জনাব তোফায়েল আহমেদকে কবে, কখন, কোথায় প্রথম দেখেছি, পরিচিত হয়েছি বা কাছাকাছি হয়েছি- অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করতে হবে। কিন্তু ৬৯-এ ছাত্র গণআন্দোলনে তোফায়েল আহমেদের নাম বাংলার আকাশে বাতাসে আলোড়িত হয়েছে, রাজপ্রাসাদ থেকে গরিবের কুঠির পর্যন্ত একইভাবে উচ্চারিত হয়েছে ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ। তখন মানুষের এখনকার মতো ডিজিটাল হৃদয় ছিল না। বুকের প্রায় সবটাই ছিল হৃদয়। গ্রামগঞ্জে মানুষের অসীম ত্যাগ তিতিক্ষা দেখে বিস্মিত হয়েছি। এখন ডিজিটাল জমানা, মানুষের হৃদয়ও অনেকটা ডিজিটাল। তাই কারও আকার-বিকার নেই। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আমাদের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল। তাই গত ২৫ জানুয়ারি সর্বশেষ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ছিল। সেখানে আমার স্ত্রী নাসরীন সিদ্দিকী অতি ক্ষুদ্র একটি বক্তব্য দিয়ে আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। খুব সম্ভবত আগের দিন অথবা তার আগের দিন মানিকগঞ্জে এক মহিলা গার্মেন্ট কর্মী বাসের চালক ও হেলপারের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিল। সেই একইদিন ১০-১২ বছরের একটি কন্যার ধর্ষিত হওয়ার খবর ছিল। তা ছাড়া ১৫ বছরের ৯ম শ্রেণীর টাঙ্গাইল সদরের রিকশাওয়ালার ময়না নামের একটি মেয়ে বিথী কুলাঙ্গারের প্ররোচনায় ধর্ষিত হয়ে এখন মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় পড়ে থাকা নিয়ে ভীষণ ছোটাছুটি করেছি। এসব দেখে আমার স্ত্রীর হৃদয়-মন গভীর ভারাক্রান্ত ছিল। তাই কথা বলতে উঠেই সে বলেছিল, 'পিঁপড়ায় কামড় দিলে মানুষ যে ব্যথা পায়, আজকাল নারী ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় ততটুকু অনুভব করে না, ততটুকু ব্যথা পায় না। কেন যেন সবার অনুভূতি কেমন লোপ পেয়ে গেছে।' বেগমের কথা শুনে আমার শরীর-মন কেঁপে উঠেছিল, সে কাঁপন এখনো থামেনি। তাই এমন কঠিন শব্দের শিরোনাম দিলাম। এযাবৎকাল আমি যখন যে লেখা লিখেছি সেখানেই জনাব তোফায়েল আহমেদকে '৬৯-এর গণআন্দোলনের মহানায়ক বলে উল্লেখ করেছি। স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই জননেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কারণে আমাকে কেউ কেউ পছন্দ করে না। তারপরও শত গঞ্জনা সয়ে আমি তাদের পছন্দ করার চেষ্টা করেছি। সারা জীবন বিরোধিতা পেয়েও তাদের সম্পর্কে নাহোক কোনো সমালোচনা সহ্য করিনি। প্রায় সব সময় দাঁতে-মুখে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজকে বিবেকের তাড়নায় লিখছি। কারও ক্ষমতা আছে বলেই ছাগল দিয়ে ধান মাড়াবেন, এ তো হওয়ার নয়। কিন্তু তারপরও সিংহরা যদি ছাগলের মতো আচরণ করে তাহলে দোষ কার? কিছুদিন আগে আমার দেশ-এ একটি লেখায় শিরোনাম দিয়েছিলাম 'সাহসী মাহমুদুর রহমান, ভীরু আবুল হোসেন'। আজ ক'দিন ভীষণ অন্তর্যন্ত্রণায় জ্বলে-পুড়ে মরছি। শিরোনামের অর্ধেক ঠিক হয়নি। আবুল হোসেন, মানে সৈয়দ আবুল হোসেন ভীরু হতে যাবেন কেন? ভীরু, বীর বা কাপুরুষ প্রমাণে তার দরকার কী? একটা দেশ, একটা জাতির একজন মানুষের জন্য কেউ এমনভাবে সর্বনাশ করে? একটা দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, এক আবুল কেন, আসামি করলে দুই আবুলকেই করতে হবে। মানে সৈয়দ আবুল তার আর আবুল হাসান আমার। সৈয়দ আবুল তো মন্ত্রী, আমার আবুল হাসান কি? সাবেক মন্ত্রী সেদিন দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তিনি কত ভালো। টাকা-পয়সাওয়ালা লোকদের বিপদে পড়লে হুঁশজ্ঞান থাকে না। এখন তাকে জাতির বিবেকের বিচারের হাত থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রক্ষা করতে পারবেন না। টাকা আছে, মাঝেমধ্যে লাখ লাখ টাকা খরচ করে নিজের নামে নিজেই বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। টাকাওয়ালাদের টাকা খরচ করতে হবে তো। আমরা যারা যুদ্ধ করলাম, দেশ স্বাধীন করলাম, যারা দেশের জন্য বছরের পর বছর রোদ-বৃষ্টিতে ভিজল, জেল-জুলুম সহ্য করল, তাদের টাকা হলো না, টিসিবির এক সাধারণ কেরানির হাজার হাজার কোটি টাকা হলো? কীভাবে হলো জানতে তো ইচ্ছা করবেই। আজ হোক আর কাল এসবও জানা যাবে। পদ্মা সেতুর কেলেঙ্কারিতে মোশাররফ হোসেন নামে এক সচিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেহেতু তিনি শেখ রেহানার জেইঠাশ না জা'র জামাই, তাই তারও যে বিশেষ কিছু হবে তা বলি কী করে? তবে আগে শুনতাম কোথাও কোথাও বড় বড় নদীতে সেতু করতে ডেহর দেয়। মানে জান বলি দিতে হয়। কোথাও নাকি মানব সন্তানও দিতে হয়। সেই কাপালিকদের নরবলি দেওয়ার মতো। কিন্তু কোনোদিন শুনিনি, কোনো এক ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য জাতিকে বলি দিতে হয়। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে তাও দেখলাম। কেন আমি সৈয়দ আবুল হোসেনকে ভীরু বলতে যাব। সৈয়দ আবুল হোসেন তো আবুল হোসেন নয়, তিনি ক্ষমতাবানদের এমন প্রিয় তার জন্য ক্ষমতাবানরা দেশকে কোরবানি দিতে পারে, একটা জাতিকে ধ্বংস করতে পারে কিন্তু প্রিয়কে অপ্রিয় করতে পারে না। ভীরু আবুল হোসেন শিরোনামের জন্য আমি অনুতপ্ত, পাঠকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ভীরু জনাব তোফায়েল আহমেদ। বর্তমান আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে আমি জননেতা শামসুল হক, মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- কারও কোনো ছায়াও খুঁজে পাই না। তাই কতবার যে বলেছি, বর্তমানে যারা সরকার চালাচ্ছে তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাসিনা লীগ। কথাটি এই সেদিন প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসাও বলেছেন। যে কারণে তাকেও এক হাইব্রিড নেতা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও দেশদ্রোহী বলেছেন। এভাবে ১২-১৪ কোটি মানুষকে সরাসরি গালাগাল দিলেই যা হওয়ার তা হবে। জনাব তোফায়েল আহমেদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চের নিচে মাঠে বসে থাকলেন কেন? অবশ্যই তিনি দলীয় কোনো পদে নাও থাকতে পারেন। দলের প্রতি অবদানের জন্য প্রবীণ নেতা হিসেবে তার মঞ্চের সবচেয়ে সম্মানিত স্থানে থাকার কথা। আর যদি তেমন সম্মান না পান, তাহলে সেখানে তারা যাবেন কেন? মঞ্চের নিচে বসে কাঁটা খাওয়া বিড়ালের মতো মিউ মিউ করে তিনি কি জাতির সম্মান বৃদ্ধি করেছেন? সবাই এমন মেরুদণ্ডহীন হলে বর্তমান প্রজন্ম অথবা ভবিষ্যতের সন্তানরা কাকে দেখিয়ে গর্ব করবে? তোফায়েল আহমেদ তো কোনো ব্যক্তি নন, তিনি একটি মহাসংগ্রামের প্রতীক। সেই প্রতীকের মর্যাদা রক্ষা করতে না পারলে একজন মুসলমান হওয়ার পরও আমি তাকে আত্দহত্যা করতে পরামর্শ দেব। যেখানে কমিউনিস্ট লেনিন (মহান রাশিয়ার মহামতি লেনিন নন) প্রেসিডিয়ামের সদস্য হলেন, সেখানে মঞ্চের সামনে মিশকিনের মতো কেন তোফায়েল আহমেদ বসে রইলেন? দেশে দলীয় নেতা বহু আছে কিন্তু জাতীয় নেতা খুব বেশি নেই। জনাব তোফায়েল আহমেদ অবশ্যই একজন জাতীয় নেতা হিসেবে প্রথম কাতারের। জাতীয় নেতা যখন দলীয় সম্মান পান না তখন কীসের লোভে দলীয় পরিচয়ের জন্য এত লালায়িত থাকেন? এক সময়ের যুবলীগের সভাপতি আমির হোসেন আমু, তার নামে কত কুৎসাই না ছড়ানো হয়েছে।
জাতীয় পর্যায়ে অমন যোগ্যতাসম্পন্ন দু'চারজনের বেশি নেতা নেই। কেন তিনি কীসের আশায় জাতীয় দায়িত্ব পালন না করে কার স্বার্থ রক্ষা করেন? বঙ্গবন্ধুর কবর দেওয়া আওয়ামী লীগকে বঙ্গতাজ তাজউদ্দিনের স্ত্রী জোহরা তাজউদ্দিন তুলে এনে আবার তাজা করতে পেরেছেন কিনা জানি না, সেই আওয়ামী লীগের সফল সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের অন্যতম এক সৈনিক নওগাঁর জেলা গভর্নর বর্তমান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ জলিল এখন সপ্তাহে তার তিনবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। ১/১১-এর নিষ্ঠুর নির্যাতনে তিনি প্রায় মরেই গিয়েছিলেন। তারপরও জাতিকে ভুলে কীসের আশায় জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে আপস করেন? লাঞ্ছিত হয়েও সম্মানিত হয়েছেন বলে বউয়ের হাতের কিল খাওয়ার মতো অপমান হজম করেন? বউ তো প্রিয়জন, সে লালনপালন করে, সংসার ধরে রাখে। কারও অবিবেচক বদরাগী স্ত্রী হলে তার লাথি-গুতা খাওয়াও বর্তমান নেতাদের অপমান-অপদস্ত হয়ে হজম করার চেয়ে অনেক গৌরবের।
জনাব তোফায়েল আহমেদ, বঙ্গবন্ধু আপনাকে ভীষণ ভালোবাসতেন। এক সময় আপনাকে তার রাজনৈতিক সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সবকিছুই পূর্ণ হয়েছিল। আপনাকে সরিয়ে দিলে মানুষ হিসেবে আপনি অপমানিত হবেন, জাতির সামনে রাজনৈতিক বীরত্ব ভূলুণ্ঠিত হবে, তাই তিনি সবার বিরোধিতা সত্ত্বেও আপনাকে বুকে আগলে ছিলেন। আওয়ামী লীগ তার জন্মের পরপরই জন্মদাতাকে অস্বীকার করেছে, বিপদের সারথীকে অস্বীকার করেছে। আমেনা বেগম, মিজান চৌধুরী, আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ- এ রকম অনেকেই আওয়ামী লীগের অনেক কষ্ট স্বীকার করে ডুবন্ত নৌকাকে তুলে এনে সেই নৌকায় তারা উঠতে পারেননি, তাতে অন্যরা চড়েছে। আপনার ব্যাপারও তাই। মাঝে মাঝে ভাবি এমন বিশাল হৃদয়ের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেন টুঙ্গিপাড়ার শেখ পরিবারে জন্মেছিলেন। সব সময় একটা কোটারী স্বার্থান্বেষী চক্র তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখার চেষ্টা করত। পরম দয়ালু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোনো মোনাফেককে ক্ষমা করবেন না। তার নাকি ক্ষমা করতে অসুবিধা আছে। '৬৯-এর গণআন্দোলনের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদ, বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, আপনার দেশের জন্য যা করার ছিল তা কি করতে পারছেন? কেন পারছেন না? আমার কথা বলবেন? আপনাদের তথাকথিত আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় আমি সাগরে পড়েছি? নিশ্চয়ই গাড়ি-বাড়ি, ধন-দৌলতের অভাব আছে। নতুন একটি রাজনৈতিক দল করা যে সহজ ব্যাপার নয় তা হারে হারে টের পাচ্ছি। কিন্তু অভিজ্ঞ প্রবীণ রাজনীতিবিদ আপনিই বলুন, আমি যা বুক হালকা করে বলতে পারছি, যে কারণে সাধারণ মানুষ এখনো আমার মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করতে পারছে, আপনি বা আপনারা কি তেমন পারেন? সেদিন নারায়ণগঞ্জ জনসভা থেকে ফেরার পথে শ্যামপুরের কাছে ছোট ছোট বাঁশবোঝাই এক ভ্যান স্পিড ব্রেকারে আটকে ছিল। একা চালকের টেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। ছুটে গিয়ে তাতে হাত লাগিয়েছিলাম। ভ্যানচালক বোঝেনি তার ভ্যান অত সহজে এগিয়ে যাচ্ছে কেন? কবে যে জাতির বোঝা অমন হালকা করতে পারব; কিন্তু আশপাশের জনগণ বুঝেছিল। বড়জোর এক-দেড় মিনিটের ব্যাপার। এক-দেড়শ' লোক ছুটে এসে কেউ হাত মিলিয়েছে, কেউ জাপটে ধরেছে, আবার কেউ মাথায় পিঠে হাত বুলিয়ে দোয়া করেছে। আপনাদের কি কেউ হাত বুলিয়ে দোয়া করতে পারে? উতলা হয়ে ২৫-৩০ বছরের একজন শ্রমিক বার বার যখন মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে নিজের হাতে চুমো খাচ্ছিল আর বলছিল, আপনাকে দোয়া করি, তখন তাকে আমার পিতার মতো মনে হয়েছিল। আপনাদের গায়ে হাত বুলাবে দূরের কথা, আপনাদের নেত্রী যেদিক দিয়ে যায়, একজন লোকও রাস্তায় দাঁড়াতে পারে না। অমন জনবিচ্ছিন্ন নেতা এখন আবার মানুষের ভোট চাইছেন। গরিব-দুঃখীর ভোটের তার প্রয়োজন কি? এসএসএফ, গাড়ি-ঘোড়া, আর শূন্য রাস্তা সমর্থন করলেই তো হয়ে যাবে। মনে হয় ভাবছেন অপরিণামদর্শী আমার কথায় কী যায় আসে? আপনাদের গৃহত্যাগ করেছি ১২ বছর, এখন ১৩ বছর চলছে। আমাকে, আমার কর্মীদের অনেক রক্তাক্ত করেছেন, বাড়িতে বোমা ফেলেছেন কিন্তু দমাতে পারেননি। আমি তো আল্লাহকে হাজির-নাজির জেনে যা মনে এবং মুখে আসে বলতে পারি, আঘাত পেলে কাঁদতে পারি। আপনি তো তাও পারেন না। অন্যায় যে করে সে তো অপরাধী। কিন্তু মুখ বুজে যে অন্যায় সহ্য করে সে তার চেয়েও বড় অপরাধী। জানি না, আপনিও সে গোত্রে পড়বেন কিনা। তবে সেদিন যে মন খারাপ করে কমিউনিস্ট নেতা লেনিন সম্পর্কে যা বলেছেন, ওই ব্যঙ্গ করার কোনো অর্থ হয় না। '৬৯-এ যখন শেখ লুৎফর রহমানের পুত্র শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন, সেই ইশতেহার বা লিফলেট এই জনাব লেনিন পল্টনের সভায় টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে বলেছিলেন, এই যে তোদের বঙ্গবন্ধু টুকরা টুকরা করলাম। দেখুন, ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! উপাধী প্রদানকারী নিচে আর টুকরা টুকরাকারী মঞ্চে। এটাই ইতিহাস। বার বার শুধু ঘুরে এমনই হয়। কখনো কখনো জাতি রক্ত দিয়ে, ঘাম দিয়ে ইতিহাসের সেই কুচক্রকে থামিয়ে দেয় আবার ধীরে ধীরে চলতে থাকে। এক সময়ে তাতে আবার কুচক্রীরা সওয়ার হয়। জানি না আপনি আমার লেখা কীভাবে নেবেন। এই বয়সে আপনাকে খুশি করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। আমি খুশি করতে চাই আমার স্রষ্টাকে, খুশি করতে চাই স্রষ্টার সৃষ্টি মানব জাহানকে। সেই জাহানের পথ প্রদর্শক হিসেবে আল্লাহ যাদের হাতে আলো দিয়েছেন, কোনো কায়েমী স্বার্থে সেই আলো নিয়ে যদি তারা ঘরে বসে থাকে, মানুষকে পথ চলতে সহায়তা না করেন- হাশরের দিনে শেষ বিচারে পরম প্রভু কখনো তাকে ক্ষমা করবেন না।
লেখক : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, রাজনীতিক।
Click This Link