দুই বন্ধু ছিল। একজন অন্ধ আরেকজন বদ্ধ কালা। দুইজনে বেজায় ভাব। কালা বিঞ্জাপনে পড়িল আর অন্ধ লোকমুখে শুনিল, কোথায় যেন যাত্রা হইবে, সেখানে সঙেরা নাচগান করিবে। কালা বলিল, “অন্ধ ভাই, চল, যাত্রায় গিয়া নাচ দেখি।” অন্ধ হাত নাড়িয়া, গলা খেলাইয়া কালাকে বুঝাইয়া দিল, “কালা ভাই, চল, যাত্রায় নাচগান শুনিয়া আসি।”
দুইজনে যাত্রার আসরে গিয়া বসিল। রাত দুপুর পর্যন্ত নাচগান চলিল, তারপর অন্ধ বলিল, “বন্ধু, গান শুনিলে কেমন?” কালা বলিল, “আজকে তো নাচ দেখিলাম- গানটা বোধহয় কাল হইবে।” অন্ধ ঘন ঘন মাথা নাড়িয়া বলিল, “মূর্খ তুমি! আজ হইল গান- নৃত্যটাই বোধহয় কাল হইবে।"
কালা চটিয়া গেল। সে বলিল “চোখে দেখ না, তুমি নাচের মর্ম জানিবে কি?” অন্ধ তাহার কানে আঙুল ঢুকাইয়া বলিল, “কানে শোন না, গানের তুমি কাঁচকলা বুঝিবে কি?” কালা চিৎকার করিয়া বলিল, “আজকে নাচ, কালকে গান,” অন্ধ গলা ঝাঁকড়াইয়া আর ঠ্যাং নাচাইয়া বলিল, “আজকে গান, কালকে নাচ।”
সেই হইতে দুজনের ছাড়াছাড়ি। কালা বলে, “অন্ধটা এমন জুয়াচোর-সে দিনকে রাত করিতে পারে।” অন্ধ বলে, “কালাটা যদি নিজের কথা শুনিতে পাইত, তবে বুঝিত সে কতবড় মিথ্যাবাদী।”
সুকুমার রায়ের এই গল্পটি হতে বর্তমান আমাদের সার্বিক পরিস্থিতি অনুমান করা যায়। আমরা কতটাই না ভালো আছি? আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। আমাদের দেশে পরিক্ষার আগে প্রশ্ন পত্র ফাঁস হয়ে যায়, কোন কাজ শুরুর আগেই তার ফান্ড ছোট-বড় পদ অনুসারে বণ্টন করা হয়।
হত্যা কাণ্ড সংগঠিত হবার পর, কে এই রুপ জঘন্য কাণ্ড করেছে উহা নিয়েও বিস্তর কাঁদা ছুড়াছুড়ি হয়, পরিশেষে হত্যা কারি ধরা পড়ুক না পড়ুক মিডিয়ার কল্যানে, হত্যা কাণ্ড যে তৃতীয় কোন জঙ্গি সংগঠন করেছে এতে কারও সন্দেহের অবকাশ থাকে নাই। কাজেই কি দেশের সরকার বা জনগণ কিংবা বিরোধী দল কারও কোন মাথা ব্যাথাও নাই।
মিডিয়া তাহার দায়িত্বের প্রতি খুব আন্তরিক, তাহার বিস্তর খাটাখাটনি করে চমক পদও সংবাদ জনগণের সামেন উপস্থিত করে এবং পরে তা বিজ্ঞাপনের ফাঁকফোকরে পরিবেশন করে আমজনতার হৃদপিণ্ডের কম্পন বাড়াইয়া দেয় তেমনি ভাবে আজকের শীর্ষ সংবাদ কালকে যে কোন আস্তাকুরে লুকাইয়া রাখে তাহা বলা মুশকিল। দুই বন্ধু ছিল। একজন অন্ধ আরেকজন বদ্ধ কালা। দুইজনে বেজায় ভাব। কালা বিঞ্জাপনে পড়িল আর অন্ধ লোকমুখে শুনিল, কোথায় যেন যাত্রা হইবে, সেখানে সঙেরা নাচগান করিবে। কালা বলিল, “অন্ধ ভাই, চল, যাত্রায় গিয়া নাচ দেখি।” অন্ধ হাত নাড়িয়া, গলা খেলাইয়া কালাকে বুঝাইয়া দিল, “কালা ভাই, চল, যাত্রায় নাচগান শুনিয়া আসি।”
দুইজনে যাত্রার আসরে গিয়া বসিল। রাত দুপুর পর্যন্ত নাচগান চলিল, তারপর অন্ধ বলিল, “বন্ধু, গান শুনিলে কেমন?” কালা বলিল, “আজকে তো নাচ দেখিলাম- গানটা বোধহয় কাল হইবে।” অন্ধ ঘন ঘন মাথা নাড়িয়া বলিল, “মূর্খ তুমি! আজ হইল গান- নৃত্যটাই বোধহয় কাল হইবে।"
কালা চটিয়া গেল। সে বলিল “চোখে দেখ না, তুমি নাচের মর্ম জানিবে কি?” অন্ধ তাহার কানে আঙুল ঢুকাইয়া বলিল, “কানে শোন না, গানের তুমি কাঁচকলা বুঝিবে কি?” কালা চিৎকার করিয়া বলিল, “আজকে নাচ, কালকে গান,” অন্ধ গলা ঝাঁকড়াইয়া আর ঠ্যাং নাচাইয়া বলিল, “আজকে গান, কালকে নাচ।”
সেই হইতে দুজনের ছাড়াছাড়ি। কালা বলে, “অন্ধটা এমন জুয়াচোর-সে দিনকে রাত করিতে পারে।” অন্ধ বলে, “কালাটা যদি নিজের কথা শুনিতে পাইত, তবে বুঝিত সে কতবড় মিথ্যাবাদী।”
সুকুমার রায়ের এই গল্পটি হতে বর্তমান আমাদের সার্বিক পরিস্থিতি অনুমান করা যায়। আমরা কতটাই না ভালো আছি? আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। আমাদের দেশে পরিক্ষার আগে প্রশ্ন পত্র ফাঁস হয়ে যায়, কোন কাজ শুরুর আগেই তার ফান্ড ছোট-বড় পদ অনুসারে বণ্টন করা হয়।
হত্যা কাণ্ড সংগঠিত হবার পর, কে এই রুপ জঘন্য কাণ্ড করেছে উহা নিয়েও বিস্তর কাঁদা ছুড়াছুড়ি হয়, পরিশেষে হত্যা কারি ধরা পড়ুক না পড়ুক মিডিয়ার কল্যানে, হত্যা কাণ্ড যে তৃতীয় কোন জঙ্গি সংগঠন করেছে এতে কারও সন্দেহের অবকাশ থাকে নাই। কাজেই কি দেশের সরকার বা জনগণ কিংবা বিরোধী দল কারও কোন মাথা ব্যাথাও নাই।
মিডিয়া তাহার দায়িত্বের প্রতি খুব আন্তরিক, তাহার বিস্তর খাটাখাটনি করে চমক পদও সংবাদ জনগণের সামেন উপস্থিত করে এবং পরে তা বিজ্ঞাপনের ফাঁকফোকরে পরিবেশন করে আমজনতার হৃদপিণ্ডের কম্পন বাড়াইয়া দেয় তেমনি ভাবে আজকের শীর্ষ সংবাদ কালকে যে কোন আস্তাকুরে লুকাইয়া রাখে তাহা বলা মুশকিল।