পাগল ও নিজের ভালো বুঝে ,কখনো শুনেছেন পাগল পানিতে ডুবে মারা গেছে কিংবা আগুনে পুড়ে মারা গেছে ? মানসিক ভারসাম্য না থাকলেও মানুষের অবচেতন মন ঠিকই বুঝে আগুন ও পানি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে। ইদানিং সংস্কার ও সংবিধান সংশোধন এর কথা শুনলে রাজনীতিবিদরা যে ভাবে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে তাতে মনে হয় ছাত্র জনতা তাদের জোর করে পানি কিংবা আগুনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।তথাকথিত রাজীনিতিবিদ ও দেশের জনগণের মাঝে এ নিয়ে মতবিরোধ দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এখন রাজনীতিবিদরা ধান্দায় আছে বাগড়া বাধিয়ে কোনো ভাবে দ্রুত নির্বাচন সেরে ফেলতে অন্যদিকে দেশের জনগণ কোনো ভাবেই তাদের বিশ্বাস করছে না।
সংস্কার ও সংবিধান সংশোধন নিয়ে রাজনীতিবিদদের করা কিছু মন্তব্য :
বিএনপি’র সিনিয়র নেতারা মির্জা আব্বাস এক অনুষ্ঠানে বলেন : সংবিধান সংশোধন করার আপনারা কে ? পার্লামেন্ট ছাড়াই সংবিধান সংশোধন করে ফেলবেন ? মনে রাখতে হবে, সংবিধান কোনও রাফ খাতা নয় যে, যা খুশি তাই করবেন। সংবিধান সংশোধন কিংবা পুনর্লিখন করতে হলে, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন, যারা স্টেকহোল্ডার রয়েছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তা করতে হবে। আজকে জোরেসোরে এই দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলা হচ্ছে এটা কীসের দ্বিতীয় স্বাধীনতা ? এই কথাটার আবিষ্কার করলো কে ? কোন গোষ্ঠী আবিষ্কার করলো ? কেন করলো ? আমরা স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছি , ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছি এখানে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কী বোঝাতে চান আপনারা ?
শুধু বি এন পি নয় অনান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও একই শুরে গান গাইছেন যেমন গতকাল আন্দালিব রহমান পার্থ এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেন, সংবিধান সংস্কার করতে হলে জনগণের সরকার প্রয়োজন। তাই দেশের প্রয়োজনে দ্রুত নির্বাচন জরুরি।
দীর্ঘ ১৪ বছর পর চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সেখানে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন , ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন সংস্কার শুরু করবে, বাকিরা সেটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। একজনই সংস্কার শেষ করবে সেটি হতে পারে না।দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হলেও ষড়যন্ত্র থেমে নেই এজন্য নির্বাচন যত দেরি হবে ষড়যন্ত্র তত বাড়বে।’’
রাজনীতিবিদরা কেন সংস্কার ও সংবিধান সংশোধন এর বিপক্ষে :
বাংলাদেশে সংসদ সদস্যের ছেলে মে সাংসদ সদস্য হয় ,মন্ত্রীর ছেলে মে মন্ত্রী হয় ,মেয়রের ছেলে মে মেয়র হয় এটা জমিদারি প্রথা। যেই রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে তাদের নেতা কর্মীরা আইন বিচার সব কিছুর উর্ধে উঠে যায়।কোনো ভাবে এক বার সংসদ সদস্য হতে পারলে কপাল খুলে যায় রাজউকের প্লট ,শুল্ক মুক্ত কোটি টাকার গাড়ি ,কুইক রেন্টাল পাওয়ার স্টেশন ,প্রাইভেট ব্যাংক , ইন্সুরেন্স কোম্পানি ,টেলিভিশন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের লাইসেন্স সব কিছু নিমেষেই হাতের মুঠোয় চলে আসে। সংস্কার হলে আগের স্টাইলে জমিদারি প্রথা চালানো কঠিন হবে সেই জন্য তারা সংস্কারের বিপক্ষে ।
দেশের জনগণ কেন রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করে না :
বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের রায় হয়েছিল আওয়ামী লীগের শাসন আমলে সেই আমলে বিচার বিভাগ পৃথক হয়নি। এরপর বিএনপি জামায়াত ৫ বছর ক্ষমতায় ছিল তারাও পৃথকীকরণের রায় বাস্তবায়ন করেনি। শেষ পর্যন্ত যতটুকু হয়েছে, সেটা হয়েছিল, ফখরুদ্দিনের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে। এরপর দেড় দশক শাসন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ তখনো তারা পৃথক সচিবালয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে নি। অর্থাৎ ক্ষমতায় গেলে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ওয়াদা ভঙ্গ করে সেটা একাধিক বার প্রমাণিত হয়েছে ।এখন যারা নির্বাচিত হয়ে সংস্কার ও সংবিধান সংশোধনের কাজে হাত দিবেন বলে ওয়াদা করছেন তারাও যে ভবিষ্যতে পোলটি মারবেন না সেটার গেরান্টি কি ?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৫