ভালোবাসার কোটা শেষ,
প্রেমিক হতে পারবে না যে।
শোনো ছেলে!!
তারচে বরং খুব সকালে,
জল তরঙ্গে টুংটাং তুলে
পাঠিয়ে দিও খুদেবার্তা।
ঘুম ভাঙলেই বলবে তুমি
"শুভ সকাল রাজকন্যা!!"
শেষ বিকেলে দাঁড়িয়ে থেকো গলির মোড়ে।
হঠাৎ যখন দমকা বাতাস, উড়বে আমার ঘরের পর্দা,
জানালাতে চোখ রাখলেই দেখব
তুমি তাকিয়ে আছো,
বিষণ্ণ চোখ, অপলক,
বুকের মাঝে একটু খানি আলোর ঝলক।
কখনোবা হেঁটে গেলে আশে পাশে,
পাঠিয়ে দিও খুদে বার্তা
"বাতাসে আজ ছাতিম ফুলের গন্ধ ভাসে!!"
কোনদিন পড়লে শাড়ি
মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থেকো,
হঠাৎ করেই বলে উঠো
"লাগছে তোমায় নীল পদ্ম!!"
ভ্যালেন্টাইনে সবার হাতে গোলাপ তোড়া,
তুমি না হয় দিও আমায় একগুচ্ছ জারুল ফুল!!
ঝড় বাদলে সবাই যখন আশ্রয় খোঁজে,
একলা আমি ভিজে হাঁটি এই শহরের ফুটপাতে,
তখন না হয় পাশে হেঁটো
বৃষ্টি জলে, মেঘের ছায়ায়।
অভিমানীর রাত্রি জাগা,
চোখের জলে বালিশ ভেজা,
রাত গহীনে অবাক করে
ফিসফিসিয়ে বোলো নাহয়
"জেগে আছি রাজকন্যা!!
তোমার জন্য সমস্ত রাত...
ঘুমের হরতাল...রোদের গন্ধ...
মেঘের কান্না...পাগলা হাওয়া...
বৃষ্টি বাদল...হাসনাহেনা ফুলের গন্ধ!!"
ভালোবাসার কোটা শেষ,
প্রেমিক পুরুষ অনেক আছে।
তুমি না হয় পাগল হলে,
অর্থহীন, অবান্তর, আর অকারণই।
শোন ছেলে!!
তুমি না হয় পাগল হলে,
আমার একটা একমাত্র নিজের পাগল!!
© শিখা রহমান
সিরিজের আগের পংক্তিমালারাঃ
কেবলই ভালোবাসি (পাগলামির পংক্তিমালা - ২)
নন্দিণী আর শুভঙ্কর (পাগলামির পংক্তিমালা - ১)
বিঃ দ্রঃ একদা অন্তর্জালের নিঝুমপুর নামের এক অলীক শহরে জয় নামের চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এক সদ্যজাত যুবক ভালোবেসে ফেলেছিল অরণী নামের এক বিদ্যুৎশিখাকে।
যখন দেখা তখন দু’জনেই সংসারী। বসবাস দুই গোলার্ধে আর মাঝখানে অনতিক্রম্য সমুদ্র। দিগন্তরেখা পেরিয়ে ক্ষুদেবার্তায় চলতে থাকে টুকটাক আলাপচারিতা, নুন হলুদের গন্ধ মাখা দাম্পত্যের মাপজোখ আর স্বপ্নমাখা পাগলামি।
ওদের কখনোই কোন গল্প ছিলো না। কিছু একান্নবর্তী স্বপ্ন ছিলো। শুধু পরষ্পরকে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকা ছিলো...সেই খাপছাড়া কবিতার মতো, পংক্তিমালায় অন্ত্যমিল নেই। অথচ স্রোতস্বিনী অন্তহীন বয়ে চলার ছন্দ আছে।
ঐ দুজনের গোপন ভালোবাসাবাসির আর পাগলামির নিত্যসঙ্গী ছিলাম আমি। জানতে চেয়েছিলাম কৌতুহলী হয়ে একবার “কেমন করে দেখা হল, দেখা হয় তোমাদের?” অরণী হেসে উঠে বলেছিলো “যেমন করে বিদ্যুৎশিখার সঙ্গে আকাশের দেখা হয়, হঠাৎ করে চমকে যাওয়ার মতো। এখানে ওখানে রাস্তা ঘাটে তো প্রায়ই দেখতে পাই ওকে, যেমন করে ছায়া দেখে তার অবয়বকে।“
ওদের দুজনের শুধু ছিলো, শুধুমাত্র রয়ে গেছে হৃদিভরা একরাশ পাগলামি!! তাদের আবীর মাখানো কথোপকথনগুলো লিখে রাখতে ইচ্ছে হলো অনেক আলোকবর্ষ পেরিয়ে এমনই হঠাত দেখা হয়ে যাওয়া কোন জয় আর অরণীর জন্যে!! “যারা ভালোবাসে, ভালোবেসে জ্বলে, জ্বলে পৃথিবীর দিগন্তকে রাঙিয়ে দেয় ভিন্ন এক গোধূলি-আলোয়, তাদের সকলেরই অনেক আপন-কথা, গোপন-কথা রয়ে গেছে এর ভিতরে।“
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২৭