এই মেয়ে!!
আমার ‘ক্লিওপেট্রা,
ভালোবাসা মানে কি জানো?
খুবই সহজ…'শুধু 'তুমি'।
'তুমি' আর 'তুমি'। স্রেফ 'তুমি'।
আমার 'তুমি', আমার সারাবেলা।
কি প্রচন্ড সে ভালোবাসা জানো?
সকাল নেই, বিকেল নেই, সাঁঝ নেই, রাত্রি নেই, দুপুর নেই…
কেবল ভালোবাসি আর ভালোবাসি।
বিরতিহীন ক্লোজডোর ভালোবাসা।
অফিস ডেস্কে বসে ভালোবাসি।
কিবোর্ডে খটাখট করতে করতে ভালোবাসি।
বসের বিরক্তিকর লেকচার শুনতে শুনতে ভালবাসি।
সুন্দরী রিসেপশনিস্টকে গুড মর্নিং
কিংবা সায়োনারা বলতে বলতে ভালোবাসি।
হাবা সাবঅর্ডিনেটকে হাসিচ্ছলে ধমকাতে ধমকাতে ভালোবাসি।
বুক ভরা নিকোটিনের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে ভালোবাসি।
ক্যাফেটেরিয়ায় স্যান্ডউইচ কিংবা রোল চিবোতে চিবোতে ভালোবাসি।
অসহ্য ট্রাফিক জ্যামে বিরক্ত হতে হতে ভালোবাসি।
ক্লান্তি ছাপিয়ে সিঁড়ি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ভালোবাসি।
লিফটের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভালোবাসি।
ঘরে ঢুকে কাপড় ছাড়তে ছাড়তে ভালোবাসি।
ইয়োগার আসনে মেডিটেশন করতে করতে ভালোবাসি।
আনমনে স্যুপের চামচ নাড়তে নাড়তে ভালোবাসি।
টিভির রিমোর্ট এলোমেলো চাপতে চাপতে ভালোবাসি।
বিছানায় গড়াতে গড়াতে ভালোবাসি।
অবাধ্য চোখদুটো বুজতে বুজতে ভালোবাসি।
ভাবতে ভাবতে ভালোবাসি,
আবার না ভেবেও ভালোবাসি।
আদতে ভালোবাসা সে অক্সিজেন।
বাঁচার ভারি সুখ.......
© শিখা রহমান
সিরিজের আগের পংক্তিমালারাঃ
নন্দিণী আর শুভঙ্কর (পাগলামির পংক্তিমালা - ১)
বিঃ দ্রঃ একদা অন্তর্জালের নিঝুমপুর নামের এক অলীক শহরে জয় নামের চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এক সদ্যজাত যুবক ভালোবেসে ফেলেছিল অরণী নামের এক বিদ্যুৎশিখাকে।
যখন দেখা তখন দু’জনেই সংসারী। বসবাস দুই গোলার্ধে আর মাঝখানে অনতিক্রম্য সমুদ্র। দিগন্তরেখা পেরিয়ে ক্ষুদেবার্তায় চলতে থাকে টুকটাক আলাপচারিতা, নুন হলুদের গন্ধ মাখা দাম্পত্যের মাপজোখ আর স্বপ্নমাখা পাগলামি।
ওদের কখনোই কোন গল্প ছিলো না। কিছু একান্নবর্তী স্বপ্ন ছিলো। শুধু পরষ্পরকে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকা ছিলো...সেই খাপছাড়া কবিতার মতো, পংক্তিমালায় অন্ত্যমিল নেই। অথচ স্রোতস্বিনী অন্তহীন বয়ে চলার ছন্দ আছে।
ঐ দুজনের গোপন ভালোবাসাবাসির আর পাগলামির নিত্যসঙ্গী ছিলাম আমি। জানতে চেয়েছিলাম কৌতুহলী হয়ে একবার “কেমন করে দেখা হল, দেখা হয় তোমাদের?” অরণী হেসে উঠে বলেছিলো “যেমন করে বিদ্যুৎশিখার সঙ্গে আকাশের দেখা হয়, হঠাৎ করে চমকে যাওয়ার মতো। এখানে ওখানে রাস্তা ঘাটে তো প্রায়ই দেখতে পাই ওকে, যেমন করে ছায়া দেখে তার অবয়বকে।“
ওদের দুজনের শুধু ছিলো, শুধুমাত্র রয়ে গেছে হৃদিভরা একরাশ পাগলামি!! তাদের আবীর মাখানো কথোপকথনগুলো লিখে রাখতে ইচ্ছে হলো অনেক আলোকবর্ষ পেরিয়ে এমনই হঠাত দেখা হয়ে যাওয়া কোন জয় আর অরণীর জন্যে!! “যারা ভালোবাসে, ভালোবেসে জ্বলে, জ্বলে পৃথিবীর দিগন্তকে রাঙিয়ে দেয় ভিন্ন এক গোধূলি-আলোয়, তাদের সকলেরই অনেক আপন-কথা, গোপন-কথা রয়ে গেছে এর ভিতরে।“
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৬