-অভিযুক্ত চার নারী মায়া সান্তোস দিগুইতো, হেলেন ওয়াই ডি, স্লুইড বাতিস্তা ও গ্যামেজ শালিকা পেরেরা
আসলেই কি তারা অভিযুক্ত বা দোষী ?
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় প্রাথমিক অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়া চারজনই নারী। ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় চুরি করে অর্থ নেওয়ার ক্ষেত্রে মূলত তারাই নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই চারজন হলেন— হেলেন ওয়াই ডি, মায়া সান্তোস দিগুইতো, স্লুইড বাতিস্তা ও গ্যামেজ শালিকা পেরেরা। তবে শীর্ষ এই নারী কর্মকর্তাদে পেছনে মূল কারিগর হিসেবে কাজ করেছেন পুরুষ সহযোগীরা। ফিলিপাইনের ঘটনায় জড়িত চার চীনা এবং শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে জাপানের এক নাগরিকের নাম এসেছে। তারাই দীর্ঘ এক বছর ধরে তত্পরতা চালিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভারে ঢুকে হ্যাকিংয়ের কাজ করেছেন। হেলেন ওয়াই ডি ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) চেয়ারপারসন। প্রতিষ্ঠানটির জুপিটার শাখার ব্যবস্থাপক হলেন মায়া সান্তোস দিগুইতো। ফিলিপাইন থেকে হংকংয়ে অর্থ পাচারে সহযোগিতা করা রেমিট্যান্স লেনদেন কোম্পানি ফিলরিমের প্রেসিডেন্ট স্লুইড বাতিস্তা। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার একটি ভুয়া এনজিও শালিকা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক গ্যামেজ শালিকা পেরেরা। আজকের একটি অনলাইন থেকে পাওয়া এই খবর।
মায়া সান্তোস দিগুইতো : ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দেন ২০১৪ সালে।
এর আগে তিনি দেশটির ইস্ট ওয়েস্ট ব্যাংকে চাকরি করতেন। জুপিটার স্ট্রিট শাখায় যোগ দেওয়ার পরই তিনি অর্থ হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী গত বছর মার্চে চারজন ব্যক্তিকে দিয়ে চারটি অ্যাকাউন্ট খোলেন ওই শাখায়। চার অ্যাকাউন্টধারী নিজেদের ঠিকানা ব্যবহার করেন মাকাতি সিটির একটি এলাকা। তথ্যপ্রমাণ হিসেবে নিজেদের ড্রাইভার লাইসেন্সের কপিও জমা দেন। চার হ্যাকার অ্যাকাউন্টধারী হলো মাইকেল ফ্রান্সিসকো ক্রুজ, জেসি ক্রিস্টোফার লাগোরাস, আলফ্রেড ভারগারা এবং এনরিকো তায়েদ্রো ভাসকুয়েজ। এরপর তাদের সঙ্গে চীনের নাগরিক ফিলিপাইনের ক্যাসিনো ইস্টার্ন হাওয়াই লেইসার কোম্পানির মালিক কিম ওং-কে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের জন্য কাজ করেন। দীর্ঘ প্রায় এক বছরের তত্পরতায় তারা সফল হন। পরে কিম ওংয়ের নামেও একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়।
তদন্তের পর দেখা যায়, পাঁচটি অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই গ্রাহকের নো ইউর কাস্টমার (কেওয়াইসি) তথ্য পূরণ করা হয়নি।
হেলেন ওয়াই ডি : ফিলিপাইনে ব্যাংকিং খাতের প্রভাবশালী এই নারী ব্যবসায়ী আরসিবিসির চেয়ারপারসন। তিনি ব্যাংকিং প্রযুক্তি দক্ষ মায়া সান্তোস দিগুইতোকে ইস্ট ওয়েস্ট ব্যাংক থেকে তার ব্যাংকে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ আরসিবির ওই শাখায় জমা হওয়ার পর তিনি ব্যাংক চেয়ারপারসনকে জানান। দিগুইতোকে দ্রুত এই অর্থ উত্তোলন করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশেই পুরো টাকা দুটি ক্যাসিনো ও ফিলরিমকে দিয়ে দেওয়া হয়। দেশটির সিনেট কমিটি তাকেও অভিযুক্ত করে নজরদারিতে রেখেছে।
স্লুইড বাতিস্তা : ফিলিপাইনের রেমিট্যান্স লেনদেন কোম্পানি ফিলরিমের মাধ্যমে অর্থ পাচার হয় হংকংয়ে। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট স্লুইড বাতিস্তা কোনো প্রশ্ন ও তথ্য প্রমাণ না রেখে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেন। ঘটনায় নিজের সম্পৃক্তার কথা অস্বীকার করে সিনেট কমিটির সামনে বক্তব্য দিলেও অপরিচিত ব্যক্তিকে কীভাবে তিনি অর্থ দিলেন তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি। বাতিস্তা গত ১৫ মার্চ সিনেট কমিটির শুনানিতে হাজির হয়ে বক্তব্য দেন। ঘটনার সঙ্গে ফিলরিমের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় তাদের সব কাজগপত্র চেয়ে পাঠায় সিনেট। একই সঙ্গে আপাতত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এখনো এই প্রতিষ্ঠানের কাছে ১৭ মিলিয়ন ডলার রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও তা অস্বীকার করেছেন বাতিস্তা। ফিলিপাইনের প্রশাসন এই অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনিও এখন পুলিশি নজরদারিতে।
গ্যামেজ শালিকা পেরেরা : শ্রীলঙ্কায় শালিকা ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) নির্বাহী পরিচালক। এনজিও হিসেবে শ্রীলঙ্কায় প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন না থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। জার্মানভিত্তিক ডয়েচে ব্যাংকের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার প্যান এশিয়া ব্যাংকে শালিকা ফাউন্ডেশনের অ্যাকাউন্টে জমা হয় এই অর্থ। তবে অর্থ উত্তোলনের জন্য তাদের জমা দেওয়া তথ্যে ইংরেজি ফাউন্ডেশন বানান ভুল থাকায় ব্যাংক তা আটকে দেয়। ঘটনার পরপরই তিনিসহ প্রতিষ্ঠানের ছয় কর্মকর্তা আত্মগোপন করেন। দেশটির আদালত তাদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। দেশটির পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে খুঁজছে।
কিন্তু আমরা এই ঘটনা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নই। কারন আমরা আামাদের অন্য ছোট ছোট সমস্যাকে এর চেয়ে বড় করে তুলেছি। আমরা আসলে অনেক কম বুঝি তা না হলে এরকম হবে কেন? আমরা প্রায়োরিটি বুঝিনা যদি বুঝতাম তাহলে আমাদের দেশে এতরকমক অনিয়ম নিয়মিত ঘটত না। আমাদের ইয়ং জেনারেশন এর জন্য সবচাইতে বেশি দায়ী। কারন আমরা এখন দেশকে ভালবাসিনা। আমরা শুধু আবেগে চলি!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৪৫