সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশীরা দিনে দিনে তাদের অবস্থান সুসংহত করছে। বিচ্ছিন্নতায় অনেকটা সময় পেরিয়ে এখন বেশ কয়েকটি সংঘঠন সে অবস্থানকে সুদৃঢ় করার প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। কয়েকটি ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরের রেজিষ্টার্ড সংঘঠনের খাতায় নাম লিখিয়েছে। তার মধ্যে একটি ডিপ্লোমা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এসোসিয়েশন বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর (ডিএমইএবিএস)।
বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জস্থ বাংলাদেশের ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির ডিপ্লোমাধারী প্রাক্তন ছাত্রদের সম্বন্বয়ে গড়ে ওঠা এ সংঘঠন অনন্যভূমিকা রাখছে। যদিও ডিপ্লোমা, ডিগ্রী কে পেছনে ফেলে ডক্টরেট ধারীও পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু ভ্রাতৃত্ববোধকে পাথেয় করে গড়ে ওঠা এ সঙ্ঘঠন তাদের ভিত্তিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। অলাভজনক এ সংঘঠনকে ঘিরে স্বপ্ন সুধু সদস্য বা তাদের পরিবারবর্গের কল্যানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না বরং সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে ভাল সামাজিক সংঘঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্নও অলীক থাকছে না।
দু’বছর ঘুরে ডিএমইএবিএস মেতেছে নির্বাচনি আমাজে। সদস্যদের মাঝে একটা ভিন্ন উদ্দীপন পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফার্স্টফুডের দোকানে মিটিং, ডোর-টু-ডোর ভিসিট, কাগজে প্রার্থীদের নিজেদের গুনাবলি তুলে ধরার পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্বাচনে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। নানা ইস্যুতে হোয়াটসঅ্যাপ গরম হচ্ছে তবে সবই হচ্ছে ইতিবাচক বিতর্ক, ইমেইল, ফেসবুক প্রচারনার পাশাপাশি ভিডিও বার্তা ও পাঠাচ্ছে প্রার্থীবৃন্দ। এ যেন নির্বাচনীজগতের নতুন মাইলফলক। “ডায়নামিক লিডারশীপ” “টিমওয়ার্ক” সহ নানান ট্যাগ নিয়ে প্রার্থীরা তাদের নিজেদের ফুটিয়ে চুলছেন। গ্রহনযোগ্য, বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেন নিবৃত হচ্ছে না, প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রার্থীরা সদস্যদের কাছে তা বাস্তবায়নের রাস্তাও বাতলে দিচ্ছেন। এ যেন মডেল ইলেকশনের প্রতিচ্ছবি।
আলোচনা শেষে চলে ফটোসেশন।
তবে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যনীয় এতো সবের ভিড়েও প্রার্থীদের মাঝে কোন দ্বিধাদ্বন্দ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। একসাথে বসে নির্বাচনী আলাপ, নিজেরাই আচরনবিধি নির্ধারন থেকে শুরু করে ভবিষ্যত কর্মপন্থার ফিরিস্তি দিচ্ছেন। এতে নির্বাচন কমিশনের কাজ অনেকটা সহজতর হচ্ছে।
এ নির্বাচনে প্রায়ই উঠে আসছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। ইচ্ছে করলেই পারি আমরা আমাদের দেশীয় নির্বাচনগুলোকে সর্বগ্রহনযোগ্য করতে। পার্থক্য বোধহয় এই যে এখানে সকল সদস্যদের লক্ষ্য একটাই “ডিএমইএবিএস” এর উন্নয়ন আর বাংলাদেশে লক্ষ্য হয়তো বাংলাদেশের উন্নয়নই মূল লক্ষ্য নয়।
নির্বাচন সঠিক নেতৃত্ব বাছাইএর একটি প্রক্রিয়ামাত্র এ ধারনার সঠিক প্রতিফলন হচ্ছে “ডিএমইএবিএস”এ। ২৮শে মার্চ নির্বাচন শেষে “ডিএমইএবিএস” পাবে নতুন কার্যকরী কমিটি যারা পরবর্তি দুই বছর কার্যক্রম পরিচালনা করবে, “ডিএমইএবিএস”কে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে। সবার সাথে দেখা সাক্ষাতে একে অন্যকে ভালভাবে জানতে বুঝতে পারছে , নির্বাচন যেন প্রকারন্তরে ভ্রাতৃত্ববোধকে বর্ধিতকরছে।
স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের নির্বাচন গুলোও এমনি হোক, নির্বাচনি হানাহানি বন্ধ হোক। রাজনৈতিক সঙ্ঘঠনগুলো প্রমান করুক তারা “বাংলাদেশ” ব্রান্ডকে প্রাধান্য দেয়, অন্যকিছুকে নয়। উন্নয়নের ফ্রেমেওয়ার্কে বন্দি হোক বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন, সহিংসতার ফ্রেমে নয়।
আরও দেখুন এখানে
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩