somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শিশির খান ১৪
সময় পাইলে ব্লগ লেখাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ব্যাস্ততার ফাকে যারা আমার ব্লগ দেখেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের অনুপ্রেরণা থাকলে নিশ্চই সামনের দিন গুলোতে লেখা চালিয়ে যাবো।

ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান ইস্যু “ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও হাসিনা “

১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এবার ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে প্রধান ইস্যু “ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও হাসিনা “ হে ঠিক দেখেছেন আমি ও দেখার পর আকাশ থেকে পড়ছি। মজার বিষয় বাংলাদেশের সাথে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের কোনো সীমানা নেই । ঝাড়খণ্ডে যেতে হলে আরেক রাজ্য পার হয়ে যেতে হয়। আমরা কোনো কাজ শুরুর সময় বিসমিল্লাহ বলে শুরু করি ঠিক তেমনি ভারতীয় জনতা পার্টি ( বি জে পি ) নির্বাচিনী প্রচারণা শুরুর সময় বাংলাদেশিদের গালি দিয়ে শুরু করে ।এটা এখন বিজেপি নেতাদের অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। একটা বিষয় লক্ষ করে দেখলাম বাংলাদেশ থেকে আসা বেক্তি বা পরিবার যদি হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়, তাহলে বিজেপি নেতারা তাদের শরণার্থী বলে আর যদি মুসলমান ধর্মের অনুসারী হয় তাহলে বিজেপি নেতারা তাদের অনুপ্রবেশকারী বলে ।

ভারতীয় জনতা পার্টি ( বি জে পি ) নেতাদের অভিযোগ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ঝাড়খণ্ডের জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আদিবাসী - মূলবাসীরা অদূর ভবিষ্যতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা’ ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী নারীদের নকল বিয়ে করে তাদের ভাগের সমস্ত সুবিধা ভোগ করছে তারা ওই নারীদের সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে, কর্মসংস্থানও লুট করছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ওই অঞ্চলের সামাজিক কাঠামো ভেঙে পড়বে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে।

পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের পাকুড় বা সাঁওতাল পরগণা এলাকায় বিগত দুই-তিন দশকে অনেক বাংলাভাষী মুসলমান বসতি গড়েছেন,এরা আসলে পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার নাগরিক এবং বাংলাভাষী মুসলমান। গঙ্গার নদী ভাঙ্গনের ফলে মালদার দিকে এদের গ্রাম নদীতে তলিয়ে গেছে। প্রাকৃতিক নিয়মেই নদীর একদিকে ভাঙ্গন হলে বিপরীত দিকে চর গজিয়ে ওঠে। মালদার বিপরীতেই ঝাড়খণ্ডের পাকুড় অঞ্চল।পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন ভূমি ও রাজস্ব মন্ত্রী ঝাড়খণ্ডে গিয়ে পাকুড় জেলার ওইসব এলাকা ঘুরে দেখেন । ঝাড়খণ্ড সরকারের কাছে তিনি ওইসব অঞ্চলগুলিকে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ার আবেদন করেন কিন্তু রাজ্যের সরকার রাজি হয় নি, ফলে বিষয়টি আর এগোয় নি। এদেরকে বিজেপি বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী বানায় দিছে।

সর্বশেষ ১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস ও আরজেডি তিন দলের জোট ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেস মিলে সাঁওতাল পরগনায় ১৮টা আসনের মধ্যে ১৩টা আসন জিতেছিল। আর বিজেপি পেয়েছিল মাত্র চারটি আসন। এই রাজ্যে তিনটে ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। একটা হলো হিন্দু ভোট, যা মূলত বিজেপির দিকেই যায়। অন্যটা মুসলিম ভোট, যেটা যায় ইন্ডিয়া জোটের ঝুলিতে। তৃতীয় হলো সাঁওতাল আদিবাসীদের ভোট। বিজেপি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ইস্যু সামনে এনে ওই এলাকার আদিবাসীদের ভোট নিজের ঝুলিতে নেওয়ার চেষ্টা করছে ।

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ঝাড়খণ্ডে এক নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়ে বলেন একবার ঝাড়খণ্ডের বর্তমান সরকার বদলে পদ্ম ফুলের সরকার বানান কথা দিচ্ছি ঝাড়খণ্ড থেকে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করে উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করার কাজটা আমরা করব। এর আগে তিনি বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের উইপোকা বলেছেন এমনকি তাদের বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন ।

নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় বার বার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ইস্যু সামনে আনেন । তিনি বলেন “ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস আর আরজেডি তুষ্টিকরণের রাজনীতিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এই তিনটি দল আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে এখানকার সামাজিক কাঠামো যাতে ভেঙ্গে পড়ে। এই তিনটি দলই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থক। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোট পাওয়ার আশায় তারা এদের ঝাড়খণ্ডের সব জায়গায় প্রতিষ্ঠাপন করছে,”

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এক নির্বাচনি জনসভায় বলেন, “... আমি জানতে চাই বাংলাদেশের সঙ্গে এদের কোনও গোপন সমঝোতা হয়েছে না কি? বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিমান আপনারা এখানে কেন নামতে দিলেন? কী হিসাবে আপনারা তাকে এখানে আশ্রয় দিয়ে রেখেছেন, তার জবাব আমায় দিন,” তিনি ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রফতানি করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।তার কথায়, “এখানে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সেটা আপনারা বাংলাদেশে রফতানি করেন আর আপনারাই আবার বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের কথা বলেন? বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব কার ? সেটা তো কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে! এখানে রাজ্য সরকার কী করবে?”
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৫৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোটা না মেধা ? সুপারিশ ! সুপারিশ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭


জুলাই অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কম সমালোচনার শিকার হয় নি। বিএনপি শুরু থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে সমন্বয়ক দের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । শেখ হাসিনার পতনের পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য কত টাকার প্রয়োজন?

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

আপনি নিজে যদি দরিদ্র-ঘরে জন্মগ্রহণ করে না থাকেন, তাহলে বুঝবেন না দারিদ্র্য কাকে বলে। একজন হাড়-বেরুনো বৃদ্ধা ভিখারিনীর দুঃখ দেখে সমব্যথী হতে পারেন, কিন্তু তার ক্ষুদায় আর্ত পেটের বেদনা অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

করোনার দিনে জার্নাল

লিখেছেন সাজিদ উল হক আবির, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৫০

সরকারী ঘোষণা আসার পর , গতকাল ১৪ দিনের জন্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দিলো। কারণ, করোনা ভাইরাস। সরকারী ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় নোটিস দিয়েছিল - সকল ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হায়রে কপাল মন্দ..........

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:৫৪


চোখ থাকিতেও অন্ধ: এই গানটি খুব সম্ভবত বাংলাদেশের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে শুনেছিলাম। ইহা একটি প্রেমের সংগীত হবে হয়তো। কিন্তু হটাৎ এই গান পড়ছে কেন ?... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত প্রেম/ভারত বিরোধীতা- কোনটাই অতিরিক্ত করার দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:৪০



অনেকে ভারত প্রেম বেশী করতে গিয়ে দেশের বিরোধীতা করে। অনেকে ভারত বিরোধীতা করতে গিয়ে অনেক বড় প্রতিপক্ষের মোকাবেলার পরিবেশ তৈরী করে।ভারত-আমেরিকার মোকাবেলা করতে গিয়ে আমরা আমাদের কাজটা ঠিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×