সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলি, মাইরালা চ্যানেলের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি 'গলে মালে গল গললে মিঃ গলে মালে খাঁ'। দর্শক আপনারা নিশ্চই অবগত আছেন যে, দেশে বর্তমানে অ-বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, যার সাথে কর্তৃপক্ষ নিরবচ্ছিন্নতার কোন যোগ সূত্র খুঁজে পাচ্ছেন না। কিন্তু উক্ত ঘটনা গুলোর কারণে এখন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবার মনেই একটা প্রশ্ন ঊঁকি দিচ্ছে যে, তাহলে দেশের এই বিচ্ছিন্ন ঘটনা গুলো কি অপরাধীরা পরিচ্ছনতার কাজেই বেশি ব্যবহার করছেন? তা না হলে কেন তাদেরকে সমূলে নিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না?
কেন যে হচ্ছে না (?) সেইটা নিয়ে মাথা ঘামানোর অনেক মানুষ যেহেতু এখানো দেশে অবশিষ্ট আছে, সেহেতু আমরা আর সেদিকে গেলাম না। তবে সাধারণ জনগন হিসাবে সেই সমস্থ বিচ্ছিন্ন ঘটনা গুলোকে নিয়ে তো আমরা অ-বিচ্ছিন্ন ভাবে একটু আলোচনা করতে পারি? আর তারই ধারাবাহিকতায় দেশে ঘটতে চলা সেই সব বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাইরালা চ্যানেলের এবারের দূর্দান্ত প্রতিবেদন- "বিচ্ছিন্ন ঘটনার অ-বিচ্ছিন্ন ইতিহাস"! তো দর্শক মন্ডলী চলুন আর দেরি না করে আমার সংবাদের এক্কেবারে গভীরে প্রবেশ করি। যে সংবাদের মধ্যেও ঘটে চলেছে একের পর এক বেশ কিছু অ-বিচ্ছিন্ন ভাবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা..........
মতিন বদনা সংবাদ শিরোনামঃ- ঢাকার অদূরে একটি পরিত্যক্ত নর্দমার মধ্য থেকে কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে ম্যালেরিয়া রোগ পরিবাহী কয়েক'শ এডিস মশা নিখোঁজ। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে জরুরী অবস্থা জারি!
ঝামেলা বেগমের পাঠানো ডেস্ক রিপোর্টে পড়ুন বিস্তারিত সংবাদঃ- গতকাল ভোর আনুমানিক পৌনে ঊণত্রিশটার দিকে ঢাকার অদূরে 'গড়ের মাঠ' নামক এলাকার একটি নর্দমা থেকে কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে কয়েক'শ ম্যালেরিয়া রোগ পরিবাহী এডিস মশা নিখোঁজ হয়ে যায়। এলাকা বাসির বরাত দিয়ে কয়েকজন বিশেষ বিশেষ অজ্ঞ ব্যক্তি এ ব্যাপারে তাদের ধারনা ব্যক্ত করে বলেন যে, উক্ত ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভাবে একটি অনাকাঙ্খিত এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করেন তারা। তাদের অনুমান এটা কোন জঙ্গী বা নকশাল গোষ্টির কাজ হতে পারে। এমনকি দেশ থেকে মশা নিমূর্লের এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র বলেও মনে করেন তারা। যদিও সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিথ এই ঘটনাটিকে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে নারাজ মশা সমবায় সমিতির চিপ হুইপ 'জনাব মসকুইটো' সাহেব। তিনি মনে করেন, সম্প্রতি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে এবং দেশের জনসাধারনের ক্রমবর্ধমান উর্দ্ধগতিকে তরান্বিত করতে মশারা যে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করে আসছে, সেটা হয়তো বিরোধীদল খুব সহজে মেনে নিতে পারছে না। আর সে জন্য দেশের মেধাবী মশাদেরকে বিদেশে পাচার করে দিয়ে তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
উক্ত অনাকাঙ্খিত এই ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করার জন্য ইতোমধ্যে মশা সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে ছাপান্ন সদস্য বিশিষ্ট একটি জোরালো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। তবে ঘটনার কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী না থাকায় তদন্ত কারী কর্মকর্তাদেরকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলেও খবরে প্রকাশ। নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে এ ব্যাপারে একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা মাইরালা চ্যানেলের কাছে তার অভিমত ব্যক্ত করে বলেনঃ-
"অবশ্যই এই বিচ্ছিন্ন এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করা হবে। এবং খুব শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদনও জনগনের সামনে তুলে ধরা হবে। আমাদের তদন্ত কারী কর্মকর্তা গন ইতোমধ্যে চম্র গতিতে তাদের কাজে লেগে পড়েছেন। তবে সুষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন পেতে হলে আমাদেরকে আর একটু সময় দিতে হবে। ইনশা-আল্লাহ খুব শীঘ্রই আমরা একটি সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে, দোষীকে চিহ্ণিত করে তাকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারবো বলে মনে করছি।"
ওদিকে দেশের এই মেধাবী মশাদের হঠাৎ এমন উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে সরকারেরই একটা গভীর চক্রান্ত বলে মনে করেন বিরোধী দলের কিছু কিছু সদস্য। এবং বিরোধী দলের পক্ষ থেকে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে বলেও সংবাদে প্রকাশ।
চুলের কাঁটা সংবাদ শিরোনামঃ- অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে ভ্রোমরা বর্ডারের ধারে একটি গর্ভবতী ধাড়ী ছাগল নিহত। ছাগলটির পরিবারে এখন শোকের মাতম চলছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ দেখে হত্যাকারী সনাক্ত করা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। ( দেখুন সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ)
কালা এন্তাজের পাঠানো ভিডিও বার্তায় পড়ুন বিস্তারিত, ক্যামেরায় ছিলেন অন্ধ আজিজঃ- আজ দুপুর সোয়া নয়টার দিকে সাতক্ষীরার ভ্রোমরা বর্ডারের ধারে অজ্ঞাত বন্দুক ধারীদের গুলিতে একটি আট চল্লিশ বছর বয়সী গর্ভবতি ছাগল মারা যায়। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছাগলটি গত তিন মাস ধরে গর্ভবতি ছিল। ছাগলটির স্বামী মিঃ পাঠা কার্তিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আজ সকাল সাড়ে দুইটার দিকে তার স্ত্রী ছাগল ঘর থেকে বের হয়ে পাশের ঝোপ থেকে এক গোছা শুকনো দুর্বা ঘাস মুখে দিয়ে, জাবর কাটতে কাটতে বর্ডার এলাকার দিকে চলে যায়। যাওয়ার সময় পাঠা কার্তিককে বলে যায়, তার হয়তো ফিরতে দেরি হতে পারে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও তার ফেরার কোন নাম গন্ধ না পেয়ে তার সাত মাস বয়সী খাঁসি ছেলে টাকে সঙ্গে নিয়ে, বর্ডারের কাছে খুঁজতে গেলে কিছুক্ষন খোঁজা-খুঁজির পর তারা নিহত ছাগলের মৃতদেহটাকে আবিষ্কার করে।
এ ব্যাপারে অনুসন্ধানের জন্য তাৎক্ষনিক ভাবে পয়ষট্টি সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কারী কর্মকর্তাদের দাবি, এটি একটি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে ছাগলটিকে মেরে ফেলার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা, সে ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তারা এখনো পুরোপুরি ভাবে নিশ্চিত নন। ঘটনার বিস্তারিত জানতে আমাদের সংবাদাতা মিঃ কালা এন্তাজ 'ছাগল সেভ এন্ড ট্রাস্টের' সাধারণ সম্পাদক 'মিঃ আবাইদ্দা বলদের' সাথে কথা বললে তিনি বলেনঃ-
"ময়না তদন্তের জন্য লাশ আপাতত ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোন কিছুই স্পষ্ট ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে ছাগলটির গায়ে দু'একটি আঘাতের চিহ্ন থেকে অনুমান করা যায়, হয়তো অপরাধীরা ছাগলটিকে হত্যা করার আগে তাকে ধর্ষণ করে তারপর গুলি করে হত্যা করে।"
অপরাধীদের কে কবে নাগাদ গ্রেফতার করা হতে পারে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেনঃ-
'এটি একটি সম্পূন্ন বিচ্ছিন্ন ঘটনা সে ব্যাপারে আমাদের কোন সন্দেহ নেই। তবে আপাতত আমারা ঘটনার কাছাকাছি থাকা একটি সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করতে পেরেছি। যেখানে অপরাধীদেরকে খুব স্পষ্ট ভাবেই দেখা যাচ্ছে। সুতরাং উক্ত সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধী সনাক্ত করাটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।'
এই ঘটনায় সরকারি এবং বিরোধী দল পৃথক পৃথক ভাবে তাদের শোক প্রকাশ করেছেন বলেও আমাদের রিপোর্টার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এখনো কেউ কাওকে দোষী হিসাবে সনাক্ত করেনি বা কেউ কারো ঘাড়ে দোষ চাপায়নি বলে আমাদের রিপোর্টার সম্পূর্ণ নিশ্চিত।
দর্শক 'বিচ্ছিন্ন ঘটনার অ-বিচ্ছিন্ন' ইতিহাসের মাঝে এবার নেব 'কদবেল ঘামাছি পাউডার' খুব ছোট্ট একটা ব্রেক। ফিরছি মাত্র ঊণচব্বিশ মিনিটের মাথায়। ততক্ষণে কোত্থাও যাবেন না, সঙ্গে থাকুন এবং দেখতেই থাকুন আমাদের মাইরালা চ্যানেলের দূর্দান্ত এই প্রতিবেদন।
দর্শক মন্ডলি 'কুমকুম হেয়ার অয়েল' খুব ছোট্ট একটা ব্রেকের পর আপনাদেরকে মাইরালা চ্যানেলের পক্ষ থেকে আবারও স্বাগত জানাচ্ছি আমি গলেমালে গল গললে মিঃ গলে মালে খাঁ। এতক্ষন আপনারা দেখছিলেন আমাদের মাইরালা চ্যানেলেরই একটা দূর্দান্ত প্রতিবেদন 'বিচ্ছিন্ন ঘটনার অ-বিচ্ছিন্ন ইতিহাস'। তো আর একদমই সময় নষ্ট করবো না, চলুন উক্ত প্রতিবেদনের বাকি অংশটি এবার দেখে নেওয়া যাক!
রক্ত রাঙা লিপিস্টিক সংবাদ শিরোণামঃ- চট্রোগ্রামের আবাসিক হোটেলের একটি কামরা থেকে অশালীন এবং অনৈতিক কর্যকলাপ করার সময় দু'টি ছারপোকাকে হাতে নাতে গ্রেফতার করেছে সিএমপি (ছারপোকা মেইন্টেন্যান্স পুলিশ)। ডিএনএ টেস্ট থেকে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে, তারা দু'জনেই ছিল পুরুষ ছারপোকা। সিএমপির দাবি, সম্ভাবত তারা সমকামী ছিল! (অনৈতিক ফটু সহ)
চাটগাইয়া আবুলের পাঠানো ডেস্ক রিপোর্টে পড়ুন বিস্তারিত সংবাদ, ফটো ক্রেডিট বল্টু দাঃ- গতকাল রাত সোয়া বায়ান্নটা বেজে উণআশি মিনিটে চট্রোগ্রাম শহরের 'বাপের হোটেল কিসের টাকা' নামক একটি বত্রিশ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হোটেলের ছত্রিশ তলার ৮৯ নাম্বার কামরা থেকে, অনৈতিক কার্যকলাপ করা অবস্থায় সম্পূর্ণ উলঙ্গ ভাবে দুইটি ছারপোকাকে হাতে নাতে গ্রেফতার করেছে ছারপোকা মেইন্টেন্যান্স পুলিশ (সিএমপি)। সিএমপি কমিশনার জনাব ছব্দুল সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে বলেনঃ
"আমার আগের থেকে প্রাপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতেই উক্ত ছারপোকা দুটিকে হাতে নাতে গ্রেফতার করি। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ডিএনএ টেস্ট হাতে আসার পরেই আমার বুঝতে পারি যে, তারা দু'জনেই ছিলো পুরুষ প্রজাতির ছারপোকা। সুতরাং আমাদের ধারনা তারা সম্ভাবত সমকামী হতে পারে।"
এছাড়া হোটেলে অশালীন কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগে উক্ত হোটেলের মালিক 'জনাব নান্টুর বাপ'কেও সিএমপি গ্রেফতার করেছে বলে খবরে প্রকাশ। সিএমপি প্রাথমিক ধারনা থেকে অনুমান করছে, উক্ত হোটেলের মালিক জনাব নান্টুর বাপ জেনে বুঝেই তার হোটেলে এই সব অনৈতিক কার্যকলাপ চালান বলে অনেক আগে থেকেই বিশিষ্ট জনদের অভিযোগ ছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে নান্টুর বাপকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তার দাবি, সিএমপিই চক্রান্ত করে তাকে গ্রেফতার করেছে। তাছাড়া উক্ত ঘটনায় সিএমপির দ্বায়ের করা মামলার এজেহার ভুক্ত কয়েকজন স্বাক্ষীর কাছে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে, তাদের মধ্যে একজন তার নাম প্রকাশ না করার সত্তে বলেনঃ
"এটা সম্পূন্ন একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ঘটনার সাথে অ-বিচ্ছিন্নতার কোন যোগ সূত্র থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন না। তবে উক্ত হোটেলে যে এই ধরনের অনৈতিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা আগে থাকতে ঘটছে, এটা আপনি কিভাবে জানলেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মুখ কাচুমাচু করে বলেন, আজ্ঞে বোঝেনই তো! পাঁচজনের সাথে আমাদের উঠাবসা। মাঝে-সাঝে একটু আধটু........হে.....হে......হে.....চলে আর কি! সুতরাং হে...... হে...... হে...... বুঝতে পারছেন না?"
উনার এই হে...হে... টা না বুঝলেও, পুরো ঘটনা বুঝতে সাংবাদিকদের আর বাকি থাকে না। তবে কেন তিনি হঠাৎ করে নান্টুর বাপের বিরুদ্ধে এই ধরনের স্বাক্ষী দিতে গেলেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জনাব নান্টুর বাপ বলেনঃ
"আরে ধুর! পুলিশই তো আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে গেল স্বাক্ষী দেওয়াতে। নইলে মরতেও যেতুম না পুলিশের ঐ গ্যাড়া কলে। বোঝেনই তো, বাঘে ছুলে আঠারো ঘা, আর পুলিশে ছুলে বোধ হয় আটান্ন ঘা!"
দর্শক উক্ত ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে ঐ এলাকায় আর এমন কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে কিনা, সে ব্যাপারে তলিয়ে দেখা হবে বলে সিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদেরকে প্রাথমিক ভাবে আশ্বাস প্রদান করেছেন। তাছাড়া সর্বশেষ রিপোর্ট হাতে আসা পর্যন্ত, এই ঘটনা নিয়ে সরকারি দল এবং বিরোধী দল নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে জানা গেছে।
ময়দার গুড়া গমের আঁটা সংবাদ শিরোনামঃ- আগামীকাল রাত আনুমানিক সাড়ে বত্রিশটার সময় বরিশালের কাউয়ার চর নামক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জনাব কুব্বত কাকার কচু বাগান থেকে, মুখে রুমাল বাধা অবস্থায় বস্তা বন্দি এক মেছো বিড়ালের লাশ উদ্ধার। ধর্ষণের দ্বায় স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হেজবুকে হুলো বিড়ালদের ভিডিও বার্তা প্রকাশ। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনীর ধারনা, এটি খুব স্বাভাবিক একটি ধর্ষণের ঘটনা। (ভিডিও প্রতিবেদন)
চান্দু মিয়ার পাঠানো ভিডিও বার্তায় পড়ুন বিস্তারিত, ক্যামেরায় ছিলেন ক্ষতিরণ বিবিঃ- আগামী কাল রাত আনুমানিক সাড়ে বত্রিশটার সময় বরিশালের কাউয়ার চর নামক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জনাব কুব্বত কাকার কচু বাগান থেকে, ড্যাব-১৬ এর সদস্যরা একটি বস্তা বন্দি মেছো বিড়ালের লাশ উদ্ধার করেছেন। বস্তার মুখ উন্মুক্ত করার সাথে সাথে ভিতর থেকে মুখে রুমাল বাধা অবস্থায় একটি সুন্দরী যুবতী মেছো বিড়ালের মৃত দেহ অবয়ব পাওয়া যায়, যার সমস্থ শরীরে ছিল প্রচুর পরিমাণে আচড়ের চিহ্ন। ড্যাব-১৬ এর সিনিয়র একজন কর্মকর্তা আমাদের মাইরালা চ্যানেলের বরাত দিয়ে বলেনঃ
"এটি খুব স্বাভাবিক একটি বিচ্ছিন্ন ধর্ষণের ঘটনা। তবে ধর্ষনে একজন ব্যক্তি জড়িত নাকি একাধিক ব্যক্তি জড়িত সেটা সহজে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু প্রাথমিক অনুমানে মনে করা হচ্ছে, ধর্ষণের সাথে কমপক্ষে তিন চারজন জড়িত থাকতে পারে!"
ওদিকে এই ধর্ষণের দ্বায় স্বীকার করে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হেজবুকে 'আমরা হুলো আমরা বল, আমার বদের দল' নামক একটি ইভেন্ট খুলে, কতিপয় হুলো বিড়াল কর্তৃক একটা ভিডিও বার্তা আপলোড করা হয়েছে। ভিডিও বার্তাটিতে দেখা যাচ্ছে, কিভাবে কয়েকজন হুলো বিড়াল জোর জবরদস্তি করে একটা নিরীহ মেছো বিড়ালকে আক্রমন করে ক্ষতবিক্ষত করছে। তবে দেশে যত অঘটনই ঘটুক না কেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন একদমই নাগালের মধ্যে আছে বলে মনে করেন 'কুইন বিড়াল সমবায় সমিতি'র উপদেষ্টা জনাব বিল্লু মিয়া। এছাড়াও তিনি এ ব্যাপারে দেশের জনগনকে একদমই বিচলিত হতে নিষেধ করেছেন বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ। তার ধারনা সরকারকে ফাঁসানোর জন্যই এটি বিরোধী দলের একটি গভীর চক্রান্ত হতে পারে।
এ ব্যাপারে কুইন বিড়াল সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে কত্রিশ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাদের ধারনা, সব ঘটনার মতই এটিও হয়তো একটি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা হতে পারে। তবে এই ব্যাপারে আপাতত তদন্ত কমিটির কোন সদস্যই মুখ খুলতে নারাজ। তাদের কথা, লাশ পোস্ট মর্টেম করার জন্য ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। আগে ফরেন্সিক রিপোর্ট এবং ডিএন এ রিপোর্ট আসুক তারপর না হয় বিস্তারিত বলা যাবে!
উক্ত ধর্ষনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশের মধ্যে এখন একটা অ-বিচ্ছিন্ন অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে বলে, আমাদের রিপোর্টার মনে করেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকারি দল কর্তৃক বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা সকল বিচ্ছিন্ন ঘটনা দমন করতে সদা প্রস্তুত। এছাড়া এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিরোধী দলের পক্ষথেকে এক বিবৃতি প্রদান করে বলা হয়ঃ
"সরকার তার ব্যর্থতাকে ঢাকতেই দেশের মধ্যে এই সব হত্যা, খুন, গুম এবং ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে তারা মনে করেন। এছাড়াও পূর্বের কেলেংকারি ঢাকতে সরকার আবারও নতুন নতুন কেচ্ছা কাহিনী রচনা করছে বলেও মনে করেন বিরোধি বিড়াল সমবায় সমিতির সিনিয়র কিছু সদস্যরা। তবে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে খুব শীঘ্রই এই সব বিচ্ছিন্ন ঘটনার প্রতিরোধ করতে আগামী যে কোন ঈদের পরে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও উচ্চারণ করা হয়েছে। তবে কোন ঈদ সেটা তারা পরে জানিয়ে দেবেন!"
সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলি, 'বিচ্ছিন্ন ঘটনার অ-বিচ্ছিন্ন ইতিহাস' নামক প্রতিবেদনটি আজকের মত শেষ করবো। তবে যাওয়ার আগে আরো কিছু কুমকুম হেয়ার অয়েল এন্ড দন্তক্ষয় টুটপেস্ট বিচ্ছিন্ন সংবাদ শিরোনাম জানিয়ে দিইঃ-
=> সিলেট থেকে ঢাকা গামী একটি যাত্রিবাহি অজান্তার চাপায় ৬৬ বছর বয়সী এক যুবক পাতি শিয়ালের মৃত্যু। ঘটনার তদন্ত করতে ব্রাজিলের আমাজান থেকে শকুনী মামার আগমন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, চাপা পড়া পাতি শিয়ালটি বুদ্ধিহীন শিয়াল পন্ডিত গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ছিল।
=> সুন্দরবনের গহিনে দুই দলের দুষ্কৃতিকারিদের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের সময় তাদের ছোড়া গুলিতে বার বছর বয়সী একটি বাচ্চা হরিণ নিহত। এছাড়া আরো কিছু পশুপাখি আহত এবং হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে জরুরী অবস্থা জারি সহ অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন। ভবিষ্যতে এই ধরনের কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে বরদাশত করা হবে না এবং এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বনমালী জনাব হরিণা কুন্ড মশায়ের বিকট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ।
=> টু-লেট টাঙানো একটি বাড়ি ভাড়া নিতে গিয়ে সাড়ে তিন বছরের এক বৃদ্ধ কুকুর বাড়ির গৃহিনী কর্তৃক নিগৃহের স্বীকার। আহত অবস্থায় কুকুরটি এখন ডগ এনালাইসিস মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি আছে। ডাক্তারের ধারনা, কুকুরটি এখনো আশংকা মুক্ত নয়। সেই বিভিষিকা ময় ঘটনাকে স্মরণ করে সে এখনো বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছে। তবে আপাতত তাকে জোরালো ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াইয়ে পরপারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
=> বহুল আলোচিত 'I Am GPA-5' নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে একজন পাঁচ পঞ্চাশ বছরের যুবক গবেষকের মৃত্যু। নেপালের রাজধানী ক্যামনে নেপচুন হয় (?) এই চিন্তাটাই মৃত্যুর প্রধান কারণ বলে দাবি করেন চিকিৎসকরা। তবে নিউটানেস্টাইনের কোন থিউরি নিয়ে তিনি গবেষণা করছিলেন কিনা এ ব্যাপারে এখনো কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
=> প্রায় চার'শ বছর পর বিশিষ্ট গনিত বিদ স্যার পিথাগোরাসের "ফাস্ট ইয়ারের প্রেম" নামক একটি উপন্যাসের সন্ধান লাভ। বার'শ পৃষ্টার এই উপন্যাসটির মধ্যে আছে, কিভাবে পড়া বাদ দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গার্লফ্রেন্ডকে প্রেম নিবেদন করে সেটা লাইভ টেলিকাস্ট করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়ানো যায়, তা সহ এমন হাজারও প্রেমের অমূল্য তরিকার খুবই সহজ সমাধান। এছাড়াও "পেন্সিলে আঁকা উপপাদ্য" নামে আরও একটা উপন্যাস পাওয়া যেতে পারে বলে গবেষকরা আশংকা প্রকাশ করছেন।
=> গৃহস্তের বাড়িতে হাড়ি চাটতে গিয়ে এক বয়ষ্ক কুকুরের অকাল মৃত্যু। মৃত্যুর কারণ অজ্ঞাত থাকায় মেডিকেল টেস্টের জন্য তাকে খুব শীঘ্রই ইউরেনাস গ্রহে পাঠানো হবে বলে বিশ্লেষকদের মত। ওদিকে মঙ্গল গ্রহ থেকে এই হত্যার দ্বায় স্বীকার করে মুখ বইয়ে এলিয়েনদের বার্তা প্রকাশ। খবরের ভয়াবহতা অনুধাবন করে, মঙ্গল টু পৃথিবী পর্যন্ত সকল জায়গায় জরুরী অবস্থা জারি।
দর্শক মন্ডলি, এবার সময় হয়ে এলো বিদায় নেওয়ার। তবে আজ যাচ্ছি কিন্তু যাচ্ছি না। সমাজের মধ্যে ঘটতে থাকা এমন হাজারও ঘটনা নিয়ে হয়তো আবারও আমি ফিরে আসবো কোন এক সময়, সেই পূর্বের 'বিচ্ছিন্ন ঘটনার অ-বিচ্ছিন্ন ইতিহাস' নামক কোন একটা প্রতিবেদন কে সামনে নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত সব্বাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, এই প্রত্যাশায় আল্লাহ হাফেজ......!!
-----------------------------------------------------সমাপ্ত-----------------------------------------------------
ঠিক একই ধরনের আরও একটি ফান পোস্ট পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুনঃ- ফান পোস্টঃ- দেশ বিদেশের কাঙ্খিত খবর সম্পর্কে জানতে হলে পড়তে হবেঃ- 'আজকের বিচিত্র সংবাদ'
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ- ইহা নিতান্তই একটি অ-বিচ্ছিন্ন ফান পোস্ট। বিধায় এর সাথে বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনার যোগ সূত্র খুঁজতে গেলে আপনি মারাত্মক ভাবে ভুল করবেন। তাছাড়া পোস্টে উল্লেখিত যাবতিয় স্থান, কাল এবং পাত্র সবই অ-বিচ্ছিন্ন ভাবে কাল্পনিক; যার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। সুতরাং এই পোস্টে উল্লেখিত ঘটনার সাথে যদি বাস্তবের কোন মিল খুঁজে পান, তাহলে সেটা হবে একটি বিচ্ছিন্ন ভাবে কাকতালীয় ব্যাপার মাত্র। যার জন্য লেখক, প্রকাশক এবং কর্তৃপক্ষ কোন অংশেই দ্বায়ী থাকবে না।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- টাইপিংয়ের ভুলের কারনে হয়তো অনেক জায়গায় বানানে ভুল থাকতে পারে। সেটাকে বিবেচ্য বিষয় হিসাবে না ধরে, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে কৃতার্থ হবো!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩