somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নোবেল বিজয়ের পর প্রথম প্রতিক্রিয়া, হান কাং-এর মুঠোফোনে সাক্ষাৎকার

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হা. কা. : হ্যালো।
জে. রা. : হ্যালো। হান কাং বলছেন?
হা. কা. : জ্বি।
জে. রা. : হায়, আমি জেনি রাইডেন বলছি নোবেল পুরস্কার কমিটি থেকে।
হা. কা. : জ্বি হ্যাঁ। আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগছে।
জে. রা. : আপনার সাথে কথা বলে আমারও ভীষণ ভালো লাগছে। প্রথমত আপনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই এই নোবেল পুরস্কার পাওয়ার জন্য।
হা. কা. : ধন্যবাদ। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জে. রা. : এই মুহূর্তে আপনার কেমন লাগছে নোবেল পুরস্কার পেয়ে?
হা. কা. : আমি সত্যি অনেক বিস্মিত। আর হ্যাঁ অবশ্যই সম্মানিত বোধ করছি।
জে. রা. : এই পুরস্কার পাওয়ার খবরটি আপনি কীভাবে পেলেন?
হা. কা. : কেউ একজন আমাকে ফোন করলো আর খবরটা জানালো। আমি সত্যি ভীষণ অবাক হয়েছি। সেই মুহূর্তে আমি কোরিয়াতেই আমার ছেলের সাথে ডিনার শেষ করেছি মাত্র। ঘড়ির কাঁটায় তখন সন্ধ্যা ৮টা। সুতরাং সত্যি চমৎকার ও প্রশান্তিদায়ক এক সন্ধ্যা। আমি সত্যি ভীষণ অবাক হয়েছি।
জে. রা. : এবং আপনি এখন আপনার সিউলের বাড়িতেই, তাই তো?
হা. কা. : হ্যাঁ আমি সিউলেই, আমার বাড়িতে।
জে. রা. : তাহলে আজ কী করছেন?
হা. কা. : আজ? আজ আমি কোনো কাজ করিনি। একটু বই পড়েছি এবং হাঁটতে বের হয়েছিলাম। আজকের দিনটা খুব সহজ একটি দিন ছিল আমার জন্য।
জে. রা. : আপনি বললেন, আপনি আপনার ছেলের সঙ্গে আছেন। এই খবরে তার প্রতিক্রিয়া কী?
হা. কা. : আমার ছেলেও আমার মতো অবাক হয়েছে। তবে আমাদের দুজনেরই এই নিয়ে আলাপচারিতার সুযোগ এখনও হয়ে ওঠেনি। মোটকথা আমরা দুজনেই বিস্মিত।
জে. রা. : হুম। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়াটা আপনার কাছে কী রকম বিবেচিত হচ্ছে?
হা. কা. : হ্যাঁ, আমি সম্মানিত এবং আপনার ও নোবেল কমিটির সহযোগিতার প্রশংসা করি। আমি নিঃসন্দেহে আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।



জে. রা. : আপনি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। এটা কেমন লাগছে আপনার কাছে?
হা. কা. : হ্যাঁ। আমি ছোট থেকেই বইপত্রের সঙ্গে বড় হয়েছি। তাই ছোট থেকেই আমি কোরিয়ান ও অনূদিত বইপত্র পড়ে পড়ে বেড়ে উঠেছি। তাই আমি বলতেই পারি আমি কোরিয়ান সাহিত্যের সাথে বড় হয়েছি এবং তা আমার মজ্জাগত ব্যাপার। আমি আশা করি এই খবর কোরিয়ান সাহিত্য পাঠক, আমার বন্ধুগণ এবং অন্যান্য লেখকের কাছে আনন্দের ব্যাপার।
জে. রা. : আপনি বললেন আপনি সাহিত্যিক আবহে বড় হয়েছেন। কোন লেখক আপনার লেখালেখির অনুপ্রেরণার গুরুত্বপূর্ণ উৎস বলে আপনি বিবেচনা করেন?
হা. কা. : আমার জন্য, প্রায় সকল লেখকই সামষ্ঠিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ যেহেতু আমি ছোট থেকেই সাহিত্যের সঙ্গে। তাঁরা জীবনের অর্থ খুঁজে বেড়ান। কখনো তাঁরা হারিয়ে যান আবার কখনো তাঁরা সুনিশ্চিতভাবে এগিয়ে যান, তাঁদের পরিশ্রম, তাঁদের শক্তি- সবই আমার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। সুতরাং এটা আমার জন্য ভীষণ কঠিন যে অনুপ্রেরণা হিসেবে গুটিকয়েক লেখককে খুঁজে বের করা।
জে. রা. : আমি একজায়গায় পড়েছিলাম যে সুইডিশ লেখিকা অ্যাস্ট্রিড লিন্ডগ্রেন আপনার অনুপ্রেরণার বড় এক উৎস।
হা. কা. : হ্যাঁ অবশ্যই। আমি যখন ছোট ছিলাম, তাঁর বই ভীষণ পছন্দ করতাম। তাঁর দ্যা ব্রাদার্স লায়নহার্ট আমার খুব ভালো লেগেছিল। কিন্তু তাই বলে আমি এটা বলতে পারি না যে তিনিই আমার শৈশবের অনুপ্রেরণার একমাত্র উৎস। যখন আমি তাঁর দ্যা ব্রাদার্স লায়নহার্ট বইটা পড়ি তখন মানুষের জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কিত আমার প্রশ্নগুলোর সাথে তাঁর বক্তব্যকে মেলাতে পারি।
জে. রা. : কেউ যদি আপনার সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে জানতে চায়, সে কীভাবে শুরু করতে পারে? মানে আপনি তাকে কী পরামর্শ দিবেন?
হা. কা. : আমার বইগুলোর মধ্যে? আমি মনে করি প্রত্যেক লেখকই তাঁর অতি-সাম্প্রতিক বইগুলোকে বেশি পছন্দ করেন। সুতরাং আমার একেবারে সাম্প্রতিক বই যেমন- We Do Not Part অথবা বলা যেতে পারে I Do Not Bid Farewell or Impossible Goodbyes। আমি আশা করি এই বইটা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে এবং Human Acts বইটাও এই বইটার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। তারপর The White Book, যেটা আমার কাছে খুবই ব্যক্তিগত একটি বই কারণ এটা অনেকটাই আত্মজৈবনিক। এছাড়া আছে The Vegetarian। কিন্তু আমি মনে করি We Do Not Part-ই শুরু জন্য সেরা হতে পারে।
জে. রা. : আন্তর্জাতিক পাঠকদের জন্য সম্ভবত The Vegetarian বইটা বেশি পরিচিত। এই উপন্যাসটি সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কী?
হা. কা. : আমি এই বইটা তিন বছর ধরে লিখেছিলাম এবং কিছু কারণে ঐ তিনটি বছর আমার জন্য কঠিন ছিল। তাই আমি মনে করি আমি কেন্দ্রীয় চরিত্রটিকে তুলে ধরতে, তার আশেপাশের চরিত্রগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে বেশ কষ্ট করেছিলাম। গাছগুলো, সূর্যের আলো এমনকি উপন্যাসের প্রতিটি জিনিসই বেশ উজ্জ্বলভাবে এসে ঐ তিনটি বছরে।
জে. রা. : আমি দ্রুতই আলোচনার সমাপ্তিতে যাচ্ছি। আচ্ছা আপনি কি কিছু ভেবেছেন যে কীভাবে এই নোবেল পুরস্কার পাওয়াকে উদযাপন করবেন?
হা. কা. : আপনার সাথে কথা বলা শেষে আমি এক কাপ চা খেতে যাবো। এমনিতে আমি পানীয় পান করি না। আমি আমার ছেলের সাথে চা খেতে যাবো এবং আমি নীরবেই উদযাপন করবো এই রাতে।
জে. রা. : খুব সুন্দর। হ্যাঁ, আপনাকে আবারও অভিনন্দন। অসংখ্য ধন্যবাদ।
হা. কা. : ধন্যবাদ।
জে. রা. : আচ্ছা। শুভ বিদায়।
হা. কা. : ভালো থাকবেন। বিদায়।


অনুবাদ:
সুব্রত দত্ত
লেখক ও শিক্ষক
মিরপুর, ঢাকা।
রাত ৮টা। অক্টোবর ১৬, ২০২৪।

উৎস: ইন্টারনেট।
Han Kang Interview
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৫৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভাট ফুল

লিখেছেন মেঘনা, ১৬ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪

বৃষ্টির ফোটার মতন ঝরে পড়ে পাতা
ফাল্গুনের তাপদ্রাহে ।

আমি তার আগে। সামনে সমতল
প্লাস্টিক, ছেঁড়া কাগজ, পাতা পোড়া ছাই -
একাকিত্বের বিলাসিতায় মগ্ন হয়ে যাই ।

কল্পনায় আমি এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আবরার ফাহাদ হত্যায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৬ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:৩৫



বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

রোববার বেলা ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

তথ্য বাবার আপডেটেড তথ্য....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৬ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯

তথ্য বাবার আপডেটেড তথ্য....

প্রত্যাপশালী কুখ্যাত লেডি হিটলার শেখ হাসিনার ছেলে জয়। জাতির সাড়ে হাজার ভাগ্নের একাল- সেকাল। আজ নিঃসঙ্গ! কেউ নেই পাশে। জুতার গ্লু টানা টোকাইদের মতো অবস্থা।


তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াতের ইফতার মাহফিলে কাদের সিদ্দিকী কি করেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৯


বাংলাদেশের শিক্ষিত প্রজন্ম রাজনীতির প্রতি বিমুখ কারণ তারা পল্টিবাজ রাজনীতিবিদ দের কার্যক্রম দেখে হতাশ। রাজনৈতিক ভাবে সুবিধা নেয়ার জন্য তারা নিজেদের অর্জিত সম্মান বিসর্জন দিতে কার্পণ্য করেন না। জুলাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের দুয়েকজন সৎ রাজনীতিবিদের নাম বলুন

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ১৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৪৪


আর্থিক বিষয়ে পরিষ্কার কয়েকজন রাজনীতিবিদের নাম জানতে চাচ্ছি। ১৯৯১ সালে বহুদলীয় রাজনীতি প্রবর্তিত হওয়ার পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে সৎ কারা ছিলেন?

আমি জাতীয় চার নেতার এক নেতার ছেলে সৈয়দ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×