দুর্গাপূজা শুরু হয়ে গেছে । নন্দীগ্রামে ঠাকুরবাড়িতে সবচেয়ে বড় পূজাটি হয়।অংকুর দুর্গাপূজার ছুটি পেয়েছে ।ঠাকুরবাড়ীর পুজা খুব বিখ্যাত হওয়ায় সে ও বহু দুর থেকে সেছে ।কত রুপুসী আসছে,যাচ্ছে ।মেয়েদের হরেক রকমের সাজ চোখে পড়ে ।যেন সাজের আর রুপের হাট বসেছে ।অংকুরের চোখ হঠাত একদিকে আটকে যায় ।তার পলক যেন আর পড়ে না ।মেয়েটি খুব রুপসী নয়,কোন সাজ নেই ।সাধারন পোশাকে ঘুরছে আর বন্ধুদের সাথে খুব হাসছে ।যেন হাসির ফোয়ারা ।অংকুর চেয়ে আছে অপলক।সাধারন আটপৌড়ে ফুর্তিবাজ মেয়েটির দিকে ।সে ভাবছে এত কাল ধরে তবে কি তাকে খুজছে ।যেকোন ভাবে তাকে পেতে হবে ।তারপর অংকুর মেয়েটির বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করে ।জানতে পারে তার নাম অপরুপা ।তাড়াহুড়া করে প্রস্তাব পাঠানু ঠিক না ।অপরুপার বাবা পরিমল সাহেব ঢাকায় সরকারি চাকুরি করেন । পরিবারে তার মা আর ছোটবোন পলি রয়েছে ।অপরুপা এবার এইচ এস সি পরীক্ষা পাস করেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে ।অংকুর ঢাকায় ফিরে গেছে ।কিন্তু তার মন পড়ে থাকে পূজোয় দেখা অপরুপার কাছে ।তখন মনে পড়ে অপররুপার বাবার ঠিকানার কথা ।সে ঠিকানা নিয়ে পরিমল সাহেবের বাসায যায় ।তার সাথে পরিচিত হয ।মাঝে মাঝে পরিমল সাহেবের বাসায় যায় এবং তার সাথে আড্ডা মারে ।ওনি ও একা মানুষ অংকুরের সঙ্গ ভাল লাগে ।ওনি তার মেয়েদের কথা বলেন।
অপরুপার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম ওঠানো ও জমা দেয়া সব কাজ অংকুর করে দেয়।পরিমল সাহেব নিশ্চিন্ত মনে অফিস করেন ।অপরুপা ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার জন্যে ঢাকা আসে।পরিমল অফিস থেকে ছুটি পান না ।তখন অংকুর সব শুনে সে অপপরুপাকে পরীক্ষার হলে নিয়ে যায় ও বাসায় পৈৗছে দেয় ।এভাবে অংকুর ও অপরুপার পরিচয় হয় ।ঢাকার সব বিখ্যাত জায়গাগুলো অংকুর অপরুপাকে ঘুরিয়ে দেখায় ।ট্রেনে ওঠিয়ে দেয়ার সময় অংকুর অপরুপা থেকে মোবাইল নাম্বার চেয়ে নেয় ।অপরুপা ও অংকুরের মোবাইল নাম্বার রাখে ।তারপর গ্রামের বাড়িতে চলে আসে।গ্রামে এসে বারবার অংকুরের কথা মনে হতে থাকে।
দিনে দিনে অপরুপা আর অংকুর মোবাইলে কথা বলতে খাকে।কথা না বললে যেন দিন যায় না ।বিভিন্ন ছুটি পেলে অংকুর অপরুপাদের বাসায় চলে আসে। যেন অংকুর অপরুপাদের পরিবারের একজন হয়ে গেছে ।সবার জন্যে উপহার নিয়ে আসে।অপরুপার বাবা ও অংকুরকে সবচেয়ে দামি উপহার দেন।এ নিয়ে তাদের অনেক ঝগড়া ।অপরুপা আর অংকুরের সম্পক কঠিন ভালবাসায় রুপ নেয় ।তারপর অঅপরুপার বাবার কাছে বিয়ের প্রম্তাব পাঠায় ।পরিমল সাহেব খুশি মনে সব মেনে নেন ।তিনি অংকুরকে তার পরিবারকে তাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বলেন।অংকুর বাসায় গিয়ে বড় ভাই ও ভাবীকে পাঠাণ।অংকুরের পরিবার অপরুপার পরিবার থেকে অনেক বেশী ধনী ছিল ।তারা সে অপরুপাকে উপহাস ও অপছন্দ করেন ।অংকুর অধীর আগ্রহে বাসায় বসে থাকে।সে বড় ভাইকে খুব শ্রদ্ধা করে তার বাবার মত । কারন ছোটবেলায় তার মা বাবা দুজনে মারা যান ।বড় ভাই সেই ছোটবেলা থেকে মানুষ করেছেন ।তার ভাবী এসে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানান।অংকুর বিশ্বাস করতে পারে না । অপরুপার পুরো পরিবার ভেঙ্গে পড়ে।তারা একথা বিশ্বাস করতে পারে না ।অপরুপা সবসময় কাঁদে ।অংকুর ফোন করে শান্ত্বনা দেয় ।ভাইকে বুঝিয়ে বলবে ,সব ঠিক হয়ে যাবে ।কদিনের ব্যাপার মাত্র ।অপরুপা ওতাই ভাবে। এভাবে ছয় মাস চলে যায় ।মে মাসের ৮ তারিখ অপরুপার জন্মদিন ।সে প্রতীক্ষা করে আছে অংকুর তাকে সারপ্রাইজ গিফট দিবে।অংকুর বলেছে ..তার জন্মদিনে বড় সারপ্রাইজ গিফট দিবে।অপরুপা তার জন্মদিনে সারপ্রাইজ গিফট পায় ।জানতে পারে অংকুর বিয়ে করেছে ৬ মাস হতে চলল ।কি করবে অপরুপা বুঝতে পারে না ।অপরুপা চিরতরে বোবা হয়ে যায় ।