জীবন এমন একটা চক্র যাকে একটা নির্দিষ্ট স্থানে থামিয়ে রাখা যায় না। সে এগিয়ে যাবেই আপনার অজান্তেই। কিছু মূহুর্তে বেঁচে থাকতে বিরক্ত লাগে আবার কিছু মূহুর্ত যেনো স্বর্গের ছোঁয়া। বিষাদ আর বিষাদময় জীবনে কোনকিছুই আপনার জন্য প্রস্তুত করা নেই সবকিছু আপনার কষ্ট করেই অর্জন করতে হয়।
.
আপনার জীবনের কষ্টগুলো আপনি ছাড়া আর কেউই বুঝবে না, খুঁজেও দেখবে না। খারাপ সময়ে হৃদয়ের অনুভূতির টানে কোন কাজ করলে তাতে আরো বিপদ বাড়ে, কমে না। “ আবেগে জীবন চলে না বাস্তবতার কাছে সব হেরে যায় ” কথাটার তাৎপর্য অনেক বেশি। আপনি আপনার জায়গা থেকে নিজেকে ম্যাচুরট ভাবলেও অন্যকেউ হয়তো আপনাকে বাচ্চাই ভাববে। আর বাচ্চা ভাবার কারণ একটাই যে, আপনি নিজের হৃদয়ের কথা শুনে কাজটা না ভেবেই করেছেন যদি মস্তিষ্কের প্রতিটা নিউরনকে কাজে লাগিয়ে ভাবাতেন কাজটা আসলেই কতটা মঙ্গলজনক হবে তাহলে হয়তো আপনি সমাজের কাছে কম বয়স্ক হলেও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পূর্ণ একজন মানুষ হতে পারতেন। তবে কি বুদ্ধি জ্ঞান সম্পূর্ণ মানুষ কখনো ভুল করে না? জ্বী অবশ্যই করে আমার নিজের কাছে মনে হয় তারা আরো বেশি ভুল করে। অন্যকে যারা বাঁচার স্বপ্ন দেখায় খোঁজ নিয়ে দেখেন তারাই নিজের জীবনের প্রতি অতিষ্ঠ।
.
ডেল কার্নেগি, ভার্জিনিয়া উলফ এদের নাম অনেকেই অনেক শুনে থাকবেন এদের বই পড়ে অনেকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছে কিন্তু এরা কেন আত্মহত্যা করলো? সত্যি বলতে যারা একবার জীবনের কোন স্থানে, কোন কাজে বা কোন বিশেষ মূহুর্তে জীবনের হেরে যায় তাদের মানসিক অবস্থা হাজার শব্দ দিয়েও প্রকাশ করা যায় না তাদের হিতাহিত কোন জ্ঞান থাকে না ভাববার জন্য তখন তাদের কাছে মৃত্যুটাই মনে হয় এসব যন্ত্রণা থেকে রক্ষার একমাত্র চাবিকাঠি।
.
কিন্তু মৃত্যুই কি সব যন্ত্রণার একমাত্র মুক্তি? উত্তরে আমি বলবো না কখনোই না। যখন মানুষ বাঁচার ইচ্ছা হারায় তখন তাকে যাই বলেন না কেন তার কাছে সবকিছু বিকৃত ও বেহুদা কথা মনে হবে কিন্তু তাকে ব্যস্ত রাখতে পারলে যেকোন কাজে, তাকে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপলব্ধি করাতে পারলে, তার জীবন এখানেই শেষ না সে চাইলে আবার সবকিছু আগের মতো করতে পারবে তা বোঝাতে পারলে সে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠছে। সুস্থ হয়ে উঠবে বলছি কারণ মৃত্যুমুখী ব্যক্তিরা একপ্রকার অসুস্থ।
.
তাই মন দিয়ে না ভেবে মস্তিষ্কের নিউরনকে কাজে লাগান হোক সেটা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, হোক পড়াশোনার ক্ষেত্রে হোক সেটা কারো সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। অধিকাংশ সম্পর্ক অপূর্ণ থেকে যায় মন দিয়ে ভাবা বোকামির কারণে তাই। একবার ভাবুন আপনার জীবনে এখনো কত বসন্ত আসা বাকি! হয়তো সৃষ্টিকর্তা আপনার প্রিয় মানুষটাকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দেবে কিন্তু তখন যদি আপনি না থাকেন তাহলে কে তার খেয়াল রাখবে? আরে চিন্তাভাবনা করে ইবাদত করলে তো সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যও পাওয়া যায় তাহলে আপনি চিন্তাভাবনা করে কাজ করলে কেন প্রিয়মানুষটাকে জীবন সঙ্গি করতে পারবেন না? কেন জীবনের কাছে হেরে আত্মহত্যা করবেন? আপনার যাওয়ার সময় হলে সৃষ্টিকর্তা নিজেই নিয়ে যাবে আপনার কোন কষ্ট করতে হবে না।
.
জীবন অমূল্য তাই “ ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না ” অবশ্য এক্ষেত্রে পরে আর ভাবার কোন সুযোগ নেই!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৯:১৭