বিশ্বে এই মুহূর্তে সার্ভিস এ থাকা সবচেয়ে স্টিলথ এবং সর্বাধুনিক ফাইটার প্লেন এফ-২২ র্যাপ্টর এর আবার উৎপাদন শুরু করতে ইচ্ছুক পেন্টাগন । মার্কিন বিমান বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ এর থেকে পাওয়া এক বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ্য করেছেন যে এখন তারা এফ-২২ এর নতুন করে উৎপাদন এর খরচ এবং এর ভবিষ্যৎ সফলতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে স্টাডি শুরু করছে । এই স্টাডি এর ফলাফল এর উপর নির্ভর করবে যে মার্কিনরা আদৌ এই ব্যায়বহুল বিমান এর কাজ আবার হাতে নিবে কিনা ।
এখন আমি আসি আমার মতে ।
মার্কিনরা অলরেডি এফ-৩৫ নামক বিষফোঁড়া নিয়ে ব্যাস্ত । না পারছে এটা সফল ভাবে বিক্রি করতে না পারছে এটার সফল ভাবে আপগ্রেড করতে । একে লস্ট প্রোজেক্ট বলা চলে । পেন্টাগন এর পকেট এ বিশাল গর্ত করে দিয়েছে এফ-৩৫ । অনেকের মতে যেকোন রাশিয়ান মিগ-২৯ সিরিজ এর বা সুখই-২৭ বা এর উপরের সিরিজ এর বিমান একে সহজেই ভূপাতিত করতে পারবে । ৬ হাজার ইঞ্জিনিয়ারকে এর লস্ট প্রোজেক্ট এর পিছনে লাগানো হয়েছ ।
এর উপর যুক্তরাষ্ট্র এখন অনেক গুলো ছোট বড় যুদ্ধে জড়িয়ে আছে । এর উপর তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন এতটাও ভাল দিকে যাচ্ছে না। গত বছর ত ইরাকে সৈন্য প্রেরণ এর প্রসঙ্গে ওয়াশিংটন সাফ জানিয়ে দিয়েছিল " আরেকটি ইরাক যুদ্ধের খরচ আমাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় " । এখন বিমান হামলা করেই কাজ চালাতে হচ্ছে মার্কিনদের । অবশ্য সৈন্য না পাঠানোর বিষয়ে কিছু পলিটিকাল দিকও আছে ।
এরপর আসি, এফ-২২ এর খরচ এর কথায় । হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে এটি এই মুহূর্তে সেরা ফাইটার ( কিছু দুর্বলতা অবশ্যই আছে) । কিন্তু বরাবরের মতই এর খরচ, ব্যবস্থাপনা খরচ আকাশছোঁয়া । ফ্লাইট খরচ এবং উড্ডয়নের পর প্রতি ঘন্টার খরচ অনেক । প্রথম যুদ্ধের মুখ দেখেছে সিরিয়াতে গত বছর । তাও একদম না হলেই নয় নয় অবস্থায় । ২০০৯ সালে সালে মোট ১৮৭ টি এফ-২২ বানানো শেষ হয়েছিল এবং সর্বশেষ এফ-২২ মার্কিন বিমান বাহিনী হাতে পায় ২০১২ সালে । মোট এখন আছে ১৯৫ টির মত , এর পর আর বানানো হয়নি । প্রতিটির দাম ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার । নতুন করে বানালে দাম আরো বাড়বে স্বাভাবিক ভাবেই । এবং নতুনটায় আরো কিছু আপগ্রেড থাকাও অস্বাভাবিক কিছু নয় । কিন্তু এখানে এর যৌক্তিকতা কতটুকু?
সম্ভাব্য যুক্তি : চিরশত্রু রাশিয়া ২০১৪ সালেই বলে দিয়েছিল ২০১৬ সালেই তাদের টি-৫০ পাক-ফা স্টিলথ ফাইটারকে সার্ভিস এ আনা হবে সাথে আসবে বিশ্ব বিখ্যাত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এস-৫০০ । এস-৪০০ এর ভয়েই অন্য দেশ এর বিমান গুলোর আতংক থাকে সেখানে এস-৫০০ আসলে কি অবস্থা হবে? রাশিয়ান এন্টি এয়ার সিস্টেম গুলো বিগত অনেক বছর ধরেই ন্যটো ও তার সহযোগী দেশ এর বিমান বাহিনীর মাথা ব্যাথার কারন । সেখানে এস-৫০০ মরার উপর খাঁড়ার ঘা হতে পারে ।
সম্ভাব্য যুক্তি ২ : চীনের জে-২০ স্টিলথ ফাইটার এর কাজ এখন প্রায় শেষ এর দিকে যদিও আর বছর খানেক লাগবে । কিন্তু সুধু স্টিলথ নিয়ে বসে নেই চীন, জে-১১ / ১৫ এর নিয়মত উড্ডয়ন ও তারা চালিয়ে যাচ্ছে । নতুন এয়ার ডিফেন্স এর কাজ শুরু করে দিয়েছে বলেও একটা গুজব ছড়ছে ।
এমন অবস্থায় মার্কিনরা কি শুধুই পাল্লা দিয়ে চলার জন্য এফ-২২ এর পুন:উৎপাদন এর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে?
ইরাকে বি-৫২ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : http://www.technoinfo24.com/b-52s-in-iraq/
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭