গতকাল পহেলা মার্চ এ খুলনা জেলার খালিশপুরে একটি স্থানে, সেখানের ভয়াবহ আগুনে সেই বেহারি লোকগুলো গৃহহীন হয়ে পড়ছে। তার জন্য আগুয়ান-৭১ নামের সংগঠন এর পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা করতে গেয়েছিলাম। সেখানে ঢুকে ই আমার মনে হচ্ছিল, আমি যেন অন্য দেশে এসে পড়ছি। তাদের ভাষাগুলো শুনে নিজের কাছে নিজেকে খুবই অসহায় মনে হচ্ছিল। আমরা স্বাধীন দেশে বাংলাতে কথা বলি, আর তারা উর্দু ভাষায় কথা বলে। আরও বেশি কষ্ট হচ্ছিল তাদের অসহায়ত্ব দেখে। তারা আমাদের নাগরিক হয়েও তাদের দিকে কারো চোখ দিয়ে দেখলে তাদের এতদিনে একটু হলেও পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কোনো দিকেও পরিবর্তন নেই। সবাই ব্যস্ত নিজের স্ট্যাটাস নিয়ে। বড় দুঃখের বিষয় ঐ বেহারি অঞ্চল এর মধ্যে ২ জন একটু ভালোভাবে শিক্ষিত। তাহলে কিভাবে নিজের স্বাধীন দেশের ভাষা শিখবে? কিভাবে তাদের ভিতর উন্নতি হবে? তাদের নতুন প্রজন্ম এখন কাজ করে খায়। এটা কি স্বাধীন দেশের নীতি হতে পারে?
খুবই কাঁদতে ইচ্ছা হচ্ছিল। বুকের ভিতরটা খুবই আত্মহারা লাগছিল। যখন বাংলাদেশের একটি অংশে ভিনদেশী ভাষা শুনি। কেন আজও তারা বাংলা ভাষা বলতে পারে না? ১৯৫২ থেকে ২০১৬ আজ পর্যন্ত ৬৪ বছর এবং ১৯৭১ থেকে ২০১৬ আজ পর্যন্ত ৪৫ বছর এর মাঝে অনেক অনেক সময় চলে গেছে। কিন্তু আজও তারা বাংলার নাগরিক হয়েও পাকিস্তানী ভাষা ব্যবহার করে। কেন? কেন? কেন? কেন আজ পর্যন্ত যুদ্বের পর বাংলাদেশে থাকা বেহারি লোকজন গুলোকে বাংলা শিক্ষা দিতে পারলাম না?
আমরা মুখে বলি, পাকিস্তানী কোনো পণ্য ব্যবহার করবো না/পাকিস্তানের সাপোর্ট করবো না, কিন্তু এখনো কেন বলি না পাকিস্তানী ভাষা বর্জন করি? কেন আজও স্বাধীন দেশে পাকিস্তানী ভাষা ব্যবহার হবে?
আমার মনে হয়, যতদিন আমরা তাদের বাংলা ভাষা শিক্ষা দিতে পারবো না। ততদিন তাদের উন্নতি এবং ভাষার পরিবর্তন হতে দেখবো না। তাই সবাই এগিয়ে এসে তাদের দিকে লক্ষ্য দেই। প্রথমে ভাষার পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৪৩