আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য বেশ ভালো ভাবে মাঠে নেমেছে সব দলের নেতাকর্মীরা। এলাকা ভিত্তিক নেতাকর্মীরা সব সময়ই চায় বড় নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। আর নির্বাচনই সেটা প্রকাশের আদর্শ সময়। এতে এলাকা ভিত্তিক নেতাকর্মীরা পেতে পারে পদোন্নতি ( প্রমোশন )। এজন্য তাদের দেখাতে হয় তাদের ক্ষমতা। এটা কোন শারীরিক ক্ষমতা প্রকাশ নয় এটা হলো তাদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ও মানুষকে বোঝানোর ক্ষমতা। যেটা হলো তার এলাকার মানুষ তাকে কতটা মানে, সেই এলাকায় তার প্রভাব কতটুকু ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে বলা দরকার যে এমন সময় অধিকাংশ এলাকা ভিত্তিক নেতাকর্মীরাই করেন প্রতারণা। যেটা রাজনীতির ভিত্তিও বলা যায়। রাজনীতিতে অধিকাংশ এলাকা ভিত্তিক নেতাকর্মীরাই তার এলাকার মানুষের সাথে করে প্রতারণা। মানুষকে বোকা বানায়। দেয় মিথ্যা আশা। শুধুমাত্র বড় নেতাকর্মীদের চোখে পড়ার জন্য।
নির্বাচনের সময় দলগুলো আন্দোলন, মিছিল, বৈঠক করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্বাভাবিক হলো এটা যে কারা করবে এইসব??? নেতারা নাকি সদ্য ভোটার হওয়া ভোটাররা নাকি স্কুল/কলেজের শিক্ষার্থীরা??? কোন দলের মিটিং, মিছিল ও আন্দোলন হলে যেকোন এলাকার ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল ইত্যাদি আরো অনেক দলের কর্মীরা তাদের সেইজন প্রোগ্রামে নিজে উপস্থিত থাকবে এবং সাথে থাকবে আরো অনেক দলীয় লোকজন। কিন্তু তারা সবাই ভোটার কিংবা ছাত্রদল, ছাত্রলীগের সদস্য তো??? নাকি ভাড়া করা লোকজন??? উত্তর প্লিজ!
এই যে এখন যে সময়টা অতিবাহিত হচ্ছে সেটা খুবই মারাত্নক সময়। নির্বাচনের রয়েছে যেমন আমেজ তেমন ভয় সাধারণ মানুষের মনে। যেখানে আগে রাত ১২ টার আগে এলাকার চায়ের দোকান বন্ধ হতো না এখন সাড়ে ১০ বা ১১ নাগাদ তা বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় দেখা যায় কিছু মানুষের যারা দল হয়ে কথা বলছে। আর লোকজন এমন সময় খুব ইজিলি বুঝতে পারে এরা অবশ্যই কোন দলের। দলের না হলেও এখন দলের। কারণ গাঁজা খোররা ১০০ টাকার বিনিময়ে অনেক বড় একটা খারাপ কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করে তাহলে খুব সহজেই তারা একটা দলের জন্য কাজ করতে কেনোই বা সংকোচবোধ করবে।
সেদিন কিছু স্কুলে পড়ুয়া ছেলেকে দেখলাম একজোট হয়ে কোথায় জেনো যাচ্ছে। সাথে দেখলাম একটা দলের নেতাও আছে কোন বড় নেতা না কিন্তু ছাত্রলীগ, ছাত্রদল বা এইরকম কোন দলেরই। আমার পরিচিত একটা ছেলে আমার সামনে এসে বললো, ' ভাইয়া আজকে মিটিং আছে মিটিং-এ যাচ্ছি কাউকে কিছু বইলেন না '। আমি উত্তর দিলাম না মাথা নেড়ে বললাম ঠিক আছে। অবাক ছিলাম যে কিভাবে একটা কিশোর রাজনীতিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ভোটার হয়নি কিন্তু তাতেই এই দশা তাহলে ভোটার হলে কি করবে? এরাই আবার নাকি স্বপ্নের সোনার বাংলার কারিগর।
ভাবুনতো একবার যদি এই ছেলেটা এইরকম একটা মিটিং-এ গিয়ে কোন বিপদে পড়ে তাহলে কে ওর সাহায্য করবে? প্রথম ও মেইন সমস্যাই হবে ছেলেটা এখনো ছাত্র ভোটার হয়নি আবার আসছে তো আসছে তাও স্কুল বাং দিয়ে। কোন সমস্যা হলে তখন কী এই দল ওকে এসে ছাড়াবে নাকি বাবা-মা ওকে ছাড়াবে? এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে একটুও চিন্তাবোদ নেই, নেই কিঞ্চিৎ পরিমাণ ম্যাচুরিটি। খুব সহজেই নিজেকে বিলিয়ে দেয় অন্যের মাঝে ভালো আর খারাপ দিকের পার্থক্য বের করতে পারে না। এখানে কী শুধু ফ্যামিলির দোষ নাকি স্কুলেরও দোষ আছে? কারণ এমন অনেক স্কুল আছে যেখানে টানা অনেক দিন স্কুল কামাই দিলেও স্কুলের পক্ষ থেকে কোন খোঁজ নেওয়া ব্যবস্থা নেই। স্যেম!
এখন যারা পত্রিকা পড়েন তাদের নজরে এই জিনিসটা অবশ্যই আসছে হয়তো। প্রত্যেক দিনই এখন পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে গুম, খুন আর ধর্ষণের ঘটনা। এমন কোন সিংগাল দিন নাই এখন যেদিন এইরকম ঘটনা পত্রিকা বা খবরে দেখা যায় না। কেন বাড়ছে এখন এইরকম ঘটনা? এটা কী কোন প্লান করা জিনিস নাকি জনসংখ্যা কমানোর নতুন পন্থা বের করেছে বাংলাদেশ? এই হারে মৃত্যু হলে সত্যি সত্যি জনসংখ্যা কমে যাবে।
নির্বাচন কমিশনের উচিত এইসব বিষয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক জিনিসগুলো নজরে আনা এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর কোন শাস্তির ব্যবস্থা করা। এর ফলে কিশোররা হয়ে যাচ্ছে বিপদগামী এবং পা যাচ্ছে সন্ত্রাসীদের সাথে। আর এখনোই বা কেনো হঠাৎ এতো পরিমাণে মৃত্যুর হার বাড়বে এটা কী উন্নয়নশীল দেশের কোন প্রতীক?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৫