তার পুরো নামটাও জানতাম না। একটু আগে উইকিপিডিয়া থেকে তার পুরো নামটা জানলাম। নাম আশরাফুল আলম সাইদ (হিরো আলমা)। হিরো আলম তার নিজের দেওয়া নাম নয়। দর্শক প্রিয়তা থেকেই তার নাম লোকমুখে হিরো আলম হয়ে গেছে। কেউ সাকিব খান, শাকিল খান, প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ, নায়ক রাজ রাজ্জাক- এদের নামের আগেও হিরো শব্দটা অতটা প্রচলিত আকারে প্রকাশিত হয়নি। শব্দটা যেন কেবল মাত্র হিরো আলমের ক্ষেত্রেই মানায়। একটা লোক যদি তার নিজের চেষ্টায়, অধ্যাবসায়, নিষ্ঠা এবং সততা দিয়ে কালো রং নিয়ে আমাদের এই দেশটাকে ভালভাবে উপস্থাপন করতে পারে। তাহলে সেখানে তার দোষ দেখা বা ধরা মানসিক বিকারগ্রস্থতা ছাড়া আমার চোখে বা মানসিক চিন্তায় সেই ভদ্র সুন্দর চেহারাধারীকে অসুস্থ মানসিক প্রতিবন্ধি ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারিনা। কেননা, মিষ্টার বিন খ্যাত হলিউড অভিনেতা রোয়ান সেবাসটিয়ান এটিকিনসনের (Rowan Sebastian Atkinson) অভিনয় দেখে সবাই হাসে, মজা পায়। আর হিরো আলমকে দেখে আমার ও হাসি পায়। হয়তো আমার মতো সবারই পায়। তার মানে এই না যে, বাস্তব জীবনে সে একজন সুস্থ মানুষের সম্মান পেতে পারেনা বা তাকে দাওয়াত করে ডেকে নিয়ে অপ্রস্তুত, অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নে বিবৃতকর অবস্থায় ফেলে দেব। এই অধিকার আমারও নেই, কারো নেই। অন্যর স্বাধিনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারো নেই। আমার মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে। তাই বলে কাউকে বিনা কারনে আঘাত করার অধিকারতো কাউকে দেয়া হয়নি। উইকিপিডিয়ায় হিরো আলমকে নিয়ে যে বর্ণনাটি লেখা হয়েছে তা হুবহু তুলে ধরলাম-
"Ashraful Alom Saeed (Bengali: আশরাফুল আলম সাঈদ), best known as Hero Alom (Bengali: হিরো আলম), is a Bangladeshi amateur music video model, actor and social media phenomenon".
আগামী ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে ১১তম সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। হিরো আলম নাকি জাতীয় পার্টির ব্যানারে বগুড়ার কোন এক আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে নমিনেশন কিনেছেন। হয়তো প্রথম দিকে অবাক হয়েছি! কিন্তু, পরে যারপর নাই তাকে সাধুবাদ জানিয়েছি তার এই সাহসিকতার জন্য। ফোক গানের শিল্পি মমতাজ বেগম যদি সংসদে গান গাইতে পারে আমাদের হিরো আলম না হয় একটু বাংলাদেশের মিষ্টার বিন হয়ে মজাই দেখাল! সমস্যা কোথায়? জনগণের চাহিদার কথা না হয় তার মতো সাধারণ একটা ছেলে যদি বলতে পারে আমি তাকে স্যালুট জানাই।
৭১ টিভির সাংবাদিক যা করেছে তাতে মনে হয়েছে, তার থেকে শিক্ষিত ব্যক্তি এই দেশে আর কেউ নেই। সুশিক্ষা মানুষ হতে শেখায়। আর কুশিক্ষা শেখায় কিভাবে মানুষকে অপমান করতে হয়। আমি তাকে আঘাত করছি না। কিন্তু, একজন স্বাধীন দেশের এমপি প্রার্থীকে অপদস্ত করে কথা বলার জন্য আমি তার কথার তিব্র প্রতিবাদ করছি। জাতীয় সংসদ আমার মতেও ভাড়ামো করার জায়গা না, নাটোক করার জায়গা না, জায়গা না অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করার।
কি হয়নি সেখানে! বিগত সরকারী দল! বর্তমান সরকারী দল ক-ত টুকু পেরেছে তার সম্মান রাখতে আমি সাধারণ একজন নাগরীক হয়ে প্রত্যেকটা সাংসদকে প্রশ্ন রাখতে চাই। আমার একটা ভোটের অ-নে-ক দাম! কি দিয়েছে আমাকে সে ভোটের বিনিময়ে। আমি একজন পোষ্ট গ্রেজুয়েট হয়ে সরকারী তদবীর করার লোক নেই বলে আমি এখনো বেকার। এর জবাব কে দেবে! স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দিতে পারবেন! অনার্স কোর্স ৪ বৎসরের আমরা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি তাদের লেগেছিল ৭ বছর। উন্নয়ন এত হয়েছে যে, ঢাকা শহরে শুধু উড়াল সেতুই চোখে পড়ে। আমাদের ভবিষ্যৎ কাহারো চোখে পড়েনা!
আইন করুন না! বিএ পাশ ছাড়া কেউ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবেনা। অশিক্ষিত লোকজন দিয়ে ভাল পরিকল্পনা কোনদিন বাস্তবায়ন হয়না। অশিক্ষিত লোকজনই অসাধু উপায় অবলম্বন করে নেতা হয়। আর আমরা ধাপ্পাবাজি, রংবাজি করতে পারিনা বলেই বর্তমানে ব্লগ লিখে মনের ক্ষেদ মিটাই।
হিরো আলম জিতুক আর না জিতুক আমি তার সাহসিকতাকে শ্রদ্ধা জানাই। সাধুবাদ জানাই আমাদের ম্যাশকে। যার সততাই হয়তো, কিছু স্বল্প শিক্ষিত এমপিকে তাকে দেখে শিখতে পারবে কিভাবে দেশের জন্য কাজ করতে হয়। তেল মর্দনের রাজনীতি যারা করে, তারা আর যাই হোক বেশি দিন ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবেনা। আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়ার রোল মডেল বলি এই জন্য তিনি বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেন। একজন মানুষ শতভাগ শুদ্ধ ভাবে কাজ করবেনা, এ্টাই ঠিক। তারপর ও তার উন্নয়নে আমরা পাকিস্থান, ভারতকে জিডিপিতে পেছনে ফেলেছি।
কিন্তু, দূর্নীতি আমরা আজো জিরো ফিগারে আনতে পারিনি। হিরো আলম জিরো থেকে উঠে এসেছে। সে জানে হিরো কিভাবে হতে হয়। তাই সে হিরো আলম। সে আর যাই করুক চুরি করবেনা, এটা হয়তো নিশ্চিত। একজন মানুষ কতটা সারল্য জ্ঞানের হলে কোন প্রতিবাদ না করে সহজ, সাবলীল ভাবে ৭১ টিভির উপস্থাপিকার উত্তর দিতে পারে। যদি সেখানে নারায়নগঞ্জের এমপি শামিম উসমান/ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী/ এডভোকেট মুইনুল হোসেন থাকতেন। আমার বা আমাদের ভাববার বিষয় তাদের উত্তর গুলো কেমন হতো! পাঠক, ভাবুনতো।
রাজনীতি বর্তমান বাংলাদেশে গুটি কয়েক ভাল মানুষ বাদে অধিকাংশ এটাকে ভাল মন্ধ খাবার খাওয়ার আর বিদেশের ব্যাংকে টাকা জমা করার ভাল একটা বিজনেজ হিসেবে বেছে নিয়েছে। নইলে, আমাদের দেশের ব্যাংক গুলো গরীব গরীব অবস্থায় উপনিত হচ্ছে কেন? আমাদের সম্মানীত অর্থমন্ত্রী এ বিষয়টিকেই হয়তো রাবিশ বা বোগাস বলে উড়িয়ে দিতেন।
আমি আম জনতা। আমার মতামত প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে। তাই লিখলাম। লিখবো। সবার সহযোগীতা আশা করি। ভাল থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৯