তোমার ঘরে বিসর্জনের ছায়া দেখে চোমকে উঠি মা-
জীবনের ৩৮ বছর পার করেছো ,কম সময়তো নয় ;
কেমনে কাটালে এ মানুষটার সাথে ,ভাবলেই গায়ের রক্ত হীম হয়ে আসে।
এর সাথে তোমার গভীর প্রণয় ছিল যে তোমার জন্মদিনটাও মনে রাখে নি।
নাকি বয়স হলেই ভুলে যেতে হয় সব !তবে তুমি কেন মনে রাখো -
বাবা মুরগীর থানটা ভীষন ভালোবাসে ,ডালে তার গ্যাসের ব্যাথা।
তুমি কেন এই বয়সে নিজের কথা ভুলে গিয়ে তার পছন্দের টেবিল সাজাও ?
তোমারোতো কম বেলা হলো না ;৫৭ বছরের দীর্ঘ প্রহর।
এই রুগ্ন শরীরেও ভোরের আজান তোমায় ডেকে তুলে -
দু'হাত তুলে প্রভুর কাছে কি চাও তুমি মা ?
চোখের জলে বাবার সুস্হ জীবন চাও ,ছেলের হয়ে বুক ভাসিয়ে মাফ চেয়ে নাও।
নিজের জন্যে কিছু চাওয়ার সময় কোথায় মা ?
১০৩ জ্বরেও তুমি বিলাপ করো -বাবার গোসলে গরম জল লাগবে ;
ছেলের টেবিলে ডিম সেদ্ধ দিতে হবে।
তোমার মাথায় হাতটি রেখে কেউ কি বসে মা ?
সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়েই চলতে থাকো তুমি ;
গরম রুটি আর ভাজির সাথে রাতের খাবার থাকে ,
তোমার খাবার পড়ে থাকে কে বা মনে রাখে।
লোকাল বাসে হাত ঘামিয়ে নিজের ডেস্কে বসো ;
মলিন হাসির ক্লান্ত চোখে কাগজ -কলম ঘষো ;
এই বয়সে কেন এতো কাজ করো মা তুমি ?
খানিক হেসে বললে সেদিন-"শখ করেইতো গিয়েছিলাম সময় কাটবে বলে ,
জানতো কি কেউ এমন করে সবাই বোঝা হবে!"
বাড়ীর ভাড়া ,সিকিউরিটি ,ডিসের ভাড়াও মেটাও ;
তোমার হাতে রিমোটখানা দেখিনি একটি বারও ।
হাসি লুকাই যখন বাবাকে বলি -মার নম্বরটি চাই ,
মোবাইলের কন্ট্যাক্ট লিস্ট শুধুই ঘাটতে থাকে।
গ্রামীন ফোনের গ্রাহক তুমি আজ ১৪ বছর ;
তোমার স্বামীর মুখস্হ নেই ছোট্ট একটা নম্বর !
কিসের আশায় এ সংসারে পড়ে থাকো মা ?
বিচিত্র এক তোমায় দেখে মনে মনে ভাবি-
ভালোবাসা এক অন্ধ পথ ; ভোলায় সকল দাবী।
মগবাজার টু পান্হপথ সবই তোমার জানা -
শুধু জানোনি অধিকারটা আদায় করার মন্ত্র।
বেলা শেষে চিকিৎসাতে চুরীর ভরী মাপো ;
তোমার স্বামী সুগন্ধি দেয় আতর মেখে ঘুরে।
এবার একটু ক্ষান্ত দাও মা অনেকতো হলো -
সব কিছুর ঊর্ধে গিয়ে এবার নিজের জন্যে বাঁচো।