somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শিশির খান ১৪
সময় পাইলে ব্লগ লেখাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ব্যাস্ততার ফাকে যারা আমার ব্লগ দেখেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের অনুপ্রেরণা থাকলে নিশ্চই সামনের দিন গুলোতে লেখা চালিয়ে যাবো।

হুজুরদের হালাল WWF রেসলিং ম্যাচ !

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারম এর ভেতর হুজুরদের WWF রেসলিং ম্যাচ যারা দেখেন নাই তারা মিস করছেন। অন্যান্য বার আউট ডোর ভেন্যু তে ম্যাচ হলেও এই বার ইনডোর ভেন্যুতে ম্যাচ হইছে।রেফারি ছিলেন জাতীয় মসজিদের ইমাম যোহরের নামাজের পর মোনাজাত ধরার আগেই মাওলানা সাদ পন্থী vs মাওলানা জুবায়ের পন্থী রেসলিং ম্যাচটি শুরু হয়ে যায় । দেখলাম এক পক্ষ আরেক পক্ষের দিকে প্লাস্টিকের জুতার বাক্স ছুড়ে মারছে প্রতিউত্তরে তারা আবার নামাজ পড়ার টুল গুলো ছুড়ে মারছে এভাবে মসজিদের বিভিন্ন সামগ্রী ছোড়া ছড়ি চললো কিছুক্ষণ।তার পর শুরু হলো টানাটানি কেউ দাড়ি ধইরা টানে কেউ চুল ধইরা টানে।ফাইনাল রাউন্ডে ধস্তা ধস্তি পর্ব শুরুর পর দেখলাম কারো লুঙ্গির গিট খুইলা গেছে আবার কারো পাঞ্জাবি ছিড়া গেছে তাই ধস্তা ধস্তির পর্ব বেশিক্ষন চলে নাই।এখানে একটা ঝামেলা আছে এরা সবাই পাঞ্জাবি পরে ,টুপি মাথায় দেয় ,দাড়ি রাখে ফলে কে কোন দলের অনুসারী বুঝা যায় না ।মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হয়ে নিজেই নিজের দলের লোককে পিটানো শুরু করে আবার অনেক সময় ধস্তা ধস্তি দেখতে যাওয়া উৎসুক জনতা প্রহারের শিকার হন । দুই দলের আলাদা রঙের পাঞ্জাবি থাকলে এই সমস্যা হতো না।

আজকে দেখলাম কাকরাইল মসজিদের দখল নিয়ে দুই পক্ষ বেশ উত্তেজিত। ইতিমধ্যে এক পক্ষ সকাল বেলা দলবল নিয়া মসজিদে ঢুইকা গেছে তারা নাকি আর বের হবে না। ভাবছেন এতো লোকের খাওয়া দাওয়া বাথরুম কোথায় কেমনে কি ? টেনশন নিয়েন না এরা এভাবে দিনের পর দিন থাকতে পারে। দেখবেন এদের সাথে একটা বড় ব্যাগ থাকে সেটার মধ্যে বিছানা মশারি থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিসপত্র থাকে। ওই ব্যাগ সাথে থাকলে এদেরকে নিয়ে সাহারা মরুভূমির মাঝ খানে ফলে দিলেও এরা কয়েক সপ্তাহ টিকে থাকবে ।এরা যখন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় দেখবেন সব লাইন ধরে এক জন আরেক জনের পিছনে পেঙ্গুইনের মতো হাটে। প্রত্যেক গ্রূপের সাথে নিজস্ব হাড়ি পাতিল ও চুলা থাকে।

তবলিক জামাত এর পক্ষে বিপক্ষে নানা রকম যুক্তি আছে আমি সেই বিতর্কে যাবো না।কিন্তু আল্লাহর ঘর মসজিদের ভিতর হানাহানিতে লিপ্ত হওয়াটা আমার কাছে ভালো লাগে নাই। যারা নিজেরা মসজিদের ভিতর মারামারি করে মসজিদের দরজা জানলা ভাঙে তারা আবার আরেক জনকে দীনের জ্ঞান দেয় কি করে ? হাস্যকর আমার তো মনে হয় এরা নিজেরাই বেয়াক্কেল না হলে এমন কাজ কেউ করে ? ধর্ম আসলে খুব স্পশকাতর বিষয় এ নিয়ে কম কথা বলাই ভালো। তবে ভিন দেশের এক জন আলেমের বক্তব্য কে কেন্দ্র করে আমাদের দেশের আলেমরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে নিজেরা মারামারি করে এক ভাই আরেক ভাইকে রক্তাত্ব করবে সেটা কাম্য নয় ।তবলীগ জামাত ২০১৫ সালে ১০ সদস্যের শুরা ব্যবস্থা বাতিল করার মাধ্যমে নিজেরা নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেছে । তাই তাদের কোথায় উত্তেজিত হয়ে বিবাদে জড়ানোটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। যেহেতু হজের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ টঙ্গীর ইজতেমা আমাদের দেশে অনুষ্ঠিত হয় তাই আমার মনে হয় আমাদের দেশের ১০ জন আলেম কে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে নেতৃত্বে আমাদের হাতে নিয়ে দেওয়া উচিত।

তাবলিগ জামাতে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ও বর্তমান অবস্থা

ভারতে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভীর হাতে সৃষ্ট তাবলিগ জামাত শুরু থেকেই ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছিল কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে। বাংলাদেশেও সেভাবেই এর সূচনা হয়। তাবলিগ জামাতে মাদ্রাসা শিক্ষক ও ছাত্রদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।

১৯৯৫ সালে মাওলানা ইনামুল হাসান কান্ধলভী মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তাবলিগের ১০ সদস্যকে নিয়ে শুরা ব্যবস্থা প্রণয়ন করেন। যেন তার অনুপস্থিতিতে শুরা সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এটি ২০১৫ সাল পর্যন্ত বলবৎ ছিল।

২০১৫ সালে তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভীর প্রপৌত্র মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির করা হয়।

২০১৭ সালে মাওলানা সাদ কান্দলভীর কয়েকটি বিবৃতি দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারীদের বিরুদ্ধে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার মুফতি ইব্রাহিম দেসাই এই বিষয়ে 'আস্কইমাম' ওয়েবসাইটে ফতোয়া দেন। এতে মাওলানা সাদের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

২০১৮ সালে তাবলিগ জামাতের মধ্যে ২ পক্ষের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব শুরু হয় দিল্লির নিজামুদ্দিনে। মাওলানা সাদ কান্দলভীকে নিয়ে এই দ্বন্দ্বে পৃথক হয়ে পড়েন তাবলিগের অনুসারীরা। মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে পৃথক ফতোয়া দিয়ে বৈশ্বিকভাবে দারুল উলুম দেওবন্দের নীতি অনুসরণ করা হয় কওমি ও দেওবন্দী মাদ্রাসাগুলোয়।

এই দ্বন্দ্বের রেশ এসে পড়ে বাংলাদেশেও।দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসরণে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার অনুসারীরাও মাওলানা সাদের বিপক্ষে অবস্থান নেন। তারা মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

পরবর্তীতে ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ২ ভাগে বিভক্ত তাবলিগের অনুসারীরা ২ পর্বে ইজতেমার আয়োজন করে আসছেন।


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৫৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোটা না মেধা ? সুপারিশ ! সুপারিশ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭


জুলাই অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কম সমালোচনার শিকার হয় নি। বিএনপি শুরু থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে সমন্বয়ক দের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । শেখ হাসিনার পতনের পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য কত টাকার প্রয়োজন?

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

আপনি নিজে যদি দরিদ্র-ঘরে জন্মগ্রহণ করে না থাকেন, তাহলে বুঝবেন না দারিদ্র্য কাকে বলে। একজন হাড়-বেরুনো বৃদ্ধা ভিখারিনীর দুঃখ দেখে সমব্যথী হতে পারেন, কিন্তু তার ক্ষুদায় আর্ত পেটের বেদনা অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

করোনার দিনে জার্নাল

লিখেছেন সাজিদ উল হক আবির, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৫০

সরকারী ঘোষণা আসার পর , গতকাল ১৪ দিনের জন্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলো। কারণ, করোনা ভাইরাস। সরকারী ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় নোটিস দিয়েছিল - সকল ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হায়রে কপাল মন্দ..........

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:৫৪


চোখ থাকিতেও অন্ধ: এই গানটি খুব সম্ভবত বাংলাদেশের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে শুনেছিলাম। ইহা একটি প্রেমের সংগীত হবে হয়তো। কিন্তু হটাৎ এই গান পড়ছে কেন ?... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত প্রেম/ভারত বিরোধীতা- কোনটাই অতিরিক্ত করার দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:৪০



অনেকে ভারত প্রেম বেশী করতে গিয়ে দেশের বিরোধীতা করে। অনেকে ভারত বিরোধীতা করতে গিয়ে অনেক বড় প্রতিপক্ষের মোকাবেলার পরিবেশ তৈরী করে।ভারত-আমেরিকার মোকাবেলা করতে গিয়ে আমরা আমাদের কাজটা ঠিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×