বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজার ভাঙ্গা হচ্ছে। এই মাজার ভাঙ্গার দর্শন খুঁজতে হলে ২০০ বছর পেছনে যেতে হবে। ইতিহাস খুঁজলে আমরা সৌদ বংশের তিনটি সৌদী রাষ্ট পাই। প্রথম সৌদী রাষ্ট্রের শেষ শাসক ছিল আবদুল্লাহ বিন সৌদ। তার নেতৃত্বে মক্কা ও মদিনা দখল করা হয়। ১৮০১ সালে কারবালায় হামলা করে হযরত হুসাইন রা. এর মাজার ভেঙ্গে দেয়। পরে মসজিদে নববীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে মহানবী দ. এর রওজা মুবারকের গিলাফ আগুনে পুড়ে যায়। পরে তারা মসজিদে নববী ভাঙ্গার উদ্যোগ নেয়। ওই সময়ে আরবে একদল কাওয়ালি ছিলেন যারা পথে পথে ঘুরে বেহালা বাজিয়ে হযরত মুহাম্মদ দ. এর শানে মানে নাত গাইতেন। আহলে বায়েতের সম্মানে কাসিদা গাইতেন। এছাড়াও সুরে সুরে হযরত হুসাইন রা. এর মর্মান্তিক শাহাদতের শোকগাঁথা প্রচার করতেন। পাপিষ্ঠ আবদুল্লাহ বিন সৌদ তাদেরকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করে। হযরত হুসাইন রা. এর মাজার ধ্বংস ও মদিনার মসজিদ ও রওজা ক্ষতিগ্রস্থ করায় সারাবিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিক্রিয়ায় ওসমানীয় খলিফা দ্বিতীয় মাহমুদ সৌদীদের শায়েস্তা করার উদ্যোগ নেন। ১৮১৮ সালে ইব্রাহিম পশার নেতৃত্বে মিশরীয় বাহিনী আবদুল্লাহ বিন সৌদকে পরাস্ত করে রাসুল দ. যেই নজদের জন্য দোয়া করেন নি সেই নজদ থেকে গ্রেফতার করে তৎকালীন কনস্টান্টিনোপালে প্রেরণ করেন। পরে তুরস্কের ঐতিহাসিক হাইয়া সোফিয়া মসজিদের সামনে চারপুত্রসহ তাকে নেয়া হয়। উপস্থিত হয় লাখ লাখ সুন্নী মুসলিম জনতা। এরপর তাদের সামনে বেহালা পরিবেশন করা হয়। গান শুনানো হয়। তারপর আবদুল্লাহ বিন সৌদকে চার পুত্র ও দুইজন সহচরসহ প্রকাশ্যে শিরোচ্ছেদ করা হয়।
কোন দর্শনের ভিত্তিতে এই মাজার ভাঙ্গা হচ্ছে- কারা ভাঙ্গছে এই ইতিহাস জানলে আপনিও বুঝতে পারবেন। চলুন ইতিহাস জেনে আসি।
মদিনায় নবীপ্রেমিকদের ঠিকানা রওজা ছাড়াও মুসিলিম বিশ্বে সাহাবা, আওলিয়া কেরামসহ ইসলামের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মাজার রয়েছে। সৌদী আরবেও সাহাবাদের মাজার ছিল। এসব মাজার ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এই মাজার ভাঙ্গার সাথে সৌদ বংশের শাসকরা জড়িত রয়েছে। আল সৌদ রাজবংশের প্রথম পূর্বপুরুষ ছিলেন শেখ সৌদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে মুকরিন। তিনি নজদের পার্শ্ববর্তী দিরিয়ার অধিবাসী ছিলেন। ১৭২৬ সালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যূতে তার পূত্র মুহাম্মদ বিন সৌদ ক্ষমতায় আসেন।
ওই সময় নজদে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব নামের একজন ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটে। হাদীসে এসেছে এই নজদের জন্য আল্লাহর নবী দ. দোয়া করেননি। এ কারণে বর্তমানে নজদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান রিয়াদই সেই অভিশপ্ত নজদ। আব্দুল ওয়াহাব প্রথম দিকে হাম্বলী মাজহাবের অনুসারী ছিলেন। পরে ইবনে তাইমিয়ার মতবাদে প্রভাবিত হন। মাজার নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিলেন ইবনে তাইমিয়া। তিনি মাজারের বিপরীতে সুকৌশলে মসজিদকে সামনে আনেন। তিনি বলেছেন, ‘তাদের মাজারগুলো জৌলুশ ও জমজমাট থাকে আর মসজিদগুলো থাকে জনশূন্য, বিরাণ’। ইবনে তাইমিয়া মাজারের বিরুদ্ধে ‘আর রাদ্দু আলাল বাকরি’, ‘আর রাদ্দু আলাল আখনাঈ’, 'আল ওয়াসেতাতু বায়নাল হক্ক ওয়াল খলকি' শিরোণামে বইও লেখেন।
ইবনে তাইমিয়ার দর্শনের গোড়া অনুসারী ছিলেন আব্দুল ওয়াহাব। তার সমাজ সংস্কারের আহ্বানের মূল ভিত্তি ছিল তওহীদ। তার অনুসারীদের তৌহিদী জনতা সম্বোধন শুরু হয়। তিনি ইমামদের অনুসরণ বা তাকলিদের বিরোধিতা করেন এবং ইজতিহাদ প্রয়োগের আহ্বান জানান। পরবর্তীতে আব্দুল ওয়াহাব নজদি ক্রমাগতভাবে বহু জনপ্রিয় সুন্নি অনুশীলন যেমন সুফিজম, ওলী-আউলিয়া, মুর্শিদ, মাজার জিয়ারত ও আদব-সম্মান-শ্রদ্ধা ইত্যাদির বিরোধী হয়ে ওঠেন। তিনি সুন্নীদের এসব আচারকে বিদআত কিংবা এমনকি শিরক হিসেবে আখ্যা দেন।
মুহাম্মদ বিন সৌদ ছিলেন নজদে প্রথম সৌদ বংশের প্রথম শাসক। তার সাথে আব্দুল ওয়াহাব নজদির একটি ধর্মীয়-রাজনৈতিক চুক্তি হয়। আব্দুল ওয়াহাবের প্রয়োজন ছিল রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা। আর সৌদের প্রয়োজন ছিল দর্শন। চুক্তি মোতাবেক ওয়াহাবি মতবাদের ভিত্তিতে প্রথম সৌদি রাষ্ট্র দিরিয়া আমিরাত প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাঁদের দুই পরিবারের মধ্যে একটি শক্তিশালী পারিবারিক বন্ধন তৈরি করতে ১৭৪৪ সালে মুহাম্মদ বিন সৌদের পুত্র আবদুল আজিজের সাথে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাবের কন্যার বিয়ে হয়। এটিই অধুনা সৌদি আরব প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। ১৭৬৫ সালে তার মৃত্যু হয়। এই ইবনে সৌদের নামেই সৌদি আরবে ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সৌদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে।
মুহাম্মদ বিন সৌদের মৃত্যু পর তার পুত্র আবদুল আজিজ দিরিয়া ও নজদের প্রথম সৌদ বংশের দ্বিতীয় শাসক হন। তিনি মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব নজদীর জামাতা ছিলেন। তখন মক্কা মদীনা ওসমানীয় খেলাফতের অধীনে ছিল। ওই সময় ওসমানীয়রা ইউরোপে অভিযান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আবদুল আজিজ ওসমানীয়দের কাছ থেকে মক্কা মদীনা দখল করে নিজেকে খাদেমুল হারমাইনে শারিফাইন ঘোষণা করেন। ১৮০৩ সালে তার মৃত্যু হয়।
তবে মৃত্যূর আগেই ১৭৮৭ সালে তৃতীয় শাসক হিসেবে পুত্র সৌদ বিন আব্দুল আজিজকে ক্ষমতার উত্তরাধিকারী ঘোষণা করে যান। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তার নানা আব্দুল ওয়াহাব নজদী। কারণ তিনি তাকে ওয়াহাবী মতবাদে দীক্ষা দেন। এর মাধ্যমে সৌদ বিন আব্দুল আজিজ ওয়াহাবী মতবাদের একজন গোঁড়া ইমাম হয়ে ওঠেন। সৌদ ১৮০২ সালে তিনি ১২ শত ওহাবী সৈন্য নিয়ে কারাবালা আক্রমণ করে এর অধিবাসীদের হত্যা করেন। এছাড়াও কারবালায় অবস্থিত প্রিয় নবীর দৌহিদ্র হযরত হুসাইন রা. এর মাজার ধ্বংস করেন। মাজারের মূল্যবান সামগ্রী লুট করেন। পরে ইরাকের ওসমানীয় গভর্ণরের কাছে চিঠি লিখে বিষয়টি জানান।
কারবালার পর তিনি মক্কা শরীফ আক্রমণ করেন। মক্কার আশপাশে সাহাবাসহ আগের নবীদের মাজার ধ্বংস করেন। মক্কা দখল ও মাজার ধ্বংসের পর তিনি অটোমান সুলতান তৃতীয় সেলিমকে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি মক্কা দখলের ঘোষণা দেন। জানান, সেখানকার সকল মাজার ধ্বংস করেছেন। তিনি সেলিমকে ওয়াহাবি মতবাদ অনুসরণ করার আমন্ত্রণ জানান। আরো ঘোষণা দেন, লোকদেরকে খেলাফতের প্রতীক মহমাল, ভেরী ও দফ নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করতে দেবেন না। এই চিঠির মাধ্যমে ওয়াহাবীরা আনুষ্ঠানিকভাএ খেলাফতকেও অস্বীকার করে।
১৮১৪ সালে সৌদের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে পুত্র আব্দুল্লাহ প্রথম সৌদ বংশের চতুর্থ ও শেষ শাসক হিসেবে ক্ষমতায় আসেন। ইনিই সেই ওহাবী শাসক যাকে ওসমানীয়রা হাইয়া সোফিয়ার সামনে নিয়ে প্রকাশ্যে শিরোচ্ছেদ করেছিলেন। আব্দুল্লাহর বাবা সৌদ মক্কার মাজার ধ্বংস করেছিলেন। আবদুল্লাহ মদিনা আক্রমন করেন। হাদীস গ্রন্থ মিশকাত শরীফে আছে, আল্লাহর নবী দ. বলেছেন, আল্লাহুম্মা লা তাজআল কবরি ওয়া সানান ইউবাদু আশতাদ্দা গাজাবুল্লাহি কওমিন এত্তাখাজু কুবুরা আনবিয়ায়িহিম মসজিদা। মানে হলো- আল্লাহ! তুমি আমার কবরকে ইবাদতের স্থানে পরিণত করো না। যারা তাদের নবীর কবরকে মসজিদে পরিণত করে ওই জাতির ওপরে আল্লাহর গজব কঠোরতর হয়। আব্দুল্লাহ দেখলেন, রাসুল দ. এর রওজা মসজিদে নববীর ভেতর। এ কারণে তিনি মসজিদে নববী ধ্বংস করতে চাইলেন। মসজিদে হামলা করে ভাঙ্চুর শেষে আগুন ধরিয়ে দিলেন। এতে প্রিয় নবীর রওজার গিলাফ পুড়ে যায়। তাছাড়া সুফি সাধক ও বেহালা দিয়ে কাসিদা-কাওয়ালী গায়কদের হত্যা করেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মুসলিম বিশ্ব। লেখার শুরুতেই বলেছিলাম, তখন ওসমানীয় খলিফা ছিলেন দ্বিতীয় মাহমুদ। তিনি আব্দুল্লাহকে শাস্তি দেয়ার জন্য মিশরের গভর্ণরকে নির্দেশ দেন। ১৮১৮ সালে মিশরীয় সেনাপ্রধান ঐতিহাসিক কামাল পাশা আবদুল্লাহকে পরাজিত করে মিশরে নিয়ে যান। পরে তাকে মিশরে ছয়মাস রেখে তুরস্কে পাঠানো হয়। তার চার সন্তান ও দুই সহযোগীসহ সবাইকে তুরস্কের হাইয়া সোফিয়া মসজিদের সামনে শিরোচ্ছেদ করা হয়। মৃত্যুর আগে তাদের বেহালার সুর শুনানো হয়। আর এভাবেই পতন হয়েছিলো- মাজার ধ্বংসকারী প্রথম সৌদী শাসনের।
পরবর্তীতে আবদুল্লাহর ভাই খালিদ ওয়াহাবীদের ঘাটি নজদে ফিরে গিয়ে দ্বিতীয় সৌদী শাসন চালু করেন। তবে তিনি মিশরের ওসমানীয়দের গভর্ণর মোহাম্মদ আলীর অধীনে ছিলেন। দ্বিতীয় সৌদী শাসন ছিল ১৮৯১ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় সৌদী শাসনের সর্বশেষ শাসক ছিলেন আবদুর রহমান। পরবর্তীতে তার পুত্র আবদুল আজীজ সৌদীর ক্ষমতায় আসেন। তারপর তার পাঁচ পুত্র পর্যায়ক্রমে সউদ, ফয়সাল, খালিদ, ফাহাদ, আব্দুল্লাহ সৌদী আরব শাসন করেছেন। আরেক পুত্র সালমন বর্তমানে ক্ষমতায় আছেন। সালমনের পুত্র মুহাম্মদ বিন সালমনই এখন সৌদী আরবের প্রধানমন্ত্রী। এই মুহাম্মদ বিন সালমন ওহাবীবাদ নিয়ে বোমা ফাটিয়ে দিয়েছেন। তার সেই বক্তব্য ২০১৮ সালে ২২ মার্চ দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট প্রকাশ করেছে। মুহাম্মদ বলেছেন, পশ্চিমাদের কথায় ওয়াহাবিবাদ প্রচার করেছে সৌদি আরব। ওয়াহাবিবাদের প্রসারের জন্য বিদেশের বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় বিনিয়োগ করেছিল তাঁর দেশ। পরমতসহিষ্ণু সুন্নিদের উগ্র ওয়াহাবিবাদে দীক্ষিত করতে ১৯৭০ থেকে চার দশকে ১ হাজার কোটিরও বেশি ডলার ঢেলেছে সৌদি আরব। এবার বুঝতে পেরেছেন কীভাবে মাজার ভাঙ্গার দর্শন কোথা থেকে এদেশে এসেছে!ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেয়ার আর দরকার নেই।
২.০
মহানবীর রওজায় আক্রমন হলে উসমানীয়রা এগিয়ে এসেছিলেন। একারণে মদিনার বুকে রওজাটা অক্ষত রয়েছে। তবে লোকজন যাতে কাছে না যেতে পারে তার ব্যবস্থা করা আছে। রওজার সামনে হাতও তুলতে দেয়া হয়না। ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়না। একবার তাসাউফপন্থী সুফিবাদী চেচন প্রেসিডেন্ট রমজান কাদিরভ রওজার ভেতরে ঢোকার সুযোগ পেয়েছিলেন। সাথে সাথে তিনি হযরত দ. এর পায়ে লুটিয়ে পড়ে চুমুর পর চুমু দিয়েছিলেন। এখন আর উসমানীয়রা নেই। উসমানীয়দের স্থানে সাদ্দাম হুসাইনের নেতৃত্বে ইরাক একসময় সুন্নীদের অভিভাবক ছিল। সাদ্দাম হোসেনও ইতিহাস। এদেশে মন্দির ভাঙ্গা হলে পৃথিবীর বহু দেশ রয়েছে তার প্রতিবাদ করার। সুন্নীদের জন্য; সুফিবাদের জন্য কেউ নেই। সুফিবাদ বা তাসাউফপন্থীরা ভালোবাসায় বিশ্বাস করে। তারা কাউকে আক্রমন করেছে বিশ্বের ইতিহাস ঘাটলে এমন তথ্য বের করা যাবেনা। বরং ভালোবাসার মাধ্যমে ধর্ম প্রচার করেছে তারা। দেশের মাজারে মাজারে এত আক্রমন হলো- তারা আক্রমনকারীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি। এটাই সুফিজম। এটাই তাসাউফ। তবে ইতিহাস বলে, কেউ আক্রমনের শিকার হলে তাকে থামানো যায়না। বরং প্রভাব বাড়ে। আক্রমনকারীর পতন হয়। মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহার বলেছিলেন,
‘কাতলে হুসাইন আসল মে মারগে ইয়াজিদ হ্যায়,
ইসলাম জিন্দা হোতা হায় হার কারবালা কে বাদ।’
হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শাহাদাতের মাঝে আসলে এজিদের অপমৃত্যুই নিহিত ছিল; কেননা প্রতিটি কারবালার পরেই ইসলাম পুনর্জীবন লাভ করে।
কাজী সায়েমুজ্জামান
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০০