মানুষ নিজেকে পরিশুদ্ধ করার প্রয়োজনে ধর্ম কর্ম করে । নিজের ভেতর থেকে জেগে উঠা পাপ বোধ পরকালের শাস্তির প্রতি ভয় থেকে রেহাই পাবার জন্যই মানুষ ধর্মের দিকে ঝুঁকে পরে । সারা জীবন পাপের স্রোতে জীবন অতিবাহিত করে মধ্যবিত্ত পুরুষেরা শেষ বয়সে দাড়ি,টুপি টুপি লাগিয়ে মসজিদে মসজিদে দৌড়ায় । সকাল বিকাল খোদার সামনে উঠ বস করে । সামথ্যবান হলে নিজেরাই মসজিদ মন্দির বানিয়ে দেয় । খোদা সন্তুষ্ট তো সব সন্তুষ্ট । খোদার জন্য ঘর বানিয়ে দিলে তার চেয়ে আর কে বেশি খুশি হবে ? তাই বানাও খোদার জন্য ঘর । লোকে এসে ইবাদত করবে । তাতে সোয়াব ও মিলবে নামও মিলবে । নিয়োগকৃত হুজুরেরা সকাল বিকাল দোয়া করবে তাতেই মসজিদ নির্মাতা চোদ্দ গুষ্টি সহ বেহেস্তে যাবে । মরার পরে কে কোথায় যায় সেটা তো আর দেখা যায় না । তবে অনুমান করা যায় । সৎ কর্মে স্বর্গবাস । অসৎ কর্মে নরক ।
ঢাকাকে বলা হয় মসজিদের শহর ঈমানদারের শহর বলা হয় না কেন ?
ঢাকা শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য মসজিদ, মন্দির । এমন কোন গলি নাই এমন কোন মোড় নাই যেখানে মসজিদ বা মন্দির নাই । এর মধ্যে রয়েছে আবার এসি, নন এসি মসজিদ । সবই মুসল্লিদের জন্য । মাজারের কথা না হয় বাদই দিলাম । আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ঢাকা শহরে এতো মসজিদ, এতো মন্দির কেন ? আমি তো এমন অনেক মসজিদ দেখেছি যেখানে নামাজের সময় দু'ই কাতারের বেশি লোক হয় না । তবুও মসজিদ থাকতে হবে । না হলে ইজ্জতে লাগে ।
মসজিদ আল্লাহ্'র ঘর । ইবাদতের জায়গা । ঢাকা শহরে যতো মসজিদ রয়েছে ততো কি ইমানদার আছে ? যদি থাকতো তা হলে দেশে একটা লোকও গরিব থাকতো না । মানুষ ভিক্ষা করতো না । জেলখানাগুলো থাকতো শূণ্য ।
মহল্লায় মহল্লায় মসজিদের কল্যাণে হুজুরদের শরীর যেমন তেল চকচক করে ঠিক তেমনি ঠাকুরদের শরীরও চকচক করে । তবুও মসজিদ একতলা থেকে তিন তলা হয় । তিন থেকে বেড়ে হয় পাঁচ তলা হয় । গরীব কিন্তু সেই গরীবই থাকে । অভুক্ত অভুক্তই থাকে । তাতে কার কি আসে যায় । রাতে মসজিদে বড় বড় তালা মেরে হুজুরেরা চলে যায় বিশ্রামের খোজে । বিবি বাচ্চা নিয়া আরাম করে । খোদার ঘরে তালে লাগে । খোদা নিজের ঘর নিজে পাহারা দেয় না । এতো সময় নাই খোদার । বড্ড ব্যস্ত সে । কি হাস্য কর তাই না ।
এক মসজিদের হুজুর আবার অন্য মসজিদের হুজুররে দেখতে পারে না যেমন পারে না মন্দিরের ঠাকুরেরা । মুসল্লিরা আবার নাক উচা সব মসজিদে বা মন্দিরে নামাজ পড়ে, পূজা করে শান্তি পায় না । তাদের আবার মনের শান্তি লাগে । ভাও লাগে । ঠাকুর বা হুজুরের সু দৃষ্টি লাগে । মসজিদে দুনীয়া দারির আলাম নিষেধ হলেও তাও চলে মসজিদ, মন্দিরে । মানে ধর্মের নামে সেই দলাদলি পাড়াপারি । এক কমিটির সাথে অন্য কর্মিটির মারামারি দেন দরবার, বিচার সালিস কোন কিছু বাদ নাই । খোদা কিন্তু নীরব । তিনি কোন শব্দ করে না । কোন দলও বেছে নেন না ।
আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ঢাকা শহরে এতো মসজিদ মন্দিরের কোন প্রয়োজন নাই । সব গুটিয়ে ফেলুন বা ভেঙ্গে ফেলুন । তার পরিবর্তে প্রতিটি পাড়ায় বা মহল্লায় একটি বড় মসজিদ নির্মাণ করা হোক । সেখানে সবাই গিয়ে নামাজ পরবে । তখন দেখা যাবে কে কতো বড় মুসল্লি । এছাড়া একটি নিদিষ্ট দুরুত্বে দুরুত্বে জায়গার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক যেন সবাই সেখানে গিয়ে নামাজ পড়তে পারে, ইবাদত করতে পারে । সে জায়গার দায়িত্বে থাকবে রাষ্ট্র ।
অবস্থা এমন আমি সৎ থাকি বা না থাকি, ভাল কাজ করি বা না করি মসজিদে যাই বা না যাই মোড়ে মোড়ে মসজিদ, মন্দির লাগবেই । সত্যি বলতে, এই মসজিদ মন্দিরের নামে চলে এক ধরনের প্রতারণা । এরা খোদারে নিয়া ব্যবসা করে,দান গ্রহনের নামে ভিক্ষা করে । এসব বন্ধ হওয়া দরকার । আল্লাহ যেদিন ধরবে সেদিন আর শেষ রক্ষা হবে না । প্রতিটি জিনিষের হিসাব দিতে হবে । এদের কারো ইমানের ঠিক নাই । তার প্রমাণ হচ্ছে, ধর্মের নামে দলাদলী একদল বলে তারা ঠিক অন্যদল বলে ভুল । ছি । ঘেন্না লাগে এসব দেখলে । এদের পেছনে নামাজ হয় বলে আমার মনে হয় না ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১০