ধোঁয়াশার অন্তরালে
-রেহানুল হক
সুপারনোভা থেকে শুরু আমার।
পেছনে অসীম সেই ঘনবিন্দু।
ক্রমাগত ক্রমিক বিস্ফোরণে
ফুলে ফেঁপে উঠে-
অতিকায় বৃহৎ কোন এক অস্তিত্বের
পুচ্ছে জেগে উঠা-
ছিটকে পড়া কোন এক
ক্ষুদ্রাণু- যাকে বলো এষ্টারয়েডেস।
সেই থেকে যাত্রা আমার।
কোন এক আদিম সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন,
যেন জেগে উঠা এক্সক্রিসেন্স।
উদগত আঁচিল মনে হতে পারে তোমাদের
তবু নহি বিচ্ছিন্ন- সেইসত্তার সাথে
যে সত্তা করে বিচ্ছিন্ন।
অন্ধকারের মালিন্যে পরিপূর্ণ
কোন এক সুতীক্ষ্ণ আঁখিতে
তবু জাগাই মৃদু স্পন্দন;
আলোক ছটরা পৌঁছে সুদূর সেই প্রান্তে।
যেন অবিচল, চলি অক্লান্ত।
পথে-প্রান্তে নেই সামান্য
বাঁকা অনুভূতি।
চলবে-
যতদিন চলে এ হাইড্রোজেনের জ্বলন;
যতদিন থাকে এই হিলিয়াম সম্ভার।
তবু পৌঁছার প্রয়াস।
হতে পারে-
আজো দেখা মেলেনি তার।
হতে পারে-
আঁখি মেলে দেখেনি কেউ আমার এ জ্বালা।
হতে পারে-
স্কেলের ভারকেন্দ্র অনির্ধারিত।
হতে পারে-
পয়েস এখন অনিশ্চিত।
হতে পারে-
টেলিস্কোপ এখানে অচল।
হতে পারে-
পেন্ডুলাম এখনও দুলছে।
সতর্ক দৃষ্টি স্তব্ধ
কখন আসবে সে মুহুর্ত!
যখন-
পুকুরের সুবোধ জলরাশি
ফেটে ফুটে বিস্ফোরিত,বিদীর্ণ হয়ে
পেছনে ফেলবে-
সব আড় কিংবা লম্ব তরঙ্গ।
কম্পন হয়ে পড়বে অনিশ্চিত।
জেগে আছি আমি
হাজারো কাল,
এক অনন্ত অস্তিত্বের মাঝে।
আমার খবর পৌঁছে
কোন এক মাঠের শিশির ভেজা ঘাসে;
দুলে উঠে সে।
সূর্যোদয়ের প্রাক্কালে প্রথম রশ্মি;
দেখে নেচে উঠে সে।
তবু আমি অচেনা, অজানা।
হতে পারে আমার সন্নিধানে
মুর্হূমুহু দীর্ঘশ্বাস পড়ে
কোন এক অচেনা বক্ষে।
পৌঁছে খবর আমার তার কাছে।
কিন্তু-
বের হয় না
কোন বিখ্যাত নিউজের শিরোনামে।
অগোচরে থাকে হাজারো চক্ষের।
পৌঁছে খবর আমার তার কাছে।
কিন্তু-
বের হয় না
কোন বিখ্যাত নিউজের শিরোনামে।
অগোচরে থাকে হাজারো চক্ষের।
পৌঁছে না-
অক্ষিপটের ভিতরে, রেটিনা
বা আইরিসে।
উল্টো বিম্ব হয়ে জাগে না-
কোন মস্তিষ্কে।
স্কাইলার্কের ডাক
হাইড্রোজেনের বিস্ফোরণে
ছড়িয়ে পড়ে দিক দিগন্ত।
স্কাইলার্ক তুমি মৃত
তবু তোমার গান রয়
অযুত সময়;
হতে পারে পৌঁছেনা
মাপ নির্দিষ্ট কোন কর্ণে।
২০ হার্টজ (Htz )বা ২০০০০ হার্টজ
এখানে তার কোন আলাপ নেই।
এ ছুটে অজানা, অচেনা কোন মাধ্যম হয়ে
পরিব্যাপ্ত কোন স্তম্ভে।
নেই এর পথ-
কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয়।
এ নয় উদ্বায়ী, নয় ইথার,
ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিক তরং- তাও নয়।
কোয়ান্টা কংবা ফোটন কণা- না, না, নয় তাও।
তবু স্তম্ভিত সব।
প্রথা নির্দিষ্ট কোন আইন কূল পায় না
যখন কন্ঠের ভোকাল কর্ড
বিদ্রোহ করে বসে,
ছিঁড়ে বেরুতে চায়,
বাধা শোনে না।
ট্রেক লাফিয়ে পার হয়ে
লুটোপুটি খায় যেন-
নাঁড়িভুঁড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে
কোন এক রসাল পক্ক ফুটি
আখক্ষেতে খায় গড়াগড়ি।
ইতিহাসের হাল ভেঙ্গে দু’টুকরো
যখন স্নেহাস্পদকোন এক হৃদে
বর্ধিত হৃদ কম্পন
দেয় হানা।
উদ্বিগ্নতায় ভরে উঠে মন
যখন-
কোন এক সমরবিদের
মনিটরে ভেসে উঠে
সযত্নে সংগৃহীত কোন এক প্রতিচ্ছবি,
যার তথ্য পেতে
হুমড়ি খেয়ে পড়ে সকল প্রশ্ন।
বুঝলাম- সেরোটোনিন।
বুঝলাম- এর ক্ষরণ লীন।
তবু কোথায় এর জাগ্রত ধারা?
কি তার ক্ষুধা?
কেন সে ক্ষীণকায়?
নেই কি উৎস বহুৎ?
সুতীব্র জ্বালামুখ?
যা থেকে বেরুতে পারে মুহূর্মুহু গর্জন।
যার ভয়ে-
চাপা উত্তেজনা চারিদিকে
কখন বিস্ফোরিত হয়ে পড়ে?
লোপাট হয়ে যাবে দুনিয়াটা;
গন্ডোয়ানাল্যান্ড
কিংবা আফ্রিকার খাঁজগজা তীর
সরবে আরো- দূরে।
বের করবে সে
অমূল্য রতন সব।
মণি, মুক্তা, হীরা, জহরৎ।
চাপা পড়বে-
কোন এক অধুনা সভ্যতা।
যেখানে রয়েছে-
ইটের মাঝে কীটের মত মরার দশা।
আর্তনাদ করবে কিছু নিষ্পাপ অবয়ব।
ক্রন্দনে ভরবে আকাশ,
কালো ধুঁয়ায় ভারি হবে
মলিন মুখ।
তবু বিস্ফোরিত হবে সে।
কারণ বাষ্পীয় ধূম সরলেই যে
নতুন সূর্য মুখ তুলে চাইবে সেখানে।