somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড. ইউনূসের মিথ্যাচার ও প্রতারণার ফাঁদ

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড.মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ইউরোপের দেওয়া প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানোর অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার রাতে নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রথমবারের মত প্রচারিত ‘ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে’ (Caught in Miicro Debt) নামে এক প্রামাণ্য চলচ্চত্রটি নির্মাণ করেছেন ডেনমার্কের চলচ্চিত্র নির্মাতা টম হাইনম্যান। প্রচারিত ওই প্রামাণ্যচিত্রে এ অভিযোগ তোলা হয়।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে ইতিবাচক চিত্র মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল এই চলচ্চিত্রটি সম্পূর্ণ তার বিপরীত একটি চিত্র তুলে এনেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য ভর্তুকি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংককে ১৯৯৬ সালে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের (নরওয়ে, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি) দেওয়া অর্থ থেকে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণ নামে নিজের অন্য এক প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেন ইউনূস।

বিষয়টি নিয়ে নির্মাতা টম হাইনম্যান কয়েকবার বাংলাদেশেও এসেছেন এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছেন। নির্মাতা অভিযোগ করেছেন, প্রায় ৬ মাস ধরে তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার এবং বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ড. ইউনূস তাকে কোনো সময় দেননি।

ঢাকার নরওয়ের দূতাবাস, নরওয়ের দাতাসংস্থা নোরাড এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকে ফেরত নিতে চেয়েও পারেনি। ১০ কোটি ডলারের মধ্যে সাত কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণ নামের প্রতিষ্ঠানেই থেকে যায়। এরপর গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ওই অর্থ ঋণ হিসেবে নেয় গ্রামীণ ব্যাংক।

বাংলাদেশনিউজ২৪x৭.কম এর পক্ষ থেকেও ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে জানা যায় যে, মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশে আছেন এবং ১২ ডিসেম্বর ফিরবেন।

প্রামাণ্যচিত্রে তিনি ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়টিকে 'ক্রিটিক্যালি' দেখার চেষ্টা করেছেন বলে জানান টম। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য টমকে ২০০৭ সালে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করে ডেনিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম। ‘ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে’ (Caught in Miicro Debt) চলচ্চিত্রটি নরওয়েজিয়ান ভাষায় তৈরী করা হলেও খুব শীঘ্রই তা ইংরেজীসহ আরো কিছু ভাষায় ভাষান্তর করা হবে বলে টম হাইনম্যান জানিয়েছেন।

কোটি কোটি ডলার 'আত্মসাতের' এ ঘটনা প্রকাশ যেন না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক ছিলেন ইউনূস। এ নিয়ে নোরাডের তখনকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠিও লেখেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ১ এপ্রিল লেখা ওই চিঠিতে ইউনূস বলেন, "আপনার সাহায্য দরকার আমার। ... সরকার এবং সরকারের বাইরের মানুষ বিষয়টি জানতে পারলে আমাদের সত্যিই সমস্যা হবে।" কিন্তু নোরাড, ঢাকার নরওয়ে দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে।

গত শতকের ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক বিপুল পরিমাণ বিদেশি অর্থ পায়। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের গরিব মানুষদের দারিদ্রসীমার নিচ থেকে তুলে আনাই ছিলো ওই তহবিলের লক্ষ্য। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জোনাথন মরডাকের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময় ভর্তুকি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংক ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার পেয়েছিলো।

ইউনূসের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ডলার সরানোর যে অভিযোগ ওঠে, তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছিলেন নোরাডকে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণ নামের প্রতিষ্ঠানে অর্থ সরিয়ে নেওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি ১৯৯৮ সালের ৮ জানুয়ারি একটি চিঠি লিখেন। তাতে বলা হয়- "এ অর্থ রিভলবিং ফান্ড হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় থেকে গেলে ক্রমশ বাড়তে থাকা কর হারের কারণে ভবিষ্যতে আমাদের বিপুল পরিমাণ কর পরিশোধ করতে হবে।"

রিভলবিং ফান্ড থেকে কোনো অর্থ ব্যয়ের পর তার বিনিময়ে পাওয়া অর্থ আবার একই কাজে ব্যবহার করা যায়। এই তহবিলের ক্ষেত্রে অর্থবছর বিবেচ্য হয় না।

'ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে' প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাতারা গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে সংশিষ্ট গ্রামগুলোতে গেছেন বেশ কয়েকবার। জোবরা গ্রামে তাদের সঙ্গে দেখা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রথম ঋণ নেওয়া সুফিয়ার মেয়ের সঙ্গে। যশোরের 'হিলারি পল্লীতে' তাদের দেখা হয় গরিব মানুষদের সঙ্গে, ক্ষুদ্র ঋণের কারণে তাদের ঋণের বোঝাই বেড়েছে বলে দেখতে পান নির্মতারা। ওই পল্লীতে গিয়ে ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি তার সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন সাবেক মার্কিন ফার্স্টলেডি ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।

ঋণগ্রহীতাদের প্রায় সবার মুখেই একই কথা শুনেছেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতারা। তারা জানান, প্রত্যেকেই একাধিক ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। সেই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে সবারই প্রাণান্ত অবস্থা। কেউ বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে ঋণ শোধের জন্য। আবার ঋণের সাপ্তাহিক কিস্তি শোধ করতে না পারায় কারো ঘরের টিন খুলে নিয়ে গেছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান।

প্রামাণ্যচিত্রটিতে শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সমাজ বিজ্ঞানী ও গবেষকের সাক্ষাৎকার রয়েছে। এরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুদ্র ঋণের 'বৃহৎ সাফল্য' নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছেন। ডেভিড রডম্যান, জোনাথন মারডক, টমাস ডিক্টার এবং মিলফোর্ড বেটম্যানের মতো সমাজবিজ্ঞানীদের সবার একটাই কথা, ক্ষুদ্র ঋণ চালু হওয়ার পরবর্তী ৩৫ বছরে এখনো এমন কোনো প্রমাণ নেই, যাতে মনে হতে পারে ক্ষুদ্র ঋণ গরিব মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে পারে।

ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক লেখা 'বিল্ডিং সোস্যাল বিজনেস' গ্রন্থে তিনি লিখেছেন, 'সমাজকল্যাণের জন্য ব্যবসা। নিজের স্বার্থের জন্য ব্যবসা নয়। পরের স্বার্থের জন্য ব্যবসা। এটা সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবসা। এখানে নিজের কোনো মুনাফা নেই। কাজেই আমি এই নতুন ধরনের ব্যবসার কথা বলতে শুরু করলাম। যেটা ব্যক্তিগত মুনাফাবিবর্জিত। অর্থাৎ শেয়ারহোল্ডারদের মুনাফা নেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। এটা ব্যক্তিগত মুনাফাবিবর্জিত ব্যবসা। কম্পানি মুনাফা করবে, তবে শেয়ারহোল্ডাররা এই মুনাফা নেবে না।'

এছাড়া, ২০০৯ সালের জানুয়ারী মাসে দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সন্মেলনে তিনি সামাজিক ব্যাবসার ৭ দফা নীতিমালা ঘোষণা করেছেন। এগুলো হলো:
১) ব্যাবসার উদ্দ্যেশ্য হবে দারিদ্র দূরীকরণ কিংবা এক বা একাধিক সামাজিক সমস্যা দূর করা যেগুলো জনগণ এবং সমাজকে হুমকীর মুখে ফেলে দেয়, এর উদ্দ্যেশ্য কখনই প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন বা মুনাফা সর্বোচ্চকরণ নয়।
২) এ ব্যাবসা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে।
৩) বিনিয়োগকারীগণ তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফিরে পেলেও এর বাইরে কোন ডিভিডেন্ট পাবেন না।
৪) বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দিয়ে দেয়ার পর লাভের টাকার পুরোটাই কোম্পানির বিকাশ এবং উন্নয়নের কাজ ব্যায় করা হবে।
৫) এ ব্যাবসা পরিবেশ সচেতন হবে।
৬) শ্রমিকদের ভালো কাজের পরিবেশ ও মার্কেট ওয়েজ বা বাজারে প্রচলিত মজুরী প্রদান করা হবে।
৭) এ ব্যাবসা আনন্দের সাথে করতে হবে।

নিঃসন্দেহে চমৎকার চিন্তা। কিন্তু ৩ নম্বর পয়েন্টে তিনি বলেছেন, “বিনিয়োগকারীগণ তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফিরে পেলেও এর বাইরে কোন ডিভিডেন্ট পাবেন না”, সেক্ষেত্রে ব্যক্তি পুঁজিমালিক কেন এ ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে আসবেন, এ প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। ড. ইউনূস এর উত্তরে বলেছেন, “পুঁজিবাদ একটি অর্ধবিকশিত কাঠামো। মানুষ সম্পর্কে পুঁজিবাদের ধারণা সংকীর্ণ, পুঁজিবাদ মনে করে মানুষ স্রেফ একমাত্রিক একটা অস্তিত্ব যার সমস্ত ভাবনা কেবল মুনাফা সর্বোচ্চ করণের দিকে। পুঁজিবাদের কাঠামোকে সর্ম্পূর্ণতা দেয়ার জন্য আমাদেরকে আরেক ধরণের ব্যাবসা চালু করতে হবে- যা মানুষের বহুমাত্রিকতাকে স্বীকৃতি দেবে। আমাদের প্রচলিত ব্যবসাগুলোকে যদি মুনাফা সর্বোচ্চকরণের ব্যবসা বলি, তাহলে নতুন ধরণের ব্যবসাটিকে বলতে পারি সামাজিক ব্যবসা। উদ্যোক্তারা সংকীর্ণ ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে নয়, সুনির্দিষ্ট সামাজিক লক্ষ্য পূরণের জন্য সামাজিক ব্যবসা স্থাপন করবেন।”

ড. ইউনুসের মতে, সামাজিক ব্যবসা দু’ধরণের হতে পারে,
১। এ ধরণের ব্যবসা কেবল সামাজিক উদ্দেশ্য মাথায় রেখে ব্যবসা করবে। যেমন: এমন পণ্য উৎপাদন করবে যা দরিদ্রের উপকারে লাগবে।
২।এ ধরণের ব্যবসা যে কোন ধরণের পণ্য উৎপাদন করবে কিন্তু এর মালিকানা থাকবে দরিদ্রের হাতে, যারা প্রত্যক্ষ ডিভিডেন্ট থেকে কিংবা পরোক্ষ সুবিধা নিয়ে উপকৃত হতে পারবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি তার বহুল আকাঙ্খিত বাংলাদেশের জন্য একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কথা বলেছেন, যার মালিকানা থাকতে পারে দেশের দরিদ্র নারীদের।

জনাব ইউনূস সামাজিক ব্যবসার নামে কাগজে কলমে এরকম একটা অপসনের কথা বললেও, বাস্তবে তিনি যতগুলো সামাজিক ব্যবসার উদ্যোগ নিয়েছেন তার একটিও এধরণের মালিকানার ধারে কাছেও নেই। উল্টো গ্রামীণ এক্ষেত্রে কখনও মালিকানার অংশীদারিত্বে মেতেছে ফরসী বহুজাতিকের সাথে, কখনও বা জার্মান বহুজাতিকের সাথে। তিনি তো অনেকদিন ধরেই বলছেন যে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকৃত মালিক নাকি তার ঋণ গ্রহীতারাই। এটা অনেক পুরাতন একটা কৌশল, কাগজে কলমে এসব লেখা থাকলেও বাস্তবে এর পুঁজি ও মুনাফার সমস্ত নিয়ন্ত্রণই থাকে পরিচালনা বোর্ড, বিশেষ করে বোর্ড অব ডিরেক্টরের কাছে। এখানে উল্লেখ্য যে, গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টর হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বেআইনি ভাবে ড. ইউনূস তার চেয়ার ধরে রেখেছেন।

বাস্তবে কখনও যদি সত্যি সত্যি তিনি এমন একটি কোম্পানি খুলেও ফেলেন যার মালিক এমনকি তার বোর্ড অব ডিরেক্টর পর্যন্ত দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ এমনকি সেক্ষেত্রেও দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব নয়। কারণ গোটা সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও তার সমস্ত উৎপাদন ও মালিকানা সম্পর্কের পরিবর্তন না ঘটিয়ে স্রেফ একটি দুটি কোম্পানির মালিকানা কিছু দরিদ্র মানুষের হাতে তুলে দিলে হয়তো নতুন কিছু ক্ষুদ্র পুঁজিপতি সৃষ্টিই করা যাবে যারা আবার সেই কোম্পানির মুনাফা ও পুঁজির বিকাশের জন্য সমাজের অন্যান্যদের শোষণ করে নতুন সর্বহারা শ্রমজীবীর সৃষ্টি করবে এবং এর মাধ্যমে দারিদ্রকে জারি রাখবে। সামাজিক ব্যাবসা যেহেতু মুনাফা করেই টিকে থাকবে, কাজেই এর মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব নয়।

ড. ইউনূস মুনাফা সর্বোচ্চ না করার চেষ্টার কথা বলছেন ঠিকই কিন্তু সামাজিক ব্যাবসার ৭ নীতিমালার ৬ নং নীতিমালায় বলেই দিয়েছেন শ্রমিকদের ভালো কাজের পরিবেশ প্রদান করা হলেও তাদের মজুরী হবে বাজারে প্রচলিত মজুরী অনুযায়ী। এ অর্থেও তার সামাজিক ব্যবসা আর দশটা কোম্পানি থেকে আলাদা কিছু নয়।

ড. ইউনূসের (গ্রামীন-ডানোন প্রজেক্ট, গ্রামীন-ভিয়োলিয়া ওয়াটার লিমিটেড, গ্রামীণ-ইন্টেল প্রজেক্ট) প্রজেক্টগুলো নিয়ে একটু ভাবলেই পরিষ্কারভাবে প্রতিয়মান হয় যে, যেদেশে ৪০ ভাগের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে, দৈনিক আয় যেখানে মাথাপিছু ১ ডলার বা ৭০ টাকার নীচে, তাদের পক্ষে ১২ টাকা দইয়ের পেছনে খরচ করা, টাকা দিয়ে পানি কিনে খাওয়া, বা ঐ অনাহারে-অর্ধাহারে কাটানো মানুষগুলোর কাছে কৃত্রিম পুষ্টি দেওয়ার প্রজেক্ট কতটা বাস্তব সম্মত আর এতে কতটুকুই বা সামাজিক ব্যবসা নিহিত।

আপাত দৃষ্টিতে এগুলোর আকার-আকৃতি ও ঘোষিত লক্ষের মধ্যে কম-বেশি ভিন্নতা দেখা গেলেও, মূল উদ্দেশ্যের জায়গাটি কিন্তু এক; মুনাফার গায়ে সামাজিক উদ্দেশ্যের তকমা এঁটে বর্তমান অর্থ ব্যবস্থার ভাবমুর্তির সংকটটিকে সামাল দেয়া এবং সেই সাথে বিনিয়োগের নতুন নতুন চ্যানেল উন্মুক্ত করা। ড. ইউনূসের সফলতা হলো তাদের সেই আকুতির একটা গ্লোবাল ভাষা দেয়া এবং সেই সাথে হাতে-কলমেও কাজ করে দেখানো। ফলে গ্রামীন-ডানোন কেবল গ্রামীন কিংবা ডানোনের ব্র্যান্ডিং নয়, সেই সাথে গোটা পুঁজিবাদী ব্যবস্থারই এক নয়া ব্র্যান্ডিং।

তাই ড.ইউনূস টম হাইনম্যানকে দোষারোপ করতেই পারেন ‘ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে’ (Caught in Miicro Debt) নামে প্রামাণ্য চলচ্চত্রটি নির্মাণের মাধ্যমে তার সুখের ঘরে দুঃখের আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য।

(বি.দ্র. লেখার কিছু তথ্য দিনমজুর-এর ব্লগ থেকে উৎসারিত)

মূল লেখা
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×