- আসসালামু আলাইকুম।
- ওয়াআলাইকুম সালাম।
সালামের উত্তর দিলাম বটে। তবে কাঁচা ঘুমভাঙ্গা কণ্ঠে ফোনের অপর প্রান্তের লোক মনে হয় ঘ্যাড়ঘ্যাড়ে একটা আওয়াজ ছাড়া কিছুই পেলনা।
- আমি জ্বীনের বাচ্চা।
ঘুমের এগারোটা বেজে গেছে। আধা-খেঁচড়া চিন্তা ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে মাথায়।
লোকটা জ্বীনের বাচ্চা বলে পরিচয় দিচ্ছে কেন? আমরা কি ফোনে কখনও মানুষের বাচ্চা বলে পরিচয় দেই? নাকি লোকটা জ্বীন নামক কোন মনুষ্য সন্তানের বাচ্চা? নাকি এই জ্বীন সেই জ্বীন জাতি?
চিন্তায় চিন্তায় এগারোটা থেকে ঘুমের বারোটা বেজে গেল।
- ভাইজান কি মানুষ জ্বীনের বাচ্চা নাকি জ্বীন জ্বীনের বাচ্চা?
- মানে? আমি জ্বীনের বাদশা ইয়াকুব।
নামটা পরিস্কার শোনা গেলনা। বাদশা মহাশয় বেশ টেনে তার নামটা উচ্চারণ করলেন।
এবারে মনের মাঝে আরো বেশি প্রশ্নের উদয়।
গত পরশুই এক বন্ধুর সাথে জ্বীনের থাকা না থাকা নিয়ে একপ্রস্থ তর্ক হয়ে গেছে। যুক্তির স্বপক্ষে সে সরাসরি জ্বীন আমদানি করলো কিনা কে জানে।
- ওস্তাদ, হঠাৎ ঘুম ভাঙালেন যে? কিছু বলবেন?
- ঘুম? এত বেলা করে ঘুম?
বুঝলাম ওস্তাদের হোমওয়ার্কে গলদ আছে। সারারাত অফিস করে আমি যে দিনে ঘুমাই তা জনাবের অজানা। মানে, উনি আন্দাজে ঢিল মেরে শিকারের খোঁজ করছেন।
- বাদ দেন ওস্তাদ। তা আপনি কী আমারে কিছু দেবেন না কিছু নেবেন?
-বুরবাক। আমি জ্বীনের বাদশা। আমি দেই। টাকা চাস্? সোনা?
- ভাইজান, এত ঝামেলায় যেতে পারবোনা...
- ঝামেলা মানে?
- ঝামেলা না? আপনার সোনা মানে সোনা-দানা, টাকাপয়সা নিতে চাইলে আপনারে টাকা ফ্লেক্সি করতে হবে নাহলে বিকাশ, না হলে পুরোনো সোনার গয়না নিয়ে যেতে হবে কোন পুরোনো বাসায়। এত ঝক্কির দরকার নাই ওস্তাদ। আপনি বরং এক ড্রাম পানির ব্যবস্থা করেন।
- মা... মানে?
- মানে আমার বাসায় পানি নাই ম্যালা দিন। ব্যাপক কষ্ট। আপনি আমার রুমে ১৫০ লিটারের যে ড্রাম আছে সেটা পানিভর্তি করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন, তাহলেই হবে। ওয়াসার এক গাড়ি পানির হিসাবে আপনাকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বিকাশ করতে পারি। চলবে?
ওপাশে কোন সাড়া-শব্দ নেই। ওস্তাদ লাইনটি কেটে দিয়েছেন। বুঝলাম পানির ব্যাপারে ওয়াসার মত জ্বীনের বাদশাও অপারগ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৫১