আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার স্ট্যাটাসখানি
কৌতূহলভরে-
কে বসি দেখিছ আমার ছবিখানি, সযতনে দেয়া প্রোফাইল পিকচারে
কতোনা রঙে, কতোনা সাধে মিশিয়া
মন মতো হইয়াছিলো শেষ ছবিটি আমার;
গোটাদশেক বন্ধুত্বের অনুরোধ
জমেছিলো ঝুলিতে
একদিন শতবর্ষ আগে-
আগ্রহী বন্ধুরা মোর, একটু দেখো নি খেয়াল করে
দুঃখের ইমোখানি দিয়া টাইমলাইন ঘোষিছে ওয়ালে,
"Died 100 Years Ago."
পাশের কবরের কঙ্কালটি, যার নামটি শোভা পেতো সদম্ভে
"Married With"-এ।
আনেনাই সাথে সুদীর্ঘ চ্যাট হিস্টরি
অগিণিত হাসিমুখ ইমোটিকন আর ভালোবাসাবাসিগুলি।
একত্রের সুখী ছবিগুলোতে এখনও লাইক পড়ে।
সেদিন হতে শতবর্ষ পরে,
"সুন্দর হয়েছে ছবিটা!"
মন্তব্যে ঘর ভরে।
জানা আর অজানা বন্ধুরাও সব হয়েছে নির্বাক-
শতবর্ষের কোন একদিন মাঝে-
কোন এক বহুল প্রতীক্ষিত ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট
কিংবা স্ট্যাটাসে সর্বোচ্চ লাইক পাওয়ার পরে-
নীরবে বটবৃক্ষ ফেসবুক তাই ঘোষিছে,
"বিদায় নিয়াছে শত বর্ষ আগে।"
[দুদিন আগে আমার কাছের এক ভাইয়া রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা গিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফেসবুকে দীর্ঘদিনের পরিচয়ের পর একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়, খুশিতে রীতিমতো আকাশে উড়ছিলো। ঠিক একই রকম আছে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, কয়দিন আগে আমাদের একসাথে খেতে যাওয়ার ছবি, ঘুরতে যাওয়ার ছবি... কিন্তু মানুষটি নেই! কি আজব! সে ছিলো ভালো রকম ফেসবুক আসক্ত... কাজকর্ম থেকে শুরু করে প্রতিদিনের কাজের অর্ধেকই করতো ফেসবুকে! সে চলে গিয়েছে, এমনই থেকে যাবে তার অ্যাকাউন্ট চোখের সামনে... চিন্তা করলেই বুক টনটন করে



মন খুবই খারাপ ছিলো বিধায় ব্লগে বসলাম কিছু লেখার জন্যে, আর হাত দিয়ে রবীন্দ্রনাথের ১৪০০ সাল কবিতাটার এই কিম্ভূত প্যারোডি বের হলো। পাবলিশ করতাম না, ভাইয়ার কথা চিন্তা করেই করলাম। ক্ষমাপ্রার্থী।



সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৫৫