এখানকার প্রতিটি দোকানেই একটা নোটিশ দেখা যায়। তাতে লেখা রয়েছে, 'এয়ারপোর্ট এলাকায় যেকোন ধরণের ময়লা/বর্জ্য নির্ধারিত ডাস্টবিনের বাইরে ফেললে ৫০০০ টাকা জরিমানা এবং/অথবা এক বছরের কারাদন্ড হতে পারে।'
আমার দেখামতে দেশের প্রচলিত আইনে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার অপরাধে এটাই সবচেয়ে কঠিন শাস্তির বিধান। এরপরেও তা রোধ করা যায়নি। সবার দিকে তো আর তাকিয়ে থাকা যায়না। কে কখন কোথায় কফির কাপটা ফেলে বিমান ধরতে দৌড় দেন। একারণেই নোটিশের নিচে পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। লেখা হয়েছে, 'খাওয়ার পর খালি বোতল, কাপ, প্যাকেট ইত্যাদি ফেরত দিয়ে অথবা দোকানের বিনে ফেলে ৫ টাকা ফেরত নিন। ' শাস্তি প্রদান অপেক্ষা পুরস্কার বেশি কার্যকর আবারো প্রমাণিত হলো।
আমি প্রথম এ ধরণের আইডিয়ার সাথে পরিচিত হই, সাভারের পিএটিসিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নেয়ার সময়। সেটা ২০১২ সালে। বিসিএস ২৪ ব্যাচের ওবায়দুল্লাহ স্যার ছিলেন এর রূপকার। তিনি পরীক্ষায় প্রশ্ন করেছিলেন, ধরুন আপনি কক্সবাজার শহরের মেয়র। আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সি বিচ পরিস্কার রাখা। হাজার হাজার মানুষ সেখানে বোতল, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি নিয়ে সমূদ্রের ধারে গিয়ে বসেন। খেয়ে দেয়ে খালি প্যাকেটগুলো সেখানেই ফেলে রাখেন। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় এগুলো সাফ রাখতে প্রচুর জনবল নিয়োগ দিতে হয়েছে। অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে। আপনি এ সমস্যার সমাধান কীভাবে করবেন?
অনেকেই অনেক রকম আইডিয়া দিয়েছিলো। আমি লিখেছিলাম, সৈকতে পাওয়া প্রতিটি বর্জ্যর মূল্য ঘোষণা করলে এগুলো সাফ করার জন্য আর লোক নিয়োগ করতে হবেনা। কর্তৃপক্ষেকে শুধু একটা বুথ রাখতে হবে। সেখানে জমা দিয়ে টাকা নেয়ার ব্যবস্থা থাকলেই আর কেউ সৈকতে ফেলবেন না। পর্যটক নিজেই টাকার জন্য রেখে দেবেন। নয়তো এগুলো কুড়ানোর জন্য অন্যরা তৈরী হয়ে থাকবে। লোক নিয়োগের চেয়ে কম খরচে সি বিচ পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হবে। সম্ভবত, বিশ্বের কোন একটি দেশের সি বিচে এমনি একটি ব্যবস্থা আছে। আমি সেটাই লিখেছিলাম।
অনেক বছর পর এয়ারপোর্টে এই আইডিয়ার বাস্তাবয়ন দেখে আপ্লুত হলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭