চলে। তার মানে কি দাড়ায়, যেই লাউ সেই কদু...!!!
লিখতে যখন বসছিই, আরো কিছু কথা না বললেই নয়। এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ার পর, পাকিস্তানের কিছু নিউজ চ্যানেলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে পাকিস্তানের চেয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে কতটুকু এগিয়ে আছে তা ফলাও করে প্রচার করা হয়। এই সংক্রান্ত কতিপয় নিউজের সমন্বয়ে তৈরী একটা ভিডিও ক্লিপ আমাদের মত তরূণদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কার্যত আমিও দেখেছি নিউজগুলো। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশ যে সব ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে সেগুলো হচ্ছে বৈদেশিক রেমিট্যান্স, শিক্ষা, নিরাপত্তা, পোশাক ও ওষুধ শিল্পে বৈদেশিক আয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি।
এখন কথা হচ্ছে এই যে, বাংলাদেশ পাকিস্থান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাত্র চল্লিশ বছরেই আস্তে আস্তে সকল ক্ষেত্রেই পাকিস্তানকে পেছনে ফেলছে। এতে পাকিস্তানের আঁতে আঘাত তো লাগারই কথা। তারা কি এসব এত সহজে সহ্য করবে? মোটেই না। তারা সব সময় চাইবে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন কলহে লিপ্ত হোক। নিজেরা মারামারি করে, কাটাকাটি করে মরুক। আর এভাবেই পিছিয়ে পড়ুক বাংলাদেশ। আর এই কাজ কে সফল করতে তাদের বড় হাতিয়ার, কতিপয় জন্মসুত্রে বাংলাদেশী ভোটার আইডি কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেটধারী পাকিস্তানী দোসর ও তাদের চ্যালারা। কয়েকদিন আগে, কোনাবাড়িতে “স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস্”-এ আগুন লাগলো। কে লাগালো, কেনো লাগালো কেউ কি একটু ভেবে দেখেছেন? নাম হলো কিসের, শ্রমিক অসন্তোষ। অথচ, দেখা গেলো গার্মেন্টস্ এ আগুল লাগার পর সেই গার্মেন্টস্-এর শ্রমিকরাই হাহুতাশ করে কপাল চাপড়াতে শুরু করে দিয়েছে। অবস্থা হয়েছে এমন, “কার ধান কে খাইল, মল্লিকের গরু খোয়াড়ে গেলো।”
অনেক কিছু বলছি। থাক আর কিছু বলতে চাইনা। বর্তমান পরিস্থিতি এমন হইছে, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে গেলে একেকজন একেক ধরণের উপাধী দিয়া দেয়। তার পরেও আবার এই ভয় আছে, কখন জানি আবার উদুর পিন্ডি এই বুদুর ঘাড়েই আইসা পড়ে।