ধূমপান হচ্ছে তামাক জাতীয় দ্রব্যাদি বিশেষ উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে শ্বাসের সাথে তার ধোঁয়া শরীরে গ্রহণের প্রক্রিয়া। সাধারণ যেকোনো দ্রব্যের পোড়ানো ধোঁয়া শ্বাসের সাথে প্রবেশ করলে তাকে ধূমপান বলা গেলেও মূলত তামাকজাতীয় দ্রব্যাদির পোড়া ধোঁয়া গ্রহণকেই ধূমপান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকগণসহ মোটামুটি সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত যে, ধূমপান যক্ষ্মা, ফুসফুসের ক্যান্সার সহ নানা রোগের অন্যতম প্রধান কারণ এবং ধারক ও বাহক।
'ধূমপান' শব্দটি 'ধূম' এবং 'পান' শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। ধূম হলো 'ধোঁয়া' বা বাষ্পের প্রতিশব্দ। যেহেতু তামাকজাতীয় পদার্থের ধোঁয়া গ্রহণ করা হয় বা পান করা হয়, তাই একে 'ধোঁয়া পান' করা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, সে হিসেবে ধূমপান শব্দটি গঠিত। ধুমপান মূলত, ২টি উপায়ে সেবন করা হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে, সক্রিয়, অপরটি নিস্ক্রিয়।
সক্রিয় ধূমপান :ধূমপায়ী যে অবস্থায় জলন্ত সিগারেট বা বিড়ি বা চুরুট থেকে উদ্ভূত ধোঁয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে টেনে সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করায় তাকে সক্রিয় ধূম্পান বলে।
নিস্ক্রিয় ধূমপান :ধূমপানের সময় ধোঁয়ার যে অংশ চারপাশের পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনৈচ্ছিকভাবে মানুষের দেহে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে প্রবেশ করে নিস্ক্রিয় ধূমপান বলে।
গবেষণায় দেখা গেছে সিগারেটের ধূমপানে নিকোটিনসহ ৫৬টি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বিরাজমান। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বের ১৯২টি দেশে পরিচালিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিজে ধূমপান না করলেও অন্যের ধূমপানের (পরোক্ষ ধূমপান) প্রভাবে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ৬,০০,০০০ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ১,৬৫,০০০-ই হলো শিশু। শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগও দেখা দেয়। গবেষণায়ও এও বেরিয়ে এসেছে যে, পরোক্ষ ধূমপান পুরুষের তুলনায় নারীর উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৮১,০০০ নারী মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে পরিচালিত এজাতীয় আরেকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিলো যে, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ৪০% শিশু, ৩৩% অধূমপায়ী পুরুষ এবং ৩৫% অধূমপায়ী নারী রয়েছেন। তাতে এও ফুটে ওঠে যে, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন ইউরোপ ও এশিয়ার মানুষ।
ক্যান্সার উৎপাদনে ধূমপানের প্রভাবঃ সিগারেটের ধোঁয়ায় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী মিউটাজেন থাকে। এরা মানুষের মুখ, শ্বাসনালি,গ্রাসনালি এবং ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
ব্রংকাইটিসঃ ধূমপান থেকে শ্বাসনালিতে প্রদাহ এবং কাশির সৃষ্টি হয়। একে ব্রংকাইটিস বলে। এতে শ্বাসনালি ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়। হাঁপানি শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি হয়। ফুসফস অনেকাংশে নিষ্ক্রিয় হয়।
এমফাইসিমাঃ ধূমপানের ফলে শ্বাসনালিগুলোর বায়ুপথসমূহ সরু হয় এবং ফুসফুসে অতি স্ফীতি দেখা দেয়। একে এমফাইসিমা বলে। এর ফলে ফুসফুসে জটিল পরিবরতন লক্ষিত হয়।
উদ্গারি কাশিঃ ধূমপানের জন্য অনেকের প্রচন্ড কাশি এবং কাশির সাথে ফুসফুস থেকে মিউকাস বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। একে উদ্গারি কাশি বলে।
সমাজ শব্দের অর্থ সহযোগিতা। আপনি, আমি বা আমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ধুমপানের বিপক্ষে অর্থাৎ ধুমপানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ সহ প্রতিকার করতে পারি। যা শুরু হতে পারে ব্যাক্তি, পরিবার, সমাজ,পাড়া, মহল্ল্যা,থানা, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ক্রমান্নয়ে দেশ পর্যায়ে যারা কর্তা ব্যক্তি প্রশাসনে আছেন সবার আগে তাদের আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ধুমপান বন্ধ করার জন্য কঠিন থেকে কঠিনতর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে হবে। বেসরকারী এনজিও, ইলেক্ট্রনিক্স ওি প্রিন্ট মিডিয়া সরাসরি ধুমপানের কুফল সম্পর্কে বিজ্ঞাপন, নাটোক, সিনেমা, আর্টিকেল সহ এর বিরুপ প্রভাব সম্পর্কে জনগণের কাছে সরাসরি প্রচার করতে হবে।
বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন যদি প্রত্যক্ষ করে তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে তামাক বা ধুমাপান বন্ধ করা সহজ থেকে সহজতর হবে। শুধু তাই নয়, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা বা সকল প্রকার ধর্মীয় উপসানলয়ে দায়িত্বরত কর্তা ব্যক্তিরা ধুমপানের কুফল সম্পর্কে প্রচার করে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশে প্রচলিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর ৪ ধারা অনুযায়ী প্রকাশ্যে ধূমপানের ফলে জরিমানা হিসেবে প্রথমবার অনধিক ৳৩০০ (তিন শত) টাকা এবং দ্বিতীয় বা পরবর্তী প্রতিবারের জন্য দ্বিগুন টাকা দিতে হয়। এছাড়া ১০ধারা অনুযায়ী সিগারেট, বিড়ি ইত্যাদি তামাকজাতীয় দ্রব্যের মোড়কে 'ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর' কিংবা 'ধূমপান হৃদরোগের কারণ' লেখা বাধ্যতামূলক। আমার মতে, লেখাটি এমন একটা বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে যে, আপনি ধুমপান করুন, না করলে বুঝবেন না, এর ভেতরে কি আছে! এটা এক ধরণের বড় ধরনে আইনি প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না।
অবাক করা ব্যাপার পরোক্ষ ধুমপানের কারনে বছরে প্রায় ছয় লক্ষ লোক ইহকাল ত্যাগ করে। একজন সচেতন মানুষ, ইচ্ছে করে বুঝে শুনে, জমের দ্বারে আর যাই হোক ঘুরাঘুরি করতে যাবেনা। কিন্তু, বর্তমান জেনারেশনের স্টাইলিং ফ্যাশন হচ্ছে
“রংচটা জিনসের পেন্ট পড়া, জলন্ত সিগারেট মুখে ধরা”
ভাবতে খারাপ লাগে, আমরা সব খারাপ দিক দিয়ে এগিয়ে গিয়েছি।
পাঠক, বাংলাদেশে যত আইন অমান্য করা হয়, তার মধ্যে এই এই আইনটা অমান্য করা হয় গণহারে। আসুন লক্ষ্য করি-
যেহেতু ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর;
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম সম্মেলনে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিরুত্সাহিত করার জন্য Framework Convention on Tobacco Control (FCTC) নামীয় কনভেনশনে বাংলাদেশ ১৬ জুন, ২০০৩ ইং তারিখে স্বাক্ষর এবং ১০ মে, ২০০৪ ইং তারিখে অনুস্বাক্ষর করিয়াছে; এবং যেহেতু উক্ত কনভেনশনের বিধানাবলী বাংলাদেশে কার্যকর করার লক্ষ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উত্পাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
(১) এই আইন ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ নামে অভিহিত হইবে৷
(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের বিভিন্ন ধারা কার্যকর করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করা যাইবে৷
সংজ্ঞাঃ
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
১[ (ক) “কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা” অর্থ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বা তাঁহার সমমানের বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপালনের জন্য কোন আইনের অধীন, বা সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোন বা সকল কর্মকর্তাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(খ) “তামাক” অর্থ কোন নিকোটিনা টাবাকাম বা নিকোটিনা রাসটিকার শ্রেণিভুক্ত উদ্ভিদ বা এতদ্সম্পর্কিত অন্য কোন উদ্ভিদ বা উহাদের কোন পাতা বা ফসল, শিকড়, ডাল বা উহার কোন অংশ বা অংশ বিশেষ;
(গ) “তামাকজাত দ্রব্য” অর্থ তামাক, তামাক পাতা বা উহার নির্যাস হইতে প্রস্তুত যে কোন দ্রব্য, যাহা চোষণ বা চিবানোর মাধ্যমে গ্রহণ করা যায় বা ধূমপানের মাধ্যমে শ্বাসের সহিত টানিয়া লওয়া যায় এবং বিড়ি, সিগারেট, চুরুট, গুল, জর্দ্দা, খৈনী, সাদাপাতা, সিগার এবং হুক্কা বা পাইপের ব্যবহার্য মিশ্রণও (mixture) ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;]
(ঘ) “ধূমপান” অর্থ কোন তামাকজাত দ্রব্যের ধোঁয়া শ্বাসের সহিত টানিয়া নেওয়া বা বাহির করা, এবং কোন প্রজ্বলিত তামাকজাত দ্রব্য ধারণ করা বা নিয়ন্ত্রণ করাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(ঙ) “ধূমপান এলাকা” অর্থ কোন পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহণে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্টকৃত কোন এলাকা;
২[ (চ) “পাবলিক প্লেস” অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, আধা-সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও বেসরকারি অফিস, গ্রন্থাগার, লিফট, আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্র (indoor work place), হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, আদালত ভবন, বিমানবন্দর ভবন, সমুদ্রবন্দর ভবন, নৌ-বন্দর ভবন, রেলওয়ে স্টেশন ভবন, বাস টার্নিমাল ভবন, প্রেক্ষাগৃহ, প্রদর্শনী কেন্দ্র, থিয়েটার হল, বিপণী ভবন, চতুর্দিকে দেয়াল দ্বারা আবদ্ধ রেস্টুরেন্ট, পাবলিক টয়লেট, শিশুপার্ক, মেলা বা পাবলিক পরিবহনে আরোহণের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সারি, জনসাধারণ কর্তৃক সম্মিলিতভাবে ব্যবহার্য অন্য কোন স্থান অথবা সরকার বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, সময় সময় ঘোষিত অন্য যে কোন বা সকল স্থান;]
(ছ) “পাবলিক পরিবহণ” অর্থ মোটর গাড়ী, বাস, রেলগাড়ী, ট্রাম, জাহাজ, লঞ্চ, যান্ত্রিক সকল প্রকার জন-যানবাহন, উড়োজাহাজ এবং সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্দিষ্টকৃত বা ঘোষিত অন্য যে কোন যান;
(জ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; এবং
৩[ (ঝ) “ব্যক্তি” অর্থে কোম্পানী, সমিতি, সংস্থা বা ব্যক্তি সমষ্টি, সংবিধিবদ্ধ হউক বা না হউক, তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী বা পরিবেশনকারীও অন্তর্ভুক্ত হইবে।]
অন্যান্য আইনের প্রয়োগ
৩৷ এই আইনের বিধানাবলী, উহাতে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, the Railways, Act, 1890 (Act IX of 1890), ৪[ ***], the Dhaka Metropolitan Police Ordinance, 1976 (Ord. No. III of 1976), the Chittagong Metropolitan Police Ordinance, 1978 (Ord. No. XLVIII of 1978), the Khulna Metropolitan Police Ordinance, 1985 (Ord. No. LII of 1985) এবং রাজশাহী মহানগরী পুলিশ আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ২৩ নং আইন) ৫[ ,সিলেট মহানগরী পুলিশ আইন, , ২০০৯ (২০০৯ সনের ২৩ নং আইন), বরিশাল মহানগরী পুলিশ আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ২৪ নং আইন)] সহ আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইন এর অতিরিক্ত, এবং উহাদের হানিকর নয়, বলিয়া গণ্য হইবে৷
পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহণে ধূমপান নিষিদ্ধঃ
৪৷ (১) ধারা ৭ এর বিধান সাপেক্ষে, কোন ব্যক্তি কোন পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহণে ধূমপান করিতে পারিবেন না৷
৬[ (২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক তিনশত টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরণের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হইবেন।]
তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিধানঃ
৭[ ৫। (১) কোন ব্যক্তি-
(ক) প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোন বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোন ভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করিবেন না বা করাইবেন না;
(খ) তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়ে প্রলুব্ধকরণের উদ্দেশ্যে, উহার কোন নমুনা, বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে, জনসাধারণকে প্রদান বা প্রদানের প্রস্তাব করিবেন না বা করাইবেন না;
(গ) তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার বা উহার ব্যবহার উৎপাদিত করিবার উদ্দেশ্যে, কোন দান, পুরস্কার, বৃত্তি প্রদান, বা কোন অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার (sponsor) বহন করিবেন না বা করাইবেন না)
(ঘ) কোন প্রেক্ষাগৃহে, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বা ওয়েব পেজে তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য সম্পর্কিত কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করিবেন না বা করাইবেন না;
(ঙ) বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বা লভ্য ও প্রচারিত, বিদেশে প্রস্তুতকৃত কোন সিনেমা, নাটক বা প্রামাণ্য চিত্রে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, মঞ্চ অনুষ্ঠান বা অন্য কোন গণমাধ্যমে প্রচার, প্রদর্শন বা বর্ণনা করিবেন না বা করাইবেন না:
তবে শর্ত থাকে যে, কোন সিনেমার কাহিনীর প্রয়োজনে অত্যাবশ্যক হইলে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার দৃশ্য রহিয়াছে এইরূপ কোন সিনেমা প্রদর্শনকালে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে লিখিত সতর্কবাণী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, পর্দায় প্রদর্শনপূর্বক উহা প্রদর্শন করা যাইবে;
(চ) তামাকজাত দ্রব্যের মোড়ক, প্যাকেট বা কৌটার অনুরূপ বা সাদৃশ্য অন্য কোন দ্রব্য বা পণ্যের মোড়ক, প্যাকেট বা কৌটার উৎপাদন, বিক্রয় বা বিতরণ করিবেন না বা করাইবেন না;
(ছ) তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে (point of sales) যে কোন উপায়ে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করিবেন না বা করাইবেন না।
ব্যাখ্যা-
উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার” অর্থ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো তামাকজাত দ্রব্য বা তামাকের ব্যবহার প্রবর্ধনের উদ্দেশ্যে যে কোন ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এর কোন কিছুই তামাক বিরোধী স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ক প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
(৩) কোন ব্যক্তি সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচীর (Corporate Social Responsibility) অংশ হিসেবে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করিলে বা উক্ত কর্মকাণ্ড বাবদ ব্যয়িত অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে কোন তামাক বা তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, সাইন, ট্রেডমার্ক, প্রতীক ব্যবহার করিবে না বা করাইবে না অথবা উহা ব্যবহারে অন্য কোন ব্যক্তিকে উৎসাহ প্রদান করিবেন না।
(৪) কোন ব্যক্তি এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হইবেন।]
অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন নিষিদ্ধঃ
৮[ ৬।(১) কোন ব্যক্তি কোন স্থানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করিতে পারিবেন না।
(২) কোন ব্যক্তি এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন স্থানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করিলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা
পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হইবেন।]
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির নিকট তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ, ইত্যাদি
৯[ ৬ক। (১) কোন ব্যক্তি অনধিক আঠারো বৎসর বয়সের কোন ব্যক্তির নিকট তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করিবেন না, অথবা উক্ত ব্যক্তিকে তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য বিপণন বা বিতরণ কাজে নিয়োজিত করিবেন না বা করাইবেন না।
(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হইবেন।]
ধূমপান এলাকার ব্যবস্থাঃ
৭৷ (১) কোন পাবলিক প্লেসের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক বা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক উহাতে এবং কোন পাবলিক পরিবহণের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক উহাতে ধূমপানের জন্য স্থান চিহ্নিত বা নির্দিষ্ট করিয়া দিতে পারিবেন৷
(২) কোন পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহণে ধূমপানের স্থানের সীমানা, বর্ণনা, সরঞ্জাম এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনের মালিক, ইত্যাদির দায়িত্বঃ
১০[ ৭ক। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রত্যেক পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক বিধি দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রণীত বিধির বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক পাঁচশত টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।]
সতর্কতামূলক নোটিশ প্রদর্শনঃ
৮৷ ১১[ (১) ধারা ৭ এর অধীন ধূমপান এলাকা হিসাবে চিহ্নিত বা নির্দিষ্ট স্থানের বাহিরে প্রত্যেক পাবলিক প্লেসের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক উক্ত স্থানের এক বা একাধিক জায়গায় এবং পাবলিক পরিবহণের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক সংশ্লিষ্ট যানবাহনে “ধূমপান হইতে বিরত থাকুন, ইহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ” সম্বলিত নোটিশ বাংলা এবং ইরেজী ভাষায় প্রদর্শন করিবার ব্যবস্থা করিবেন৷
(২) কোন পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক বা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক এক হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরণের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হইবেন।]
কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ক্ষমতাঃ
৯৷ (১) এই আইনের বিধান কার্যকর করার উদ্দেশ্যে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে কোন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে প্রবেশ করিয়া পরিদর্শন করিতে পারিবেন৷
(২) এই আইনের বিধান লংঘন করিয়াছেন এমন কোন ব্যক্তিকে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহণ হইতে বহিষ্কার করিতে পারিবেন৷
(৩) এই আইনের বিধান লংঘন করিয়া কোন ব্যক্তি যদি কোন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করেন বা বিক্রয় করার প্রস্তাব করেন, তাহা হইলে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত তামাকজাত দ্রব্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ব্যবহার, হস্তান্তর, ধ্বংস বা বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবেন৷
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোন কার্যক্রম গৃহীত হইলে তত্সম্পর্কে কার্যক্রম গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকারকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন৷
তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য ক্ষতি সম্পর্কিত সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ, ইত্যাদি
১২[ ১০। (১) তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটার উভয় পার্শ্বে মূল প্রদর্শনী তল বা যে সকল প্যাকেটে দুইটি প্রধান পার্শ্বদেশ নাই সেই সকল প্যাকেটের মূল প্রদর্শনী তলের উপরিভাগে অন্যূন শতকরা পঞ্চাশ ভাগ পরিমাণ স্থান জুড়িয়া তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি সম্পর্কে, রঙ্গিন ছবি ও লেখা সম্বলিত, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কবাণী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বাংলায় মুদ্রণ করিতে হইবে।
(২) তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটায় নিম্নবর্ণিত সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ করিতে হইবে, যথা:-
(ক) ধূমপানে ব্যবহৃত তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে:-
(অ) ধূমপানের কারণে গলায় ও ফুসফুসে ক্যান্সার হয়;
(আ) ধূমপানের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়;
(ই) ধূমপানের কারণে স্ট্রোক হয়;
(ঈ) ধূমপানের কারণে হৃদরোগ হয়;
(উ) পরোক্ষ ধূমপানের কারণে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হয়;
(ঊ) ধূমপানের কারণে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হয়;
(খ) ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে:-
(অ) তামাকজাত দ্রব্য সেবনে মুখে ও গলায় ক্যান্সার হয়;
(আ) তামাকজাত দ্রব্য সেবনে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হয়;
(গ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন সতর্কবাণী।
(৩) বাংলাদেশে বিক্রিত তামাকজাত দ্রব্যের সকল প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন ও কৌটায় “শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদিত” মর্মে একটি বিবৃতি মুদ্রিত না থাকিলে বাংলাদেশে কোনো তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করা যাইবে না।
(৪) জনস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ও ঝুঁকি সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরির উদ্দেশ্যে, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, কার্টন, কৌটা বা মোড়কে ব্র্যান্ড এলিমেন্ট (যেমন- লাইট, মাইল্ড, লো-টার, এক্সট্রা, আল্ট্রা শব্দ) ব্যবহার করা যাইবে না।
(৫) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সচিত্র সতর্কবাণী এবং উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত বিবৃতি তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন ও কৌটায় মুদ্রণ পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৬) কোন ব্যক্তি এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনূর্ধ্ব ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হইবেন।]
তামাকজাত দ্রব্য আমদানির ক্ষেত্রে উপাদান সম্পর্কিত তথ্য প্রদানঃ
১১৷ (১) তামাকজাত দ্রব্য আমদানির সময় সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক উক্ত আমদানিতব্য দ্রব্যে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানের পরিমাণ উল্লেখ করিয়া সরকারের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করিবেন৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদন দাখিল না করিয়া কোন ব্যক্তি তামাকজাত দ্রব্য আমদানি করিলে যে কোন সময় উক্তরূপ দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করা যাইবে৷
তামাক ও তামাক জাতীয় ফসল উৎপাদন ও ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণঃ
১৩[ ১২। তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন ও উহার ব্যবহার ক্রমাগত নিরুৎসাহিত করিবার জন্য উদ্বুদ্ধ, এবং তামাকজাত সামগ্রীর শিল্প স্থাপন, তামাক জাতীয় ফসল উৎপাদন ও চাষ নিরুৎসাহিত, করিবার লক্ষ্যে সরকার প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।]
জনসেবকঃ
১৩৷ কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালনকালে The Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর section 21 এ যে অর্থে জনসেবক (Public Servant) কথাটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক (Public Servant) বলিয়া গণ্য হইবেন৷
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ এবং জামিনযোগ্যঃ
১৪৷ (১) The Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সকল অপরাধ-
(ক) আমলযোগ্য (Cognizable) এবং জামিনযোগ্য (Bailable) হইবে;
(খ) যে কোন শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচারযোগ্য হইবে৷
(২) কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করিবে না৷
কোম্পানী কর্তৃক অপরাধ সংঘটনঃ
১৫৷ ১৪[ (১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তি যদি কোম্পানী হয়, তাহা হইলে উক্ত কোম্পানীর মালিক, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা এজেন্ট উক্তরূপ অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন৷
ব্যাখ্যা৷- এই ধারায়-
(ক) ‘কোম্পানী” বলিতে কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা সংগঠনকেও বুঝাইবে;
(খ) বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে “পরিচালক” বলিতে কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যকেও বুঝাইবে৷
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানী কোন আইনগত ব্যক্তিসত্ত্বা বিশিষ্ট সংস্থা (Body Corporate) হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানীকে আলাদাভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে ফৌজদারী মামলায় উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।]
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল গঠন, ইত্যাদি
১৫[ ১৫ক। (১) এই আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিবীক্ষণ, গবেষণা এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর অধীন “জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল” নামে একটি সেল থাকিবে।
(২) উক্ত সেলের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।]
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাঃ
১৬৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
মূল পাঠ এবং ইংরেজীতে পাঠঃ
১৭৷ এই আইনের মূল পাঠ বাংলাতে হইবে এবং ইংরেজীতে অনূদিত উহার একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English text) থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে৷
রহিতকরণ ও হেফাজতঃ
১৮৷ (১) এই আইন বলবত্ হইবার সংগে সংগে-
১৬[ (ক) The Juvenile Smoking Act, 1919 (Ben. Act, II of 1919) ;]
(কক) The East Bengal Prohibition of Smoking in Show Houses Act, 1952 (E.B. Act XIII of 1952); এবং
(খ) তামাকজাত সামগ্রী বিপণন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৮৮ (১৯৮৮ সনের ৪৫ নং আইন) রহিত হইবে৷
(২) উক্তরূপ রহিত হওয়া সত্ত্বেও, রহিত আইনসমূহের অধীন কোন মামলা বিচারাধীন থাকিলে বা অন্য কোন কার্যধারা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে অব্যাহত থাকিবে যেন এই আইন প্রণীত হয় নাই৷
উপসংহারঃ আমরা এদেশের জনগণ চলবে...............................................................................
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২১