অরণ্য জঙ্গলার মাঝে আমার এইখানে ঘর,ভাইয়ো নাই বান্ধবও নাই মোর, কে লইবো খবর হায়রে......তোর লাইগা রে আমার তনু জড়জড় মনে লয় ছাড়িয়ারে যাইতাম,থুইয়া বাড়ি ঘর,বন্ধু তোর লাইগা রে........... ছবির এইটা আমি নিজে, আহা ওইখানে সত্যি সত্যি যদি একটা ঘর হত আমার।।
দুই তিন দিন আগে এক সকালে অতিরিক্ত আনমনে বেশ হাল্কা মুডে থাকতে থাকতে অধিনস্ত একজনকে বললাম গতকাল যে পেপার গুলো দিয়েছি এক্ষুনি নিয়ে আসুন। উনি আকাশ থেকে পড়ছে এমন চেহারা করে চোখ বড় বড় করে অতিরিক্ত নিরীহ ফেইস করে বলে কি পেপার ম্যাম!!!!!!!!
কি পেপার ম্যাম!!!!
শুনে আমার চারপাশে আগুন ধাউ ধাউ করে জ্বলতে জ্বলতে অনুধাবন করলাম এর মত অলস আর কাজে ফাঁকিবাজ দ্বিতীয়টি নাই! এরে ক্যামনে কীভাবে বের করে দেয়া যায় তার একঝলক কু চিন্তা মাথায় ঘোরাতে ঘোরাতে বললাম কদিন হইছে চাকরী করেন(জবাব শুনলাম না, শুনতে চাই ও নাই) আমি পাঁচ মিনিটের ভেতর আপনাদের ব্যাক অফিস ঘুরে আসতেছি, এসে যেন দেখি পেপার হাতে) তারপর এক মুহূর্ত তার দিকে না তাকিয়ে তাদের অফিসে গিয়ে কাজ শেষ করে তিন মিনিটের ভেতর ফিরে আসতে আসতে উনি ছুটতে ছুটতে মাঝপথে আমাকে থামিয়ে দিয়ে পেপার কাঁপতে কাঁপতে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলল আমার সেকশনে গতকাল কোন অডিট হয়নি ম্যাম, এটা অন্য সেকশনের। নিজের অমনোযোগ এর জন্য সরি ধরনের হাসি দিয়া ফিরে আসতে আসতে ভাবলাম এইটা কি বেশিরভাগ মানুষের জন্মগত স্বভাব যে নিজের ভুলের দায় অন্যজনের ঘাড়ে ফেলে দিয়ে নিজেকে নিষ্কলঙ্ক নির্ভুল ভাবা!!!
আমার বড় ভাগ্নিটা খুব এক্সাইটেড হয়ে গতকাল এসে বলে যে সে মেঘডুবি নামক একটি স্থানে আমাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে চায় , সেখানে অনেক অনেক বিশাল সাইজের শাপলা ফুটে আছে এবং অত্যন্ত সুন্দর সেই স্থান। যেহেতু গতকাল আমার ছুটির দিন ছিল আমি তাকে ক্যামেরার ব্যাটারি চার্জ দিতে দিতে বললাম চল। সে খুশি এবং কিছুটা চিন্তিত হল। চিন্তিত হবার কারন গিয়ে দেখলাম সেখানে কোন শাপলা ফুল নেই,ভয় ভয় মুখ করে আমায় জানানো হল শাপলা ফুল আগে অনেক ছিল এখন কেন জানি নাই। প্রথমে মন চাইলো তাকে ধাক্কা দিয়ে ডোবার পানিতে ফেলে পেছনে না তাকিয়ে ফেরত চলে আসি।
এরপর ধীরে ধীরে আমার ভালো ব্রেন মনে করিয়ে দিলো যে ভাগ্নি আমাকে ভালোবেসে ভালোর জন্যই ঘুরাতে নিয়ে আসছে, আর শাপলা ফুল নেই তো কি হয়েছে জায়গাটা তো আসলেই সুন্দর।
যাই হোক এই ধরনের খিট খিটে স্বভাব থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য সকলের এরকম প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে রিফ্রেস হওয়া আবশ্যক।
ঢাকা বাইপাসের সড়ক ধরে এগিয়ে গাজীপুরের পুবাইলে মেঘডুবি অবস্থিত।। নামের মতই জায়গাটা অনেক সুন্দর, সবুজ আর নয়নাভিরাম, গাড়ি নিয়ে, বাইক নিয়ে অনেকেই সেখানে বেড়াতে যায় দেখলাম। তারপর ও অনেকটাই ফাঁকা পড়ে থাকে।
সবুজ আর সতেজতা
রহস্যময় বনাঞ্চল।।
বিস্তীর্ণ বিল।
দুই বন্ধু বেশ গল্পে মশগুল।
সতেজ পাতার ডগায় তখনো বৃষ্টির জল টলমল করছে।
সবুজ পেয়ারা
দিগন্ত জুড়ে ভালোলাগা
সবুজ সব সবুজ
রাস্তাগুলো এরকম খালিই থাকে
আমার সেই ভাগ্নির ডোবার পানিতে প্রতিকৃতি ।।
সবুজের মাঝে পাখিটা একটা বিন্দু যেন
আমাদের পিচ্চু ভাগ্নিটা দেখতে দেখতে বড় হয়ে যাচ্ছে।
সবুজ কুড়ি সবুজ কুড়ি
এই যে নদী , নদীর জোয়ার
নৌকা সাড়ে সাড়ে
একলা বসে আপন মনে
বসে নদীর দারে
এই ছবিটি চেনা।
----স্বদেশ. আহসান হাবীব
মেঘডুবি নাম শোনার পর থেকে মনে হচ্ছিলো এই নামে কি কোন বই কিংবা কবিতা আছে কিনা, লিখতে লিখতে মাথায় এলো মেঘ ডুবি না মেঘদূত নামে মহাকবি কালিদাস রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৮